পারস্পরিক উদ্বেগের কথা একে অপরকে জানাল ঢাকা-দিল্লি
Published: 16th, February 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় দুই দেশের পারস্পরিক উদ্বেগ এবং স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ওমানের মাস্কটে ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্সের সাইডলাইনে এ সাক্ষাৎ হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
উভয় পক্ষ পারস্পরিক উদ্বেগ ও স্বার্থ সম্পর্কিত বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা করেন। এ সময় গঙ্গা পানি চুক্তি নবায়নের জন্য আলোচনা শুরু করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। এ ছাড়া তিনি সার্ক স্থায়ী কমিটির বৈঠক আয়োজনের গুরুত্বও তুলে ধরেন এবং এই বিষয়ে ভারত সরকারকে বিবেচনার অনুরোধ করেন।
৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দ্বিতীয় দফায় তৌহিদ-জয়শঙ্করের সাক্ষাৎ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অষ্টম ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্সের সাইডলাইনে উভয়পক্ষ পারস্পরিক উদ্বেগ এবং স্বার্থের বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। তারা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে দুই প্রতিবেশী যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হচ্ছে, তা স্বীকার করেছে এবং সেগুলো মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেছে।
সোমবার দেশের সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন শুরু হচ্ছে। চার দিনব্যাপী এ সম্মেলনে অংশ নেবে বিজিবি মহাপরিচালকের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো জানায়, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.
এ ছাড়া তিনি সমুদ্রযাত্রীদের জন্য ভিসা এবং অন্যান্য প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সহজ করার আহ্বান জানান। এ ছাড়া তাদের জন্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার কথা বলেন। কারণ মেরিটাইম সরবরাহ শৃঙ্খল বজায় রাখতে তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সার্ক, বিমসটেক এবং আইওআরএ-সহ ত্রিশটিরও বেশি দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
৮ম আইওসি-এর পাশাপাশি, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রুনাইয়ের দ্বিতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী, ভিয়েতনামের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রী এবং তানজানিয়ার উপপররাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
১৭ ফেব্রুয়ারি পররাষ্ট্র উপদেষ্টার ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করারও কথা রয়েছে।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পরর ষ ট র উপদ ষ ট র পরর ষ ট র র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রোহিঙ্গা শিবিরে পানির সংকট তীব্র: এমএসএফ
কক্সবাজারে টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন রোহিঙ্গারা জনপ্রতি ১০ লিটার করে পানি পাচ্ছেন। এই পরিমাণ পানি জীবনধারণের প্রয়োজনের অর্ধেক। সীমান্তবিহীন চিকিৎসক দল বলেছে, পানি সংকটের কারণে রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা হুমকির মুখে পড়েছে।
আজ সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সীমান্তবিহীন চিকিৎসক দল বা মেডিসিন্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স (এমএসএফ) টেকনাফে চলমান এই সংকটের কথা বলেছে। পাশাপাশি এমএসএফ জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এসএমএফ বলেছে, উদ্বেগজনক হারে সংরক্ষণব্যবস্থা কমে আসায় পানির সংকট আরও কঠিন হয়েছে। টেকনাফ মূলত মজুদকৃত পানির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু এই বছর আশঙ্কাজনক হারে মজুদকৃত পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশে এমএসএফ-এর মিশন প্রধান আন্তোনিও কারাডোনা বলেন, ‘পরিস্থিতি সত্যিই উদ্বেগজনক। টেকনাফে প্রতিদিন জনপ্রতি ১০ লিটার পানি পাওয়া যায়, যা একজন মানুষের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়িয়ে জীবনযাপনের জন্য পর্যাপ্ত নয়। ক্যাম্পজুড়ে ছড়িয়ে পড়া নানা রোগের ক্রমবর্ধমান প্রাদুর্ভাব থেকেই এই সংকটের তীব্রতা স্পষ্ট।’
নূর আলম নামের একজন রোহিঙ্গা তাঁর কষ্টের কথা এমএসএফকে শুনিয়েছেন। নূর আলম বলেন, ‘আমরা বছরের পর বছর ধরে পানিসংকট তীব্র হতে দেখছি, এখানে সাহায্য–সহযোগিতাও অনেক সীমিত। অনেককেই বাধ্য হয়ে অনেক দূরে গিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে পানি আনতে হয়, যা অনেক বেশি সময়সাপেক্ষও।’
এমএসএফ বলেছে, জরুরি সহায়তা প্রদান কার্যক্রম চলমান থাকা, প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহব্যবস্থা আরও উন্নত ও দ্রুত করার সুযোগ আছে। কলেরার মতো পানিবাহিত রোগসহ নানাধরনের চর্ম রোগের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি হ্রাস এবং ক্রমবর্ধমান অপুষ্টিজনিত সমস্যা সমাধানে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রতিরোধের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
এমএসএফ একটি বোরহোল, একটি পানি সংরক্ষণ ও সরবরাহ সেবা শুরু করেছে এবং ক্যাম্পে ট্রাকের মাধ্যমে পানি সরবরাহ সেবা বৃদ্ধির চেষ্টা করছে। এই জরুরি পদক্ষেপগুলো যদিও এ সংকটের সাময়িক সমাধান দেয়, তবে তা দীর্ঘস্থায়ী ও পর্যাপ্ত নয়।
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ ও দাতাসংস্থাগুলোকে জরুরি ভিত্তিতে টেকসই পানি সরবরাহে বিনিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এমএসএফ। পাশাপাশি দায়িত্বশীল অংশীদারদের কাছে জবাবদিহি ও সক্রিয় অংশগ্রহণের কথা বলেছে তারা।