মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচার দাবি
Published: 16th, February 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং ফ্যাসিবাদী শাসনামলের নিপীড়ন-গুম-খুন, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনাসহ দায়ী সবার বিচার দাবি করেছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক। রোববার সন্ধ্যায় অনলাইনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনাকে লালনপালন না করে যেন বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে গড়ে উঠে গত বছরের সেপ্টেম্বরে আত্মপ্রকাশ করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এই আন্তর্জাতিক অধিকারভিত্তিক সংগঠন। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির কর্মীরা বলেন, উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করা যাচ্ছে, দেশে ও বিদেশে পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি এবং তাদের দোসররা নানা রকম ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। নানাভাবে উসকানির মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি অকার্যকর ও ব্যর্থ সরকার প্রতিষ্ঠিত আছে দেখাতে চাচ্ছে। এ ধরনের উসকানির বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে গত বুধবার জেনেভা থেকে প্রকাশিত জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান দলের প্রতিবেদনটি নিয়েও আলোচনা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী কথাসাহিত্যিক বর্ণালী সাহা এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের গ্র্যান্ড ভ্যালি স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আজফার হোসেন।
মূল বক্তব্যে বলা হয়, ওএইচসিএইচআরের প্রতিবেদন অনুযায়ী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দমনে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল। ওএইচসিএইচআরের তথ্যানুসন্ধান ও তদন্ত প্রতিবেদন পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রধান শেখ হাসিনাসহ দায়ী সবার বিচারের পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধগুলোর যথাযথ তদন্ত ও বিচারের কাজটি সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে শেষ করার দাবি জানানো হচ্ছে।
প্রশ্নোত্তর পর্বে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নেটওয়ার্কের সদস্য অনুপম সৈকত শান্ত বলেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বিক্ষোভের সময় অগ্রভাগে থাকা নারীরা নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। ওই নারীরা যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের হুমকির অভিযোগ পেয়েছে। এটাও মানবতাবিরোধী অপরাধ। পরবর্তী সময়ে যেসব হামলার ঘটনা ঘটেছে, বিদ্যমান আইনে সেসবেরও বিচার দাবি করি।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ না করতে সুপারিশ করা হয়েছে। তবে অনেক দেশে ফ্যাসিবাদী দলের বিচার হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অধিকারকর্মী প্রকৌশলী তন্ময় কর্মকার মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বন্দী বিনিময় চুক্তির আওতায় দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালক অধিকারকর্মী চিকিৎসক নাজমুল আহমেদ বলেন, এ ক্ষেত্রে সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানো উচিত। যেসব দেশে ওই ব্যক্তিরা পালিয়ে অবস্থান করছেন, সেসব দেশের গণতান্ত্রিক শক্তির জনগণ যেন নিজ নিজ দেশের সরকারের ওপর চাপ তৈরি করেন।
আয়ারল্যান্ডপ্রবাসী নৃবিজ্ঞানী ও লেখক নাসরিন খন্দকার বলেন, স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের ক্ষেত্রে জনগণের কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না। জনগণকে সহিংসভাবে দমন করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক অধিকারের পূর্বশর্ত হলো সরকারের সমালোচনা করতে পারা।
অধ্যাপক আজফার হোসেন বলেন, অভ্যুত্থান এখনো শেষ হয়নি। ফ্যাসিস্ট অবস্থা ও সংস্কৃতির এখনো অবসান হয়নি। এগুলো এখনো চ্যালেঞ্জ। তিনি সরকারকে গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের সহায়তা দেওয়া ও জিনিসপত্রের দাম কমানোর ওপর আরও জোর দিতে বলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক ম নবত ব র ধ সরক র র অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এতো বড় হার আগে দেখেনি ব্রাজিল
ম্যাচের আগে গালকাটা কথা বলেছিলেন ব্রাজিলের বার্সেলোনা তারকা রাফিনিয়া, ‘আমরা তাদের মাঠে হারাব, মাঠের বাইরেও হারাব।’ সঙ্গে তির্যক ভাষায় গালিও দিয়েছিলেন।
অথচ ম্যাচে আর্জেন্টিনার মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে পাত্তাই পায়নি পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। পুরো ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করে আলবিসেলেস্তেরা ৪-১ গোলের জয় তুলে নিয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের প্রথম দল হিসেবে ২০২৬ বিশ্বকাপে পা রেখেছে।
অন্য দিকে ব্রাজিলের সঙ্গী হয়েছে লজ্জা। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ইতিহাসে প্রথমবার ব্রাজিল ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে হারের স্বাদ পেয়েছে। এর আগে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এতো বড় হার আগে দেখেনি সেলেসাওরা।
ম্যাচে আর্জেন্টিনার হয়ে ৪ মিনিটে গোল করেন হুলিয়ান আলভারেজ। ১২ মিনিটে ব্যবধান ২-০ করেন এনজো ফার্নান্দেজ। এরপর ম্যাচে গোলপোস্টে একমাত্র শট নিয়ে ২৬ মিনিটে এক গোল শোধ করে ব্রাজিল। ৩৭ মিনিটে ম্যাক অ্যালিস্টার আর্জেন্টিনার পক্ষে তৃতীয় গোল করেন। জুলিয়ানো সিমিওনে ৭১ মিনিটে ব্রাজিলের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় নিশ্চিত করেন।