স্মার্টফোন, পিসি বা ল্যাপটপ– তিন মাধ্যমেই জনপ্রিয় ব্রাউজার হলো ক্রোম। কিছুদিন আগে গুগল ক্রোম গ্রাহকের জন্য বিশেষ সতর্কবার্তা জারি করেছে কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (সিইআরটি)।
সতর্কবার্তায় গ্রাহকের উদ্দেশে বলা হয়, যদি কেউ গুগল ক্রোম ইন্টারনেট ব্রাউজার ব্যবহার করে থাকে, তাহলে বিশেষ সতর্কতা মেনে চলতে হবে। বিশেষ করে যারা উইন্ডোজ বা ম্যাকওএস সংস্করণে জনপ্রিয় ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহার করে, তাদের জন্য সতর্কবার্তা প্রযোজ্য হবে।
সিস্টেম সূত্রে জানা গেছে, গুগল ক্রোম ব্যবহৃত কোনো কোনো ডিভাইসে সমস্যা দৃশ্যমান হয়েছে। সিইআরটি গবেষণা ও শনাক্ত দল তাদের নিজস্ব বার্তায় এমন তথ্য দিয়েছে। জানানো হয়, গুগল ক্রোম ব্রাউজারে বেশ কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি নজরে পড়েছে। ফলে হ্যাকার চক্র বিশেষ ফায়দা নিতে যে কারও ক্ষতি করতে পারে।
দূরে বসে নিয়ন্ত্রণ!
সারাবিশ্বে ক্রোম ব্রাউজারে দৃশ্যমান সবকটি সমস্যা ব্রাউজারের কয়েকটি স্পর্শকাতর নিরাপত্তাবলয় ভেঙে দিয়েছে। ফলে গ্রাহক পাসওয়ার্ডের মতো স্পর্শকাতর তথ্য বেহাত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে। গবেষণা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, সিস্টেমের দুর্বলতার কারণে হাজারো মাইল দূর থেকেই ডিভাইসের ফিজিক্যাল অ্যাকসেস প্রয়োজন ছাড়াই হ্যাকার চক্র ক্ষতিগ্রস্ত ব্রাউজার গ্রাহককে বিশেষ সমস্যার মুখোমুখি করবে।
উদাহরণে উল্লেখ করে বলা হয়, বিশেষভাবে ডিজাইন করা ওয়েবপেজে রিডাইরেক্ট করে অনেকের ডিভাইসে ভাইরাস প্রবেশ করিয়ে ডিভাইসে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারে হ্যাকার। ফলে হাতছাড়া হতে পারে সংবেদনশীল সব তথ্য। ব্যক্তিগত ডেটা চুরি বা পরিচয় চুরি করে অ্যাকাউন্টে নজিরবিহীন ক্ষতি সাধন করতে পারে।
ইতোমধ্যে উল্লিখিত বিপদ থেকে বাঁচতে গুগল ক্রোম ব্রাউজারের জন্য তাৎক্ষণিক বিশেষ আপডেট প্রকাশ করেছে। যদি ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহার করে থাকে, তাহলে দ্রুত নতুন আসা আপডেট ডাউনলোড ও ইনস্টল করে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। লিনাক্স (১৩৩.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমার লোকজন খাজনা ওঠাবে, বাধা দিলে ভয়াবহ পরিণতি’
নীল পাঞ্জাবি পরা একজন সবার সামনে। তার পেছনে একদল লোক। তাদের মাথাসহ মুখ লাল গামছায় বাঁধা। কারও হাতে রামদা, কারও হাতে বাঁশের লাঠি। ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ স্লোগান দিয়ে পাঞ্জাবি পরা লোকটির নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে তারা। আতঙ্কে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করছে সাধারণ মানুষ।
আজ শনিবার বিকেলে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার এমসি বাজারে এ ঘটনা ঘটে। অস্ত্রের মহড়ায় নেতৃত্বে দেওয়া নীল পাঞ্জাবি পরিহিত লোকটি শ্রীপুর উপজেলা যুবদলের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম পিন্টু। শুধু মহড়া নয়, প্রকাশ্যে বাজারের দোকানিদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা-পয়সা লুট করে তার লোকজন। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা শুরু হয়। এভাবে অস্ত্রের মহড়া ও চাঁদাবাজির ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনা জানাজানির পর গতকালই তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, শ্রীপুরের তেলিহাটী ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম পিন্টু। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে তার নেতৃত্বে অর্ধশত সন্ত্রাসী এমসি বাজারে সশস্ত্র মহড়া দেয়। মাঝে মধ্যে ককটেল বিস্ফোরণের শব্দও শুনতে পাওয়া যায়। তখন আতঙ্কে সাধারণ মানুষ নিরাপদ স্থানে চলে যান।
১ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, মহাসড়কের ওপর চেয়ারে দাঁড়িয়ে হ্যান্ডমাইক নিয়ে কথা বলছেন জাহাঙ্গীর আলম পিন্টু। তাঁর লোকজনের ‘জাহাঙ্গীর ভাইয়ের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ স্লোগান থামলে তিনি বলেন, ‘প্রিয় দোকানদার ভাইয়েরা, আমি জেল থেকে এসে ঘোষণা দিয়েছিলাম, এমসি বাজারটাকে আমি আমার নিজস্ব লোক ও আপনাদের সহযোগিতার সুন্দরভাবে পরিচালনা করব। কিন্তু কিছু মানুষের জন্য আমি পারি নাই। আজকে লোকজন নিয়ে এসেছি। আজকের পর থেকে আমি জাহাঙ্গীর যত দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকি, তত দিন পর্যন্ত আমার নিয়ন্ত্রণে চলবে এমসি বাজার এবং আপনাদের দয়া করে বলছি, এখন এই মুহূর্তে আমার লোকজন খাজনা ওঠানো শুরু করবে। কেউ বাধা দেবেন না। বাধা দিলে ভয়াবহ পরিণতি হবে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুবদলের এক নেতা জানান, মহড়া দিয়ে পুরো এমসি বাজারে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে পিন্টু। অন্তত ১০০ দোকান থেকে চাঁদা আদায় করে তার সন্ত্রাসী বাহিনী। তাদের কাছে বিদেশি পিস্তলও ছিল। তবে গুলি ছোড়েনি।
আব্দুল লতিফ নামে বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, বিকেলে হঠাৎ লোকজন নিয়ে এসে বক্তব্য দেয় পিন্টু। এর কিছুক্ষণ পর রামদার ভয় দেখিয়ে টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়। সন্ত্রাসীরা ঘণ্টাব্যাপী অস্ত্রের মহড়া দিল, কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাউকে দেখলাম না।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম পিন্টু বলেন, ‘আমি টেহা পয়সা উঠাইনি। এগুলো আমাকে হেয় করার জন্য করা হয়েছে। যারা আমার বাড়ি ভাঙচুর করছিল, অফিস ভাঙচুর করছিল, তাদের খুঁজতে গেছিলাম। না পেয়ে চলে আসছি।’
জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আতাউর রহমান মোল্লাহ সমকালকে জানান, ঘটনার পরপরই যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহদপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়ার স্বাক্ষরে জাহাঙ্গীর আলম পিন্টুকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, যুবদল নেতার বক্তব্য ও মহড়ার ভিডিও পেয়েছি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।