Samakal:
2025-04-15@13:19:06 GMT

বর্জ্যের বিষে নীল পায়রা নদী

Published: 16th, February 2025 GMT

বর্জ্যের বিষে নীল পায়রা নদী

বরগুনার আমতলী পৌর শহরের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য, ময়লা ও আবর্জনা ফেলা হচ্ছে পায়রা নদী ও বাসুগী খালে। পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য ফেলার কারণে নদী ভরাট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। সারাক্ষণ দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশও।
বরগুনা ও আমতলীর মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত পায়রা নদী। প্রমত্তা পায়রার সঙ্গে যুক্ত বাসুগী খাল। প্রবহমান পায়রা নদী ও খাল ঘিরে রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বেসরকারি হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। আশপাশে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি বাজার। 
জনগুরুত্বপূর্ণ এ পৌর শহরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নেই। এসব প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য সংগ্রহ করে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডসংলগ্ন ব্লকে পায়রা নদীতীর ঘেঁষে এবং ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাছ বাজারের পশ্চিম পাশে বাসুগী খালের পাড়ে ফেলছেন। এসব বর্জ্য নদী খালের পানিতে মিশে দূষণ বাড়াচ্ছে। ফলে পায়রা নদীর কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এসব ময়লা নদীর স্রোতে ভেসে যায়। 

এ বিষয়ে কথা হলে পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, বর্তমানে পৌরসভায় কোনো ডাম্পিং ইয়ার্ড নেই। এ কারণে বিভিন্ন স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। ডাম্পিং ইয়ার্ড স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রকল্প প্রস্তাবনা জমা দেওয়া হয়েছিল। বরাদ্দ না পাওয়ায় সে প্রকল্প বাতিল হয়ে যায়।
সরেজমিন দেখা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডসংলগ্ন ব্লকে পায়রা নদীতীর ঘেঁষে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ময়লা ফেলছেন। সেখানে রয়েছে হাসপাতাল, বাজার ও ছোটখাটো কারখানার বর্জ্য। তীরসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারাও যে যার মতো গৃহস্থালির আবর্জনা ফেলছে। কাক, মুরগি, কুকুর সেগুলো ঘাটাঘাটি করছে। দুর্গন্ধে এলাকায় টেকা দায়। বর্জ্য নদীর স্রোতে ভেসে যাচ্ছে। এতে পায়রা নদীর কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পানি এখন বিষে পরিণত হয়েছে। সেই পানি গোসল, রান্নাসহ নিত্যদিনের কাজে ব্যবহার করছেন অনেকে।
একইভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে বাসুগী খালেও। পলিথিন, চিপস, বিস্কুটের খোসা ভাসছে খালের পানিতে। হাসপাতালে ব্যবহৃত সিরিঞ্জ, কাচের বোতলসহ নানা ধরনের ক্লিনিক্যাল বর্জ্য দেখা গেছে সেখানে। শুধু পায়রা বা বাসুগী খাল নয়; ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষি রোডের পূর্ব পাশের ডোবা, সাত ধারা, খোন্তাকাটা, সবুজবাগ, একে স্কুলসহ বিভিন্ন স্থানে সড়ক ঘেঁষে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। 
পায়রা নদী তীরবর্তী গাছ বাজারের বাসিন্দা রাবেয়া ও হনুফা বেগম বলেন, গাঙ্গের পানি দিয়া মোরা নাওয়া রান্দাসহ সব কাজ হরি। পানি নষ্ট অইয়া যাওয়ায় নাওনের পর গা খালি চুলকায়। 
লঞ্চঘাট এলাকার জেলে রাজু খাঁ বলেন, পায়রা নদীতে একসময় ইলিশ, পাঙাশ, পোয়া, তপসী, গলদা চিংড়িসহ নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। বর্জ্যের কারণে নদীর পানি বিষাক্ত হয়ে গেছে। এখন আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। অনেক জেলে মাছ না পেয়ে হতাশ হয়ে পেশা পরিবর্তন করছেন। 
আক্ষেপ করে জেলে নিজাম খাঁ বলেন, পানি নষ্ট হয়ে গেছে। আগের মতো মাছ পাই না। ইলিশ, পাঙাশ ও তপসী মাছ  নাই বললেই চলে। সারাদিন বড়শি নিয়ে বসে থাকলেও মাছ পাওয়া যায় না।
পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অধ্যাপক (অব.

) আনোয়ার হোসেন আকন বলেন, জনস্বার্থে দ্রুত বর্জ্য ডাম্পিং ইয়ার্ড নির্মাণ করা প্রয়োজন। তা না হলে পৌরসভা বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে। রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়বে।
পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, জরুরি  ভিত্তিতে বর্জ্য ব্যস্থাপনা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা জমা দেওয়া আছে। টাকা পেলেই কাজ শুরু করা হবে। 
পরিবেশ অধিদপ্তর বরগুনার সহকারী পরিচালক হায়াত মাহমুদ রকিব বলেন, নদীর পানি ও পরিবেশদূষণ ময়লা ব্যবস্থাপনা জরুরি। 
পৌরসভাকে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেওয়া হবে।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বর জ য প রসভ

এছাড়াও পড়ুন:

পটুয়াখালীর আড়তে ইলিশের কেজি ২৫০০ টাকা 

বাঙালির অন্যতম উৎসব বাংলা নববর্ষ। আর এ উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ পান্তা-ইলিশ। এ উৎসব ঘিরে ইলিশসহ সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। দেশের বৃহৎ পটুয়াখালীর পাইকারি মাছ বাজার মহিপুর ও আলীপুরে ইলিশের দাম চড়া। এতে পাইকারি ক্রেতারা হতাশা প্রকাশ করেছেন। তবে সমুদ্রে মাছের অকাল থাকায় ইলিশের দাম অনেকটা বেশি বলে জানিয়েছেন পাইকারি বিক্রেতারা।

মহিপুর ও আলীপুর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এই দুই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ফাইস্যা, ছুড়ি, পোয়া, মটকা চিংড়ি, টোনা, তাপসী, কোরাল, চাপলি, পবদা ও টাইগার চিংড়ি, স্বল্প সংখ্যক বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ থাকলেও বাজার প্রায় ইলিশ শূন্য। যেখানে প্রতিনিয়ত টন টন ইলিশ বিক্রি হয়, সেখানে হাতেগোনা কয়েকটি আড়তে ইলিশ মাছ দেখা গেল। তাও মাঝারি ও ছোট সাইজের ইলিশ। এ বাজারে ১ কেজি ওজনের ইলিশ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা কেজি দরে। ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা কেজি দরে। ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে। আর ছোট ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়।

কলাপাড়া থেকে মহিপুর মাছ বাজারে আসা পাইকারি ক্রেতা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘‘সকাল ৮টায় মহিপুরে এসেছি। এখন পর্যন্ত ইলিশ মাছ কিনতে পারিনি। এখানে নিলামের মাধ্যমে ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা কেজি দরে ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। এ সব ইলিশ কিনে কত টাকায় বিক্রি করব?’’ 

আরো পড়ুন:

‘হাসিনার দোসররা ভোরে চারুকলায় ফ্যাসিবাদের মুখাবয়ব পুড়িয়ে দিয়েছে’

নববর্ষের দিন টিএসসি-শাহবাগ মেট্রো স্টেশন ‘সাময়িক বন্ধ থাকবে’

আমতলী থেকে আসা অপর পাইকারি ক্রেতা রিয়াজুল বলেন, ‘‘আজ এখানে ইলিশ কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে। দাম চড়া থাকায় এক মণ ছুড়ি মাছ নিয়ে যাচ্ছি। এগুলো বিকালে আমতলী বাজারে বিক্রি করব।’’

মহিপুর আড়তদার মালিক সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য মাহতাব ফিসের স্বত্ত্বাধিকারী মাহতাব হাওলাদার জানান, বেশ কিছু দিন ধরে বৃষ্টি না থাকার কারণে জেলেদের জালে খুব কম পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ছে। যার কারণে বাজারে ইলিশের সংখ্যা খুবই কম। আর আজ একেবারে ইলিশ নেই বললেই চলে। যার কারণে দাম অনেকটা চড়া।

কলাপাড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ইলিশের সংখ্যা একটু কমেছে। এছাড়া এই উপকূলে অনেক দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে না, যার ইলিশ কম ধরা পড়ছে এবং দামও বেশি। ১৫ এপ্রিল থেকে সমুদ্রে মাছ ধরার উপর ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, নিষেধাজ্ঞার পর জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়বে এবং দামও অনেকটা কমবে।  

ঢাকা/ইমরান/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে, নারীকে শিকল দিয়ে গাছে বেঁধে নির্যাতন
  • বিয়ের দাবিতে ৩ সন্তানের মায়ের অনশন, শেকলে বেঁধে নির্যাতন
  • বরগুনায় আগুনে পুড়ে ছাই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ ২৪ ঘর, ৫ কোটি টাকার ক্ষতি
  • পটুয়াখালীর আড়তে ইলিশের কেজি ২৫০০ টাকা