নান্দাইলে বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন নেতাকর্মীরা। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলা সদরের ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে এ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। দ্রুত কমিটি বাতিল না করলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপির ময়মনসিংহ সদর উত্তর জেলার আহ্বায়ক কমিটি গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নান্দাইল উপজেলা বিএনপির ১১২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে। এ কমিটির আহ্বায়ক সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল হোসেন খান চৌধুরীর ছেলে ইয়াসের খান চৌধুরী এবং সদস্য সচিব এনামুল কাদির। এ ছাড়া ২০ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক, তিনজনকে সম্মানিত সদস্য ও অন্যদের সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
একই দিন সাবেক মেয়র এ কে এম আজিজুল ইসলাম পিকুলকে আহ্বায়ক এবং সাবেক কাউন্সিলর রফিকুজ্জামান ভূঁইয়া মনিরকে সদস্য সচিব করে ৮১ সদস্যের পৌর কমিটি ঘোষণা করা হয়। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ কে এম এনায়েত উল্লাহ কালাম ও যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার স্বাক্ষরিত চিঠিতে কমিটিগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়।
কিন্তু উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। এ ক্ষোভ থেকেই গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কমিটি বাতিলের দাবিতে মোটরসাইকেল মিছিল বের করেন তারা। গতকাল রোববার দুপুরেও উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় নেতাকর্মীরা অবৈধ কমিটি মানি না মানব না, টাকার কমিটি মানি না মানব না, আওয়ামী লীগের কমিটি মানি না মানব না’ বলে স্লোগান দিতে দিতে সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। পরে নান্দাইল পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে মোটরযান শ্রমিক সমিতির কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এ সময় বক্তব্য দেন নান্দাইল উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আকরাম হোসেন ফেরদৌস, যুবদল নেতা মোবারক হোসেন উজ্জল প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বিগত ১৭ বছর যারা আওয়ামী দুঃশাসনে হামলা, মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, ঘোষিত কমিটিতে তাদের রাখা হয়নি। রাখা হয়েছে তাদের, যাদের বিগত সরকারি দলের নেতাকর্মীর সঙ্গে সখ্য ছিল। তাই এ কমিটির বাতিল চান তারা। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব এনামুল কাদির বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান অনেক যাচাই-বাছাই করে ত্যাগী এবং পরীক্ষিতদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। কেউ না মানলেও কিছু করার নেই।’
ময়মনসিংহ জেলা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক এ কে এম এনায়েত উল্লাহ কালাম জানান, যাদের কমিটিতে রাখা হয়েছে, তারা যোগ্য বলেই রাখা হয়েছে। এর পরও যদি সমস্যা থেকে থাকে,  তারা বলুক কে কে অযোগ্য, পরে তাদের বাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন ত কর ম র র কম ট সদস য উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

উত্তরের পথে ঘরমুখ মানুষের চাপ, নেই যানজট 

আর মাত্র কয়েকদিন পর পবিত্র ঈদুল ফিতর। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে কর্মের শহর গাজীপুর ছাড়তে শুরু করেছেন নগরবাসী। 

বুধবার (২৬ মার্চ) সকাল থেকে গাজীপুরের দুই মহাসড়কে বেড়েছে যাত্রীর চাপ। তবে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। কোথাও যানজট সৃষ্টি হয়নি। স্বস্তিতেই বাড়ি ফিরতে পারায় খুশি ঘরমুখো মানুষ।

শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুরে ২১৭৬টি নিবন্ধিত কলকারখানা রয়েছে। এরমধ্যে ১১৫৪টি পোশাক কারখানা। এসব কারখানায় কাজ করেন লাখ লাখ কর্মী। ইতোমধ্যে অনেক কারখানা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ঈদের ছুটি শুরু হয়েছে। যানজট থেকে রেহাই পেথে তাই আগেভাগেই বাড়িতে ফিরছন মানুষ। তবে প্রতিবারের মতোই পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করছেন যাত্রীরা।

আরো পড়ুন:

থ্রি-হুইলার হাইওয়েতে উঠলেই অবৈধ হবে: অতিরিক্ত আইজি

ময়মনসিংহে কাভার্ডভ্যান চাপায় প্রাণ গেল স্বামী-স্ত্রীর

রাজধানীর প্রবেশমুখ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তায় যাত্রীদের ভিড় করছেন বাড়ি ফিরতে। অনেকেই কাঙ্ক্ষিত গাড়ির জন্য সেখানে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। সবার যাত্রা নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণ করতে জেলা, মহানগর ও ট্রাফিক বিভাগ সমন্বিতভাবে কাজ করছে।

পরিবহন মালিক ও শিল্প কারখানা সূত্র জানা গেছে, অল্প কিছু কারখানা ছুটি হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে পর্যায়ক্রমে শিল্প কারখানাগুলো ছুটি হবে। এরপর কিছু কারখানা শুক্রবার এবং বাকি কারখানা ছুটি হবে শনিবার। মূলত বৃহস্পতিবার থেকেই দুই মহাসড়কে যাত্রীদের চাপ কয়েকগুণ বাড়বে। 

উত্তরবঙ্গের প্রবেশপথ খ্যাত চন্দ্রা ত্রিমোড় গিয়ে দেখা যায়, আগের থেকে কয়েকগুণ যাত্রীর চাপ বেড়েছে। তাদের প্রত্যেকের হাতেই একাধিক ব্যাগ ছিল। কারো কারো মাথায় ছিল বস্তা। লম্বা ছুটি পাওয়ায় পরিবার-পরিজনকে অনেকেই আগেই পাঠিয়ে দিচ্ছেন বাড়িতে। ঘরমুখো মানুষদের বাসের হেলপারের সঙ্গে দর কষাকষি করে পছন্দের গাড়িতে বাড়ির পথে রওনা হতে দেখা যায়। 

সিরাজগঞ্জের চৌহালী থানার ওমর ফারুক বলেন, “একটি ফুড কোম্পানির মার্কেটিং কাজ করি। আটদিন ছুটি দিয়েছে কোম্পানি। এ কারণে পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি। মহাসড়কে কোনো ভোগান্তি নেই। আশা করছি, আরামেই বাড়িতে পৌঁছাতে পারব।” 

পাবনার সাথিয়া এলাকার রিনা খাতুন বলেন, “আমার হাজবেন্ডের ছুটি শুরু শুক্রবার থেকে। আগামীতে সড়কে যানজট হবে এমন আশঙ্কায় আজকে আমাদের তিনি বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছেন। সন্তানদের নিয়ে আমি আজকে বাড়ি যাচ্ছি, তিনি শুক্রবারে ডিউটি শেষ করে বাড়ি আসবেন। আজ মানুষের ভিড় কম তবে, বিকেলে বাড়বে।” 

নাওজোড় হাইওয়ে পুলিশের ওসি রইচ উদ্দিন বলেন, “যানজট যেনো না হয় এজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আজ কিছুটা যাত্রীর চাপ বেড়েছে। আগামীকাল থেকে যাত্রীর চাপ পুরোদমে শুরু হবে।” 

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) এস এম আশরাফুল আলম বলেন, “মহানগরীর টঙ্গীর চেরাগ আলী, কলেজ গেইট, ভোগড়া, চান্দনা চৌরাস্তাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে যানজট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যানজট নিরসনে ৩৫০ জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন মহাসড়কে। ঈদযাত্রা শুরু হলে বিআরটি লেনটি ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের দিকে একমুখী যানবাহন চলাচল করবে। ফলে ঢাকা থেকে যানবাহনগুলো সহজেই বের হয়ে যেতে পারবে।”

এদিকে, বুধবার দুপুরে চন্দ্রায় এসে হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজি দেলোয়ার হোসেন মিয়া বলেছেন, “চার হাজারের অধিক পুলিশ সদস্য, ৮২০টি টহল দল, ৩০০টির অধিক চেকপোস্টের মাধ্যমে মোটরসাইকেল পেট্রোলিং, ড্রোন মনিটরিং ও ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে মহাসড়কে শৃঙ্খলা বিধান করা হবে।”

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজীপুরে ৬৬ ভাগ কারখানা ছুটি, মহাসড়কে থেমে থেমে যানজট 
  • ময়মনসিংহে বহুতল ভবন থেকে ‘লাফিয়ে পড়া’ তরুণীর পরিচয় মিলেছে
  • ময়মনসিংহে বহুতল ভবন থেকে পড়ে তরুণী নিহত
  • ময়মনসিংহে ভোগান্তিবিহীন ঈদযাত্রা, কোনো সড়কে যানজট নেই
  • ময়মনসিংহে বহুতল ভবন থেকে ‘লাফিয়ে পড়ে’ তরুণীর মৃত্যু
  • স্থানীয় বাজারে মুরগি জবাই ও বিক্রিতে অবহেলা, টাইফয়েডের ঝুঁকি
  • ‘তুই’ বলে সম্বোধন করায় বাগ্‌বিতণ্ডা, তরুণকে কুপিয়ে হত্যা
  • তুই বলায় যুবককে কুপিয়ে হত্যা 
  • গাজীপুরে দুই মহাসড়কে বেড়েছে যানবাহনের চাপ, কিছু জায়গায় ধীরগতি
  • উত্তরের পথে ঘরমুখ মানুষের চাপ, নেই যানজট