প্রচলিত বাজারে রপ্তানি নির্ভরতা আরও বেড়েছে
Published: 16th, February 2025 GMT
বিশ্বের মোট ১৯৫টি দেশের প্রায় সবক’টিতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয় এখন। তবে ঐতিহাসিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র এবং ২৭ জাতির জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) নিরঙ্কুশ নির্ভরতা কমছে না; বরং বাড়ছেই। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত গত সাত মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ইউরোপ আর আমেরিকা-নির্ভরতা আরও বেড়েছে। অপ্রচলিত বা নতুন বাজারগুলো মাঝে কিছুটা সম্ভাবনা জাগিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তা সম্ভাবনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। গত সাত মাসে এসব বাজারে রপ্তানির হিস্যা আরও কমে এসেছে।
রপ্তানি পণ্য হিসেবে তৈরি পোশাক এবং বাজার হিসেবেও এরকম নির্ভরতা ইউরোপ-আমেরিকার প্রতি অতিনির্ভরতা বড় ধরনের ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন বাণিজ্য বিশ্লেষকরা। টেরিটাওয়েল, হোমটেক্সটাইলসহ সমজাতীয় পণ্য আমলে নিলে মোট রপ্তানিতে তৈরি পোশাকের হিস্যা এখন ৮৭ শতাংশ। অর্থাৎ বাকি সব পণ্য রপ্তানি থেকে আয় আসে মোট রপ্তানির মাত্র ১৩ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে পণ্যের শ্রেণি চিহ্নিতকরণে ব্যবহৃত হারমোনাইজ সিস্টেম (এইচএস) ৬ ডিজিট বিশিষ্ট পণ্যের কোডিং অনুযায়ী ২০০ ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে। প্রচলিত বাজার হিসেবে ইইউ, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং ২০২০ সালে ব্রেক্সিটের মাধ্যমে ইইউ থেকে আলাদা হওয়ার পর যুক্তরাজ্যকেও প্রচলতি বাজার হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। এর বাইরের সব দেশকে অপ্রচলিত বা নতুন বাজার হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটের (বিএফটিইউ) সাবেক পরিচালক এবং বাণিজ্য বিশ্লেষক ড.
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, গত সাত মাসে ২৭ জাতির জোট ইইউতে গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে পােশাক রপ্তানি বেড়েছে ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। রপ্তানির মোট পরিমাণ দাঁড়াল ১ হাজার ১৮১ কোটি ডলারেরও বেশি। এতে বিশ্ববাজারে দেশের রপ্তানি আয়ে ইইউর হিস্যা দাঁড়ায় ৫০ দশমিক ১৫ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৪৯ দশমিক ৩১ শতাংশ।
একইভাবে একক দেশ হিসেবে প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্রে গত সাত মাসে রপ্তানি বেড়েছে গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এই বৃদ্ধির ফলে বিশ্ববাজারে দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রের হিস্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৮ দশমিক ২৭ শতাংশ। ৪৪৭ কোটি ডলারেরও বেশি মূল্যের তৈরি পোশাক গেছে দেশটিতে। প্রচলিত আরেক বাজার কানাডায় রপ্তানি বেড়েছে ১৫ দশমিক ২৯ শতাংশ। রপ্তানি বাজার হিসেবে কানাডার হিস্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩ দশমিক ১০ শতাংশ। যুক্তরাজ্যে অবশ্য রপ্তানি কিছুটা কমে এসেছে। গত সাত মাসের হিসাবে হিস্যা দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৮৩ শতাংশ। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ ছিল।
প্রচলিত বাজারে রপ্তানি বাড়ার বিপরীতে অপ্রচিলত শ্রেণির বাজারে রপ্তানি বেড়েছে মাত্র ৬ দশমিক ৪২ শতাংশ। এতে মোট রপ্তানিতে এসব দেশের হিস্যা কমে দাঁড়ায় ১৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ। গত অর্থবছরে একই সময়ে যা ছিল ১৭ দশমিক ৭২ শতাংশ। গত সাত মাসে তৈরি পোশাকের রপ্তানির পরিমাণ ৩৯৭ কোটি ডলারের কিছু কম।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক এবং ডেনিম এক্সপার্টের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল সমকালকে বলেন, ইউরোপ-আমেরিকায় রপ্তানি বাড়তে পারে। ভূরাজনৈতিক কারণে সেখানে রপ্তানির নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এটি কাজে লাগাতে পশ্চাৎসংযোগ শিল্পে বিনিয়োগ বাড়ানো দরকার।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গত স ত ম স প রচল ত ব আম র ক ইউর প দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
লোকসানের ধারায় আছে বিডি সার্ভিস
২০২৪ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) লোকসানের ধারা অব্যাহত আছে বিডি সার্ভিসের। এর আগে প্রথম প্রান্তিকেও লোকসানে ছিল কোম্পানিটি। অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে বছরের প্রথম ছয় মাসে লোকসানে আছে বিডি সার্ভিস।
২০২৪ সালের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে বিডি সার্ভিসের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৮৫ পয়সা; ২০২৩ সালের একই সময় যা ছিল ১ টাকা ৭২ পয়সা। অর্থাৎ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে লোকসান বেড়েছে। অর্ধবার্ষিক হিসাবে দেখা যাচ্ছে, জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে কোম্পানিটির লোকসান হয়েছে শেয়ারপ্রতি ৫ টাকা ২০ পয়সা; গত বছরের একই সময় যা ছিল ২ টাকা ৭৪ পয়সা।
জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৪ সময়ে বিডি সার্ভিসের শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং নগদ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) ১ টাকা ৯৭ পয়সায় নেমে এসেছে; ২০২৩ সালে যা ছিল ২ টাকা ৮৭ পয়সা। এ ছাড়া ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) ছিল টাকা ২২৩ টাকা শূন্য ৬ পয়সা; ৩০ জুন ২০২৪ তারিখে যা ছিল ২২৮ টাকা ২৬ পয়সা। অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে কোম্পানিটি আর্থিকভাবে চাপের মুখে আছে। ২০১৪ সালের পর কোম্পানিটি লভ্যাংশ দেয়নি।