Samakal:
2025-04-21@14:15:44 GMT

স্মৃতির পাতায় রঙিন ছোঁয়া

Published: 16th, February 2025 GMT

স্মৃতির পাতায় রঙিন ছোঁয়া

নিয়মের বেড়াজাল আর যান্ত্রিক চাপের মধ্যে শিক্ষা সফরের আয়োজন স্বস্তির শীতল বাতাস বইয়ে দেয় মনে। এমনই এক স্মরণীয় শিক্ষা সফর আয়োজন করে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্স শিক্ষার্থীদের জন্য এটি ছিল শেষ শিক্ষা সফর। এ সফরের গন্তব্য ছিল পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার এবং বঙ্গোপসাগরের মোহনায় অবস্থিত সেন্টমার্টিন দ্বীপ। আমরা বিকেল ৪টায় আমাদের যাত্রা শুরু করলাম। ক্যাম্পাসের সীমানা পেরিয়ে বাস যখন পথচলা শুরু করল, তখন থেকেই নাচ-গান আর হাসি-আনন্দে ভরপুর এক মুহূর্তে পরিণত হলো পুরো বাস। আমাদের আনন্দমুখর যাত্রায় সঙ্গী হলেন আইন বিভাগের শিক্ষিকা অধ্যাপক ড.

আরমিন খাতুন। পথে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হলেন সহযোগী অধ্যাপক ড. সাজ্জাদুর রহমান স্যার।  মধ্যরাতের বিরতি পড়ল ফেনীতে। সেখানেই আমরা সবাই মিলে রাতের খাবার খেলাম। খাবার শেষে আবারও যাত্রা শুরু হলো। এবার সবাই আরও উৎসাহী– কারণ কক্সবাজার আর খুব বেশি দূরে নয়।
প্রায় ১৮ ঘণ্টার দীর্ঘ যাত্রার পর আমরা পৌঁছে যাই কক্সবাজার। ক্লান্ত চোখ আর অবসন্ন শরীরে কিছুটা বিশ্রাম নেওয়ার পরই শুরু হয় নতুন উচ্ছ্বাস। সমুদ্রের ডাক উপেক্ষা করা যে অসম্ভব! হোটেল থেকে বেরিয়ে খালি পায়ে সবাই নেমে পড়ি সৈকতের নরম  বালুচরে। প্রথম স্পর্শেই যেন সব ক্লান্তি মুহূর্তে মিলিয়ে গেল। ঢেউয়ের মৃদু স্নিগ্ধতায় আমাদের মিতালি গড়ে ওঠে সমুদ্রের সঙ্গে।  কখন যে ঘড়ির কাঁটা বেলা ২টায় পৌঁছেছে তা যেন বুঝতেই পারিনি। 
খাবার শেষে যার যার মতো আবার ছুটে গেলাম সৈকতে। আমরা অপেক্ষা করতে থাকলাম সূর্যাস্তের সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্তটির জন্য। নীল আকাশ ধীরে ধীরে রং বদলাতে শুরু করল। সূর্যের সোনালি আভা লালচে কমলাতে রূপ নিয়ে এক অপার্থিব দৃশ্যের সৃষ্টি করল। রাত ১০টায় সবাই একত্র হয়ে খাবার খেয়ে হোটেলে ফিরলাম। আমরা পরদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে চাঁদের গাড়িতে করে রওনা হলাম মেরিন ড্রাইভ সড়ক ধরে টেকনাফের উদ্দেশে। মেরিন ড্রাইভ রোডের একপাশে সমুদ্রের গর্জন ও অন্যপাশে সবুজে মোড়ানো উঁচু পাহাড় থেকে দিচ্ছে সবুজের হাতছানি। এমন নৈসর্গিক সৌন্দর্যের প্রেমে পড়তে যে কেউই বাধ্য। মেরিন ড্রাইভ সড়কে আমাদের এই যাত্রা যেন প্রকৃতির সঙ্গে এক অপূর্ব সংলাপ। এই পথে যেতে আমরা কয়েকটি স্পটে দাঁড়িয়ে সৌন্দর্য অবলোকন করেছিলাম। টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে দাঁড়িয়ে সাগর আর আকাশের মিলনরেখায় চোখ রেখে মুক্তির এক অনির্বচনীয় অনুভূতি হলো। সবশেষে ফেরার পথে হিমছড়িতে পাহাড়ের চূড়া থেকে রক্তিম আলোয় ঢেউ খেলা সাগর দেখে মনে হচ্ছিল যেন এক জীবন্ত শিল্পকর্ম। আমরা পর দিন ভোরে উঠেই রওনা হলাম জাহাজ ঘাটের উদ্দেশে।  ৯টার কিছুক্ষণ পর জাহাজ ছাড়ল। আমরা জাহাজের ডেকে এসে দাঁড়ালাম। খোলা আকাশ, মৃদু হাওয়া আর বিস্তৃত সমুদ্র এক অনন্য অনুভূতির সৃষ্টি করল। আমাদের কেউ কেউ খোলা ডেকে সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করছে, কেউ ছবি তোলায় ব্যস্ত আবার কেউ গান ও আড্ডায় মেতেছে।  আমরা জাহাজ থেকে নেমে নির্ধারিত রিসোর্টে পৌঁছে দ্রুত খাওয়া-দাওয়া সেরে বের হয়ে পড়লাম প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের অপূর্ব সৌন্দর্য উপভোগ করতে।  নীল আকাশ আর সমুদ্রের সঙ্গম যেন দিগন্তজুড়ে সৃষ্টি করেছে এক অদ্ভুত রঙের খেলা। সেই নীল জলে ডুব দেয় ভ্রমণপ্রেমীদের দল। অনেকে সাইকেলে চড়ে  ঘুরে দেখছে দ্বীপের সৌন্দর্য। বাতাসের ঠান্ডা শীতল পরশ আর সাগরের গর্জন সব মিলিয়ে এক অভূতপূর্ব অনুভূতি! কখন যে সন্ধ্যা নেমে এসেছে টেরই পাইনি। লালচে আলোয় সেন্টমার্টিন তখন এক মোহনীয় রূপ ধারণ করেছে। দ্বীপের নির্জনতা, জ্যোৎস্নার মায়াবী আলো আর সাগরের গুঞ্জন মিলে এক সম্মোহনী আবহ সৃষ্টি করেছে।  

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ভ রমণ স ন দর য সব জ র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল, বিএনপির প্রতিবাদ

সোনারগাঁয়ে ঝটিকা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় মাস্ক, কাপড় হেলমেট মাথায় দিয়ে মুখ ঢেকে রেখেছিলেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। তারই প্রতিবাদে সোনারগাঁ উপজেলা ও পৌর বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন।

সোমবার সকাল সাড়ে ৭ টায় হঠাৎ করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপজেলার কাঁচপুর নয়াবাড়ি এলাকায় এ মিছিল করা হয়। পরে মিছিলের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-সার্কেল) আসিফ ইমাম মিছিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

বিকেল ৪টায় সোনারগাঁ পৌরসভার কার্যালয়ের সামনে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিলের প্রতিবাদ জানিয়ে পৌরসভা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলে বলতে শোনা যায়, জিয়ার সৈনিক এক হও লড়াই করো, হই হই রই রই নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ গেলি কই।

জানা যায়, গত ৫ আগস্ট পরবর্তীতে সোনারগাঁয়ে এই প্রথম প্রকাশ্যে আওয়ামীলীগের অঙ্গ সংগঠনের ব্যানারে কোন কর্মসূচি করতে দেখা গিয়েছে।  ভিডিওটিতে বলতে শোনা যায় নারায়ণগঞ্জের মাটি শেখ হাসিনার ঘাটি, শেখ হাসিনার ভয় নাই রাজপথ ছাড়ি নাই।

শেখ হাসিনা আসবে বাংলাদেশ হাসবে, জামাত শিবির রাজাকার এই মূহুর্তে বাংলা ছাড়। এসময় ছাত্রলীগের ১৫ থেকে ২০ জন নেতাকর্মী মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। পরিচয় গোপন করতে প্রত্যেকেরই মুখে কালো মাস্ক, হেলমেট কিংবা কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়া ভিডিওটি অস্পষ্ট হওয়ায় বিক্ষোভকারীদের কাউকে চেনা সম্ভব হয়নি। তবে পুলিশ জানিয়েছেন ছাত্রলীগ এই বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। অপর দিকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিলের প্রতিবাদ জানিয়ে উপজেলা ও পৌর বিএনপি এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ মিছিল বের করে। 

প্রতিবাদ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁও পৌরসভা যুবদলের আহবায়ক  মফিজুর রহমান সোহেল,সোনারগাঁও পৌরসভার স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক ফারুক আহমেদ, সোনারগাঁও পৌরসভা ছাত্রদলের সাবেক  আহবায়ক ফরহাদ শিকদার,  শ্রমিকদলের আহবায়ক আবুল হোসেন, সোনারগাঁ পৌরসভা যুবদল নেতা সালে মুসা,আল আমিন, পৌর ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক কাজী নাদিম,ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক তানভীর আহমেদ জনি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ