আওয়ামীপন্থিকে উপ-উপাচার্য হিসেবে চান না যবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা
Published: 16th, February 2025 GMT
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীলীগপন্থি অধ্যাপক এএফএম সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে এবার শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। এতে তারা যবিপ্রবির উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ৩টায় যশোরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক রফিকুল হাসানের কাছে এ স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন শিক্ষার্থীরা। স্মারকলিপি প্রদান শেষে প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনও করেন তারা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট আমলে রাতের ভোটের কারিগরের স্বামী ড.
এ কথা ভুলে গেলে চলবে না, যশোরে ফ্যাসিবাদী আন্দোলন যবিপ্রবি থেকে শুরু হয়েছে। আর আমাদেরই ক্যাম্পাসে কি না স্বৈরাচারের দোসরকে উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছে। যবিপ্রবি কি ডাস্টবিন? এ ক্যাম্পাস দেশের টপ র্যাংকিং স্থান নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়। স্বৈরাচারের দোসর নিয়োগের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে কেউ অস্থিতিশীল করে তুললে তাকেও ফ্যাসিবাদের মতো তাড়িয়ে দেওয়া হবে।
তারা আরো বলেন, এ স্বৈরাচারকে নিয়োগ দেওয়া মানে ২ হাজার শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা। যারা এই আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পুর্ণবাসন করতে চায়, তারা যেই হোক না কেন, শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে তাদের রুখে দিবে। দ্রুতই ড. সাইফুল ইসলামের নিয়োগ বাতিল করুন নয়তো সুষ্ঠু আন্দোলনকে উচ্ছৃঙ্খল করে তুললে এর দায়ভার সম্পূর্ণ প্রশাসনকে নিতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পিইএসএস বিভাগের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান ইমরান, মো. ইসমাইল, ইএসটি বিভাগের মোহাম্মদ উসামাহ, হাবিব আহমেদ শান, কেমিকৌশল বিভাগের মেহেদী হাসান সাব্বির, গণিত বিভাগের সুমন আলি প্রমুখ।
শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর লিখিত স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জেনেছি যে, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের নেতা ও ক্রপ বোটানি অ্যান্ড টি প্রোডাকশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক এএফএম সাইফুল ইসলামকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পায়তারা চলছে। আওয়ামী শাসন আমলে ২০১২ সালে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসর হিসেবে পরিচিত সচিব ড. নাজমানারা খানুমের লবিংয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপান ড. সাইফুল।
আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের প্যানেল থেকে তিনি দুইবার সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন এই অধ্যাপক। এছাড়া ড. সাইফুল ইসলামের স্ত্রী ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে রাতের ভোটের মূল কারিগর ছিলেন। যার পুরস্কার স্বরূপ পরবর্তীতে তাকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
চাকরি শেষে আবারো পুরস্কার হিসেবে শেখ হাসিনা তাকে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সদস্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। জুলাই বিপ্লবে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেই গত বছরের ৮ অক্টোবর ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসেবে ড. নাজমানারা খানুমকে পিএসসির সদস্য থেকে বরখাস্ত করে। সুতরাং এমন একজন স্বৈরাচার ও আওয়ামীপন্থিকে আমরা যবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা উপ-উপাচার্য হিসেবে চায় না।
অধ্যাপক এএফএম সাইফুল ইসলামকে যবিপ্রবির উপ-উপাচার্য বানানোর চেষ্টার খবর জানার পর থেকেই শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করছেন।
ঢাকা/ইমদাদুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ উপ চ র য হ স ব স ম রকল প আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধীকে লাথি মারার অভিযোগ, অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন
টাঙ্গাইলের সখীপুরে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মানসিক প্রতিবন্ধীকে লাথি মারার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ওই ঘটনার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ওই চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন করেন তাঁরা।
অভিযুক্ত ওই চেয়ারম্যানের নাম সরকার নূরে আলম (মুক্তা)। তিনি উপজেলার বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। তিনি গত ৪ আগস্ট টাঙ্গাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর হামলায় এক শিক্ষার্থী হত্যার মামলার আসামি। ভুক্তভোগী মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির নাম মোতালেব মিয়া (৫০)। তিনি উপজেলার চতলবাইদ মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
এর আগে গত বছরের ২ মার্চ প্রতিবেশী এক নারীকে মারধর করেন চেয়ারম্যান সরকার নূরে আলম। ওই ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছিল। ওই ঘটনায় করা মামলায় তিনি মাসখানেক জেলহাজতে ছিলেন।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কার্যক্রম চলছিল। বেলা ১১টার দিকে ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চতলবাইদ মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোতালেব মিয়া একটি লাঠি হাতে পরিষদ চত্বরে যান। তিনি মোশারফ নামের এক ব্যক্তিকে পেটাবেন বলে খোঁজ করছিলেন। এ সময় দায়িত্বরত গ্রাম পুলিশ মোতালেবকে সরিয়ে দেন। পরে বেলা দুইটার দিকে মোতালেব মিয়া একইভাবে পরিষদ চত্বরে গিয়ে বকাঝকা করতে থাকেন। চেয়ারম্যান নূরে আলম তাঁকে পরিষদ চত্বর ত্যাগ করতে বলেন। তখন চেয়ারম্যানকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন মোতালেব। এ সময় চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ হয়ে মোতালেবকে লাথি মারেন। গতকাল সোমবার দুপুরে চেয়ারম্যানের লাথি মারার পাঁচ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী গ্রাম পুলিশ প্রহর লাল চন্দ্র প্রথম আলোকে বলেন, ওই লোককে পরিষদ চত্বর ত্যাগ করতে বললে তিনি হঠাৎ দৌড়ে গিয়ে চেয়ারম্যানকে লাথি দেন। এ ঘটনায় চেয়ারম্যানও ক্ষিপ্ত হয়ে লাথি মেরেছেন। লোকটি মানসিক প্রতিবন্ধী। তিনি নিজ এলাকায়ও অনেকের সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন।
ওই ঘটনার প্রতিবাদে পরিষদ চত্বরে চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী। এই কর্মসূচিতে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর বিশ্বাস বলেন, ‘এক বছর আগে একজন নারীকে পিটিয়েছেন। এবার একজন বয়স্ক প্রতিবন্ধীকে পিটিয়েছেন। টাঙ্গাইল সদর থানায় চেয়ারম্যানের নামে খুনের মামলাও রয়েছে। এ ধরনের নষ্ট চেয়ারম্যান আমাদের দরকার নেই। আমরা তাঁর অপসারণ চাই।’
বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরকার নূরে আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘লোকটি যে মানসিক ভারসাম্যহীন, তা আমি আগে জানতাম না। জানলে আমি কোনোভাবেই এমন আচরণ করতাম না। এ বিষয়ে আমি খুবই লজ্জিত।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল রনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘চেয়ারম্যানের ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি আমি দেখেছি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। দোষী প্রমাণিত হলে এরপর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’