সভায় ছাত্রশিবিরকে আমন্ত্রণ জানানোয় ছাত্রদলসহ পাঁচ ছাত্রসংগঠনের আপত্তি
Published: 16th, February 2025 GMT
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস-২০২৫ উপলক্ষে ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে আমন্ত্রণ জানানোয় প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলসহ পাঁচটি ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠন। পরবর্তী সময়ে সভার নির্ধারিত বিষয়ে পুরো আলোচনা বাকি থাকতেই সভা শেষ করেছে আয়োজক কমিটি।
রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল মতিন ভার্চ্যুয়াল ক্লাসরুমে এই সভার আয়োজন করা হয়। সভায় শিবিরের নেতাদের উপস্থিতি নিয়ে আপত্তি তোলেন পাঁচটি ছাত্রসংগঠনের নেতারা। ছাত্রশিবিরকে এই সভায় কেন আমন্ত্রণ জানানো হলো, আয়োজকদের সে প্রশ্ন রাখেন তাঁরা। এই পাঁচ সংগঠন হলো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ( বাসদ) ও গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল।
এরপর একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষাশহীদ দিবস পালনে সবার সহযোগিতা চেয়ে সভাটি সংক্ষিপ্ত করে শেষ করে দেওয়া হয় বলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহিদ দিবস-২০২৫ আয়োজক কমিটির সদস্যসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সভায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের উপস্থিতি নিয়ে ছাত্রদলসহ আরও কয়েকটি বাম ছাত্রসংগঠন আপত্তি তোলে। আমরা তাদের বলি, এটা তো মাতৃভাষা দিবস বিষয়ে আলোচনা। পরবর্তী সময়ে আমরা সংক্ষিপ্ত করে সভাটি শেষ করে দিই।’
সভায় অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের নেতাদের সঙ্গে ইসলামী ছাত্রশিবিরের পক্ষে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম সাদ্দাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ ও সেক্রেটারি জেনারেল মহিউদ্দিন খান উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রশিবির একাত্তর প্রশ্ন এখনো মীমাংসা করেনি। কিছুদিন আগেও ছাত্রশিবিরের পত্রিকা ছাত্র সংবাদে ’৭১–এর মুক্তিযুদ্ধকে তারা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। কিন্তু পরবর্তী সময়েও এ বিষয়ে তারা স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। সেখানে তাদেরকে কেন সভায় আমন্ত্রণ জানানো হলো, এ বিষয়ে ছাত্রদলসহ সভায় বেশির ভাগ ছাত্রসংগঠন আপত্তি জানিয়েছে।’
সভায় ছাত্রশিবিরের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানোর প্রতিবাদ জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট। তাতে বলা হয়, ‘অভ্যুত্থানের পরেও ছাত্রশিবিরের প্রকাশনায় একাত্তরে গণমানুষের লড়াইকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়। সেই সংগঠনকে একুশ নিয়ে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো এ দেশের মানুষের গণসংগ্রামের ইতিহাসের প্রতি তাচ্ছিল্য প্রদর্শনের শামিল। দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের ছায়াতলে ছাত্রশিবিরের গুপ্ত রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য দূষণীয়। একই সঙ্গে দেশের শিক্ষাঙ্গনে শিবিরের দীর্ঘদিনের সন্ত্রাস, দখলদারিত্ব, রগ কাটার মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের হিংস্র ইতিহাসও এ দেশের ছাত্রসমাজ ভুলে যায়নি। ফলে ছাত্রশিবিরের মতো একটি ধর্মীয় ফ্যাসিস্ট ও বিতর্কিত সংগঠনকে বারবার বৈঠকে ডেকে এনে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকগুলোকে অকার্যকর করার দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে।’
সভায় ছাত্রশিবিরের উপস্থিতির প্রতিবাদ জানিয়ে পৃথক বিবৃতি দিয়েছেন ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু ও সাধারণ সম্পাদক মাঈন আহমেদ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স গঠন র উপস থ ত আপত ত ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
রাবির হলের রেজিস্ট্রেশন ফরমে একি হাল!
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রহমতুন্নেসা হলের ভুল বানান সম্বলিত একটি নিবন্ধন ফরমের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ছবিটি সামনে আসার পর থেকে এ নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ফরমে এত বড় ভুল কিভাবে হয় প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ নামে একটি ফেসবুক পেজে সিদ্দিকা ত্বহা নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ফরমের ছবি তুলে পোস্ট দেন। পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘এভাবেই কি আমরা শিখব?’
দেখা গেছে, ওই ফরমে বিশ্ববিদ্যালয়কে লেখা হয়েছে ‘বিশ্ববিদ্যায়’ এবং রাজশাহীকে লেখা হয়েছে ‘লাজশাহী’। এছাড়া নিবন্ধীকরণ বানানও ভুল। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে রহমতুন্নেসা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মোছা. ইপ্তি আক্তার বলেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। এ সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের যেকোন দাপ্তরিক নথিতে বাক্য ও বানানের ভুল মেনে নেওয়া যায়নি। হলের ফরমে খুব বেশি লেখা নেই। এ অল্প কিছু লেখায় যদি ৪-৫টা ভুল থাকে, তা সত্যি লজ্জাজনক।”
তিনি বলেন, “সবচেয়ে হতাশার বিষয় হলো- ‘বিসমিল্লাই গলদ’ করে রেখেছে। হল প্রশাসনকে আরো সতর্ক হওয়া উচিত এসব বিষয়ে। হল প্রশাসনকে বলতে চাই, পরবর্তী সময়ে কোন নোটিস দিলে অবশ্যই যেন যাচাই-বাছাই করে দেওয়া হয়।”
রহমতুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ ড. ইসমত আরা বেগম বলেন, “ছবিটি আমার নজরে এসেছে। তবে এখানে পুরো ছবিটা আসেনি। এখানে কেউ ইন্টেনশনালি আমাকে এবং আমার হলকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য করেছে কি না- সেটিও দেখতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমি খোঁজ নিচ্ছি, যদি এটি আমার হলের কোন ডকুমেন্ট হয়ে থাকে, অবশ্যই এটি সংশোধন করবো এবং সংশ্লিষ্ট স্টাফকে সতর্ক করব। হলের যেকোনো বিজ্ঞপ্তি অথবা ডকুমেন্টে বানানের বিষয়ে পরবর্তীতে দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কনক বলেন, “আমি মনে করি এগুলো সতর্কতার অভাব, সিরিয়াসনেসের অভাব। অনেক সময় ভুলবশত প্রিন্টিং মিস্টেক হয়ে যায়। এসব বিষয়ে অবশ্যই সতর্ক হওয়া উচিত।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী