দলবদ্ধ ধর্ষণের ভিডিও ভাইরাল, মুচলেকা নিয়ে আটক ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়ল পুলিশ
Published: 16th, February 2025 GMT
ভোলার চরফ্যাসনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক বছর আগে এক তরুণীকে ধর্ষণ করে চার তরুণ। সে সময় ধারণ করা ধর্ষণের ভিডিও শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় তাদেরই একজন। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে পুলিশ তাকে আটক করে। কিন্তু অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, ঢালচর ইউনিয়নের নিবির প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই তরুণীকে গ্রামের একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যায়। এ সময় একই এলাকার শরীফ, মনির ও আকতার পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের আটক করার নাটক করে। তাদের কথা না শুনলে তরুণীকে গ্রেপ্তার করা হবে এমন ভয় দেখিয়ে চারজন মিলে ধর্ষণ করে। শনিবার ধর্ষক শরীফের ফেসবুক আইডি থেকে সেই ভিডিও ছড়ানো হয়। এই ঘটনায় তোলপাড় শুরু হলে ঢালচর তদন্তকেন্দ্রের পুলিশ শরীফকে আটক করে। পড়ে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত চার তরুণের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। শরীফকে আটকের পর তারা সবাই এলাকা ছেড়েছে। এ সময় কথা হয় শরীফের বাবা নূরে আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, একটি ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করার কারণে শরীফকে আটক করে পুলিশ। আইডি ঘেঁটে ভিডিওটি না পেয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, অভিযুক্ত শরীফ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য এবং তার বাবা নূরে আলম ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সদস্য। নিবিরের বাবা এলাহী মেম্বার ওই ইউনিয়ন যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি। সে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। মনির ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক। তার বাবা গনি মাঝি একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য। আকতার ছাত্রলীগের সদস্য। সে ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিনের ছেলে। দলীয় প্রভাবের কারণে ধর্ষণে জড়িত থাকার প্রমাণের পরও তাদের গ্রেপ্তারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো শরীফকে ঢালচর ফাঁড়ির পুলিশ মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছে। এতে অপরাধ প্রবণতা বাড়বে।
ঢালচর ফাঁড়ি ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন জানান, আমি ভোলা সদরে আছি। তাই কী হয়েছে বলতে পারছি না। ফাঁড়িতে এসআই সোহেল রয়েছেন। তাঁর কাছ থেকে জেনে পরে জানাতে পারব।
ঢালচর ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো.
দক্ষিণ আইচা থানার ওসি এরশাদুল হক ভূইয়া জানান, ভিডিওটি এক বছর আগের জানতে পেরেছি। ওই তরুণীর কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। আটক তরুণের ফেসবুকেও ধর্ষণের ভিডিওটি পাওয়া যায়নি। তাই মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের অপরাধে কাউকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়া যায় কিনা, এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে এড়িয়ে যান পুলিশের এ কর্মকর্তা। একপর্যায়ে বলেন সহকারী পুলিশ সুপারের (চরফ্যাসন সার্কেল) সঙ্গে কথা বলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী হাসানের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হয়। তিনি নদীতে স্পিডবোটে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তায় দায়িত্বে ছিলেন। কোলাহলের কারণে তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তাই তাঁর ভাষ্য জানা যায়নি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য বল গ ল গ র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার সাবেক প্রেমিক
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীতে বর্তমান প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়া মেটানোর কথা বলে বাসায় ডেকে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাবেক প্রেমিক নয়ন মোল্লা (২০) নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার দিবাগত রাতে টঙ্গিবাড়ী থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা। পরে উপজেলার আব্দুল্লাপুরে নিজ বাড়ি থেকে নয়নকে গ্রেপ্তার করা হয়। নয়ন আব্দুল্লাপুর এলাকার মৃত সায়েন মোল্লার ছেলে।
মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার নয়ন ভুক্তভোগী তরুণীর সাবেক প্রেমিক। নয়নের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হলে সিয়াম নামের আরেক তরুণের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান ওই তরুণী। সম্প্রতি সিয়ামের সঙ্গে ঝগড়া হয়। সেই ঝগড়া মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলে ৮ এপ্রিল তরুণীকে বাসায় ডাকেন নয়ন। বাড়িতে তখন কেউ না থাকায় নয়ন ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন। এ সময় ঘটনাস্থলে আগে থেকে লুকিয়ে ছিলেন নয়নের সহযোগী মো. জীবন শেখ (২০), আপন বেপারীর (১৯), আরমান (১৮), মিরাজ (১৯)। তার লুকিয়ে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন। পরে সে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে নয়নের সহযোগীরাও তাকে ধর্ষণ করেন। দুই দিন নয়ন ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে ঘটনা জানাজানি হয়। পরে রাতেই ভুক্তভোগী বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, এটি পরিকল্পিত ধর্ষণের ঘটনা। অভিযোগের পর রাতেই একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ সে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। মূলত অন্য ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ানোয় তরুণীর উপর ক্ষুব্ধ ছিল নয়ন।