ইউক্রেনের ব্যাপারে ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ‘শান্তি পরিকল্পনা’ উস্কে দিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তখন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথের কাছ থেকে সব কিছু আলোচনার টেবিলে আছে, শুনে খুব ভালো লাগছে। এ ছাড়া প্রেসিডেন্ট পুতিন কি আলোচনা আয়োজনে ইচ্ছুক? আমি মনে করি, হেগসেথ আলোচনা চালিয়ে যেতে খুব ইচ্ছুক। সৌদি কারিগরদেরও তা আয়োজনের সম্ভাবনা রয়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই শান্তি আলোচনা প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের মাধ্যমে আয়োজন করা যেতে পারে।
আলোচনার একটি মোটামুটি নির্ভরযোগ্য নীতি রয়েছে। আপনি যদি প্রথমে একটি সংখ্যা বলেন, তবে সেটি ধরে দরকষাকষি শেষ করবেন। আবার যদি অন্য দিক থেকে প্রথমে একটি নম্বর আসে, আপনি সেটি ধরে আলোচনায় এগিয়ে যান। যে কারণেই হোক, আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরুর আগেই হেগসেথ ইতোমধ্যে ২০১৪ সাল থেকে রাশিয়ার দখল করা বেশির ভাগ বা সব জমি ফিরিয়ে দেওয়া, ইউক্রেনকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি বাদ দিয়েছেন। ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের সম্ভাবনা বাতিল করেছে এবং ভবিষ্যতে ইউরোপীয়দের নিরাপত্তার হুমকি এড়াতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিশ্চয়তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আমি মনে করি, ভ্লাদিমির পুতিন সব কিছু মেনে নেবেন এই বলে, ‘আপনাকে আমি ভাড়া করেছি!’
অন্য আগ্রহী পক্ষগুলোকে আরও জোরালোভাবে আত্মসমালোচনা করা উচিত। আমি গতকাল পড়েছি এবং শুনেছি, ইউরোপীয় নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের সুবিধাবাদী তৎপরতার কারণে কতটা ‘ব্যথিত’ ও বিস্মিত হয়েছেন এবং ভোগান্তিতে পড়েছেন। কিন্তু .
এখন মার্কিন প্রশাসন ও পুতিন ছাড়া কারও অবস্থা সুখকর নয়; বাকিরা ইউক্রেনের ব্যাপারে সবচেয়ে অখুশি। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে এই জোরালো দরকষাকষির আলোচনায় রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সমান অংশীদার কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, হ্যাঁ, এটি একটি আকর্ষণীয় প্রশ্ন। আমার অনুমান, আপনার প্রশ্নের উত্তর হলো, ইউক্রেন চালকের আসনে বসা দূরের কথা, যেমনটা বিভিন্ন লোক নরম সুরে বলে থাকেন, দেশটি গাড়িতেই উঠতে পারেনি। এমনকি হয় ইউক্রেন গাড়ির পেছনে দৌড়াচ্ছে অথবা সবচেয়ে বাজেভাবে বললে, গাড়িটা তার ওপর দিয়েই চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
মেরিনা হাইড: কলাম লেখক; দ্য গার্ডিয়ান থেকে ভাষান্তর
ইফতেখারুল ইসলাম
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
তদবিরে সাড়া না দেওয়ায় এসি ল্যান্ডকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ লিখে ফেসবুকে পোস্ট
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর বাগমারা বিল থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করায় চারজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান। এতে তাঁর ওপর ক্ষেপে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়েছেন নাগেশ্বরী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আশরাফুল ইসলাম ওরফে ইসরায়েল।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কারাদণ্ড পাওয়া বালু ব্যবসায়ীদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য এসি ল্যান্ডের কাছে তদবির করেন কাউন্সিলর আশরাফুল। এতে সাড়া না দিয়ে দণ্ড দেওয়ায় তিনি ক্ষেপে যান। পরে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘সাত কর্মদিবসের মধ্যে ফ্যাসিবাদের দোসর দুর্নীতিগ্রস্ত বদমেজাজি নাগেশ্বরী উপজেলার এসি ল্যান্ডকে প্রত্যাহার ও বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
এদিকে ওই পোস্টের স্ক্রিনশট ব্যবহার করে এসি ল্যান্ড মাহমুদুল হাসান তাঁর ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, ‘অবৈধ বালু তোলা ঠেকাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা যদি অপরাধ হয়, তবে আমাকে কালই প্রত্যাহার করুন। গরিবের জমি রক্ষায় পাশে দাঁড়ানো যদি দোষ হয়, আমাকেও দোষী মানুন। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বললে যদি আমি বদমেজাজি হই, তবে বিচার করুন।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দুটি অনেকের নজরে এসেছে। নাগেশ্বরীর একাধিক ব্যক্তি লিখেছেন, একজন দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে সাবেক এই কাউন্সিলর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন পোস্ট দিয়েছেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নাগেশ্বরী পৌর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাগমারা বিলে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে একটি চক্র। অভিযোগ পেয়ে ২০ এপ্রিল বেলা তিনটার দিকে অভিযান পরিচালনা করেন এসি ল্যান্ড মাহমুদুল হাসান। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বালু ব্যবসায়ী আশরাফুল আলম (৩৪), আলমগীর হোসেনকে (৩৭) ৩ দিন এবং আবদুল লতিফ (৩৮) ও মনিরুজ্জামানকে (৪০) বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন অপরাধে ৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। এ সময় বালু তোলার পাইপ ভেঙে দেওয়া হয়।
সাবেক কাউন্সিলর আশরাফুল ইসলাম ফেসবুকে পোস্ট করার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালে আমি ঘটনাস্থলে গেলে এসি ল্যান্ড আমাকে লাঞ্ছিত করেন। বিষয়টি ডিসি, ইউএনওকে মৌখিকভাবে অভিযোগ করি। ইউএনও মহোদয় বিষয়টি জানার পর আমার কাছে দুঃখপ্রকাশ করেন।’
এসি ল্যান্ড মাহমুদুল হাসান বলেন, সাবেক কাউন্সিলরকে লাঞ্ছিত করার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তিনি লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে যে অভিযোগটি করেছেন, তা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় ওই সাবেক কাউন্সিলর বিলের ওপার থেকে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের ছেড়ে দিতে বলেন। সেই সঙ্গে তিনি ড্রেজার না ভাঙার জন্য অনুরোধ করে বলেন, ‘আটক ব্যক্তিদের ছেড়ে দিন। ড্রেজার কিছুক্ষণ পর সরিয়ে নেওয়া হবে। সেগুলোর ক্ষতি করিয়েন না।’ কিন্তু উপস্থিত বিক্ষুব্ধ জনগণ ড্রেজার ও পাইপ ভেঙে ফেলেন। এতেই তিনি ক্ষুব্ধ হন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কায় তাঁরা চলে আসেন।