‘জুলাইয়ের নারীরা’ কোথায় হারালেন, সমাবেশে প্রশ্ন
Published: 16th, February 2025 GMT
জুলাই আন্দোলনের নারীরা কোথায় হারিয়ে গেলেন—এই প্রশ্ন উঠেছে ‘জুলাইয়ের নারীরা’ ব্যানারে আয়োজিত নারী সমাবেশ থেকে। রোববার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এই সমাবেশে বলা হয়, যেসব নারী আগে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন, তাঁদের অনেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছেন। জুলাই–আগস্টের আন্দোলনে অংশ নেওয়া নারীদের এখন নানাভাবে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হতে হচ্ছে—এমন অভিযোগও করেছেন অনেকে।
‘গণহত্যাকারী হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে’ আয়োজিত এই নারী সমাবেশ হয় ‘জুলাইয়ের নারীরা’ ব্যানারে। যদিও সমাবেশের নেপথ্যে ছিল জাতীয় নাগরিক কমিটি।
জুলাই অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য নুসরাত তাবাসসুম। সমাবেশে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের পর সার্বিকভাবে নারীদের অংশগ্রহণ কমে গেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, জুলাই আন্দোলনের নারীরা কোথায় হারিয়ে গেলেন?
নুসরাত বলেন, নারীদের রাজনীতিতে নিয়ে আসতে হলে সবার আগে শেখ হাসিনার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। সত্যিকার অর্থে সামনে নিয়ে আসতে হলে নারীদের অংশগ্রহণের পাশাপাশি নীতিনির্ধারণে নারীদের অংশীদারত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানানোর পাশাপাশি নুসরাত সমাবেশে আরও বলেন, আগে বিচার ও সংস্কার হতে হবে, তারপর নির্বাচন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির আরেক সদস্য সিনথিয়া জাহিন আয়েশা সমাবেশে বলেন, গণহত্যাকারী ও তাদের দোসরদের বিচারকার্য নিয়ে গড়িমসি ও ঢিলেমি চলছে। গ্রেপ্তার হওয়া অপরাধীদের ছেড়ে দিতে গোষ্ঠী বা ব্যক্তিস্বার্থে বিভিন্ন মহল সুপারিশ করছে এমন অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, এটি ‘দেশদ্রোহিতা’।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য নুসরাত তাবাসসুম নারী সমাবেশে বক্তব্য দেন। ঢাকা, ১৬ ফেব্রুয়ারি.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ঢাকায় বিক্ষোভ
ফিলিস্তিনের গাজায় পাশবিক হামলা ও নিরীহ গাজাবাসীকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে আল-কুদস কমিটি বাংলাদেশের উদ্যোগে শুক্রবার (২৮ মার্চ) বাদ জুমআ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেট থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে মিছিলটি প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিলে বিক্ষোভকারীরা ইন্তিফাদা ইন্তিফাদা, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ, জায়োনবাদ নিপাত যাক, ফিলিস্তিন মুক্তিপাক ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
মিছিল শেষে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি হয়। মানববন্ধনে বক্তারা ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
বক্তারা বলেন, আজ সারা বিশ্বের মুসলিমরা যেখানে রমজান, ইফতার, সাহরি করছে সেখানে ফিলিস্তিনের শিশু-নারীরা লাশের মিছিলে শরিক হচ্ছে। বিনা নোটিশে ইসরায়েল আমাদের মুসলিম ভাই-বোনদের ওপর হামলা করছে। তাদেরকে নির্বিচারে হত্যা করে যাচ্ছে। বক্তারা ইহুদীবাদী সেনাদের এই বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং তাদের এই নৃশংস অপরাধযজ্ঞ বন্ধ করতে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
বক্তারা বলেন, আজ রমজানের শেষ শুক্রবার, আন্তর্জাতিক আল কুদস দিবস। মুসলমানদের প্রথম কেবলা পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস দখলমুক্ত করার আন্দোলনে বিশ্ব মানবতাকে উজ্জীবিত করার প্রতীকী দিন এটি।
বিশ্বজুড়ে দিনটি এমন এক সময় পালিত হতে যাচ্ছে যখন ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের পাশবিক হামলা অব্যাহত রয়েছে।
সম্প্রতি যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করে ইসরাইলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে পুনরায় সামরিক আগ্রাসন শুরু করে। নতুন করে শুরু হওয়া এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৭৩০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ এবং ১,৩৬৭ জন আহত হয়েছেন। এর ফলে ৭ অক্টোবর, ২০২৩ থেকে গাজায় শহীদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০,০৮২ জনে এবং আহতের সংখ্যা ১,১৩,৪০৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে ইসরাইলের আগ্রাসন পুনরায় শুরু হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠেছে।
বক্তারা বলেন, ইরানে ইসলামি বিপ্লব বিজয়ী হওয়ার পর ইমাম খোমেনি (র) ফিলিস্তিন ইস্যুকে কেন্দ্র করে রমজান মাসের শেষ শুক্রবার আন্তর্জাতিক আল কুদস দিবস পালনের আহ্বান জানান। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে তিনি দখলদার ইহুদীবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে সংগ্রামের পতাকা উড্ডীন করেন এবং কুদস শরীফ ও ফিলিস্তিনের ইসলামি ও পবিত্র ভূমির মুক্তির বিস্মৃত লক্ষ্য ও আদর্শকে পুনরুজ্জীবিত করেন। ইমাম খোমেইনী (র.) এর পক্ষ থেকে রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে আল কুদস দিবস নামকরণ ছিল একটি বৃহৎ বুদ্ধিবৃক্তিক ও গঠনমূলক রাজনৈতিক উদ্যোগ যা ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক মুক্তি সংগ্রামের গতিপথকে পাল্টে দেয় এবং এই পথটিকে আরো আলোকিত ও মসৃণ করে তোলে।
বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন আল কুদস কমিটি বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মোস্তফা তারিকুল হাসান।
ঢাকা/হাসান/এসবি