বোমা তৈরি সরবরাহ করতেন দুজন, গ্রেপ্তার হলেন ৬৯টি বোমাসহ
Published: 16th, February 2025 GMT
কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলায় একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৬৯টি হাতবোমা এবং বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ ২ জনকে আটক করেছে বিজিবি। থানায় সোপর্দ করে অস্ত্র আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এরা হলেন চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর থানার নবুরকান্দি গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মো.
আজ রোববার ভোরে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ফুলের ডেইল এলাকার একটি বাড়িতে এ অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান।
লে. কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, গ্রেপ্তার দুজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দীর্ঘদিন ধরে একটি সংঘবদ্ধচক্র চুক্তিভিত্তিক বোমা তৈরি করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি ও সরবরাহ করে আসছে বলে তথ্য দিয়েছেন।
লে. কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে হ্নীলার ফুলের ডেইল নামক এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে ভোরে অভিযান শুরু করা হয়। প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে ব্যাপক তল্লাশি চালিয়ে একটি জরাজীর্ণ ঘরের ভেতর থেকে ৬৯টি হাতবোমা, বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক, সরঞ্জামসহ দুজনকে আটক করতে সক্ষম হয়। এ সময় বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির আঙিনায় অবস্থানরত অপর দুজন ব্যক্তি দ্রুত পালিয়ে যান।
লে. কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, জব্দ করা বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। দুজনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রোহিঙ্গা শিবিরে পানির সংকট তীব্র: এমএসএফ
কক্সবাজারে টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন রোহিঙ্গারা জনপ্রতি ১০ লিটার করে পানি পাচ্ছেন। এই পরিমাণ পানি জীবনধারণের প্রয়োজনের অর্ধেক। সীমান্তবিহীন চিকিৎসক দল বলেছে, পানি সংকটের কারণে রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা হুমকির মুখে পড়েছে।
আজ সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সীমান্তবিহীন চিকিৎসক দল বা মেডিসিন্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স (এমএসএফ) টেকনাফে চলমান এই সংকটের কথা বলেছে। পাশাপাশি এমএসএফ জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এসএমএফ বলেছে, উদ্বেগজনক হারে সংরক্ষণব্যবস্থা কমে আসায় পানির সংকট আরও কঠিন হয়েছে। টেকনাফ মূলত মজুদকৃত পানির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু এই বছর আশঙ্কাজনক হারে মজুদকৃত পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশে এমএসএফ-এর মিশন প্রধান আন্তোনিও কারাডোনা বলেন, ‘পরিস্থিতি সত্যিই উদ্বেগজনক। টেকনাফে প্রতিদিন জনপ্রতি ১০ লিটার পানি পাওয়া যায়, যা একজন মানুষের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়িয়ে জীবনযাপনের জন্য পর্যাপ্ত নয়। ক্যাম্পজুড়ে ছড়িয়ে পড়া নানা রোগের ক্রমবর্ধমান প্রাদুর্ভাব থেকেই এই সংকটের তীব্রতা স্পষ্ট।’
নূর আলম নামের একজন রোহিঙ্গা তাঁর কষ্টের কথা এমএসএফকে শুনিয়েছেন। নূর আলম বলেন, ‘আমরা বছরের পর বছর ধরে পানিসংকট তীব্র হতে দেখছি, এখানে সাহায্য–সহযোগিতাও অনেক সীমিত। অনেককেই বাধ্য হয়ে অনেক দূরে গিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে পানি আনতে হয়, যা অনেক বেশি সময়সাপেক্ষও।’
এমএসএফ বলেছে, জরুরি সহায়তা প্রদান কার্যক্রম চলমান থাকা, প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহব্যবস্থা আরও উন্নত ও দ্রুত করার সুযোগ আছে। কলেরার মতো পানিবাহিত রোগসহ নানাধরনের চর্ম রোগের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি হ্রাস এবং ক্রমবর্ধমান অপুষ্টিজনিত সমস্যা সমাধানে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রতিরোধের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
এমএসএফ একটি বোরহোল, একটি পানি সংরক্ষণ ও সরবরাহ সেবা শুরু করেছে এবং ক্যাম্পে ট্রাকের মাধ্যমে পানি সরবরাহ সেবা বৃদ্ধির চেষ্টা করছে। এই জরুরি পদক্ষেপগুলো যদিও এ সংকটের সাময়িক সমাধান দেয়, তবে তা দীর্ঘস্থায়ী ও পর্যাপ্ত নয়।
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ ও দাতাসংস্থাগুলোকে জরুরি ভিত্তিতে টেকসই পানি সরবরাহে বিনিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এমএসএফ। পাশাপাশি দায়িত্বশীল অংশীদারদের কাছে জবাবদিহি ও সক্রিয় অংশগ্রহণের কথা বলেছে তারা।