ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে অচলাবস্থা, বিক্ষোভ-সমাবেশ, কক্ষে তালা
Published: 16th, February 2025 GMT
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রি কলেজে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। আজ রোববার কলেজের শহীদ মিনার চত্বরে কলেজটির শিক্ষক, কর্মচারী-শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
আন্দোলনকারীদের ভাষ্য, অধ্যক্ষের অবসরের পর নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাজনীন আরা খাতুনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পাওয়ার কথা। কিন্তু তাঁকে দায়িত্ব না দিয়ে পরিচালনা পর্ষদ (গভর্নিং বডি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক শামীমা সুলতানাকে দায়িত্ব দিয়েছে বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন। নীতিমালা লঙ্ঘন করে এমনটি করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে গত বুধবার অধ্যক্ষের কক্ষ, শিক্ষক মিলনায়তন ও শ্রেণিকক্ষগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে নীতিমালা মেনে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব হস্তান্তরের আহ্বান জানানো হয়েছে। একই দাবিতে গত বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
ডিসি সম্মেলনে অংশ নিতে বর্তমানে জেলা প্রশাসক মো.
আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পৌর ডিগ্রি কলেজ চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, অধ্যক্ষের কক্ষসহ কলেজের প্রতিটি কক্ষে তালা ঝোলানো। কয়েকজন শিক্ষক তালাবদ্ধ ভবনগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনায় ব্যস্ত। একজন শিক্ষককে দেখা গেল, মাঠের মধ্যেই কংক্রিটের বেঞ্চের ওপর বসে সকালের নাশতা সেরে নিচ্ছেন। কলেজ চত্বরের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অফিস সহকারী আরাফাত আলম মল্লিক ও তানভীর হোসেন একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তির ফরম বিতরণ করছেন।
তানভীর হোসেন বলেন, উপবৃত্তির ফরম পূরণ শেষে ১৭ ফেব্রুয়ারি জমা দেওয়ার শেষ দিন। বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় নিয়ে খোলা মাঠেই ফরম বিতরণ করা হচ্ছে। তা না হলে উপবৃত্তি থেকে অনেকেই বঞ্চিত থেকে যাবেন। একাদশ শ্রেণির ছাত্রী মোহনা বিশ্বাস চৈতি জানায়, পাঠদান বন্ধ আছে জানার পরও তারা কেবল উপবৃত্তির ফরম পূরণ করতে কলেজে এসেছে। সার্বিক বিবেচনায় দ্রুততম সময়ে এ সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার।
বাংলা বিভাগের শিক্ষক আয়েশা আক্তার বলেন, সদ্য বিদায়ী অধ্যক্ষ মো. আবু রাশেদের শেষ কর্মদিবস ছিল ১২ ফেব্রুয়ারি। এদিন তিনি চাকরি থেকে অবসরজনিত ছুটিতে (পিআরএল) যান। অবসর নেওয়ার মূল নিয়ম হচ্ছে, কমপক্ষে তিন মাস আগে গভর্নিং বডির সভা ডেকে একটি রেজল্যুশন করতে হয় এবং ভারপ্রাপ্ত হিসেবে যাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, তাঁকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে যেতে হয়। কিন্তু বিদায়ী অধ্যক্ষ তা করেননি।
আয়েশা আক্তার অভিযোগ করেন, ‘আমি যত দূর জেনেছি, গভর্নিং বডির সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক স্যার বারবার মিটিং ডাকার কথা বললেও তিনি (অধ্যক্ষ মো. আবু রাশেদ) ডাকেননি। উনি যাওয়ার আগের দিনও দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি এবং যেদিন চলে গেছেন, ডিসি অফিসে দেখা করে চলে গেছেন। আমরা যাঁরা শিক্ষক আছি, তাঁরা ওনাকে বিদায় দেওয়ার জন্য ফুল-মিষ্টি নিয়ে অপেক্ষা করেছি, স্যার আসেননি, চলে গেছেন। উনি জানিয়েছেন, শিক্ষকদের বিদায় সংবর্ধনা ওনার প্রয়োজন নেই। কেন, কী উদ্দেশ্যে এমন করেছেন, আমি বলতে পারব না। বিদায়ের আগে অধ্যক্ষের দায়িত্ব হস্তান্তর করলে এমন হতো না।’
এদিকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ বেলা ১১টা থেকে শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা কলেজ চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহীদ মিনারের সামনে সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশে সহকারী অধ্যাপক নাজনীন আরা খাতুন নিজেকে বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার দাবি করে বলেন, ‘গভর্নিং বডি নীতিমালা না মেনেই তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে থাকা জ্যেষ্ঠ প্রভাষক শামীমা সুলতানাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিচ্ছেন। যা মেনে নেওয়া যায় না।’
নাজনীন আরার বক্তব্যকে সমর্থন করে ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক কুতুব উদ্দিন বলেন, ‘১১ ফেব্রুয়ারি গভর্নিং বডির সভায় নীতিমালা না মেনে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যার প্রতিবাদে আমরা এর আগে মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি, জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেছি এবং আজ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হচ্ছে।’
কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র আকাশ হোসেন বলে, ‘দুই ম্যাডামকেই আমরা শ্রদ্ধা করি। তবে নীতিমালা অনুযায়ী, জ্যেষ্ঠতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ হোক, সেটাই শিক্ষার্থীদের আশা।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘দুইবার বিশ্বকাপ জিতলেই জাতীয় দল থেকে অবসর নেব’
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ জানালেন, যদি তার দল টানা দুইবার বিশ্বকাপ জেতে, তবে তিনি জাতীয় দল থেকে অবসর নেবেন।
সম্প্রতি বিপ্লে'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্টিনেজ তার ক্যারিয়ারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, বিশেষ করে ২০২২ বিশ্বকাপ ফাইনালে কুলো মুয়ানির শট রুখে দেওয়ার ঘটনা নিয়ে কথা বলেন। একইসঙ্গে তিনি ভবিষ্যতে নিজের উন্নতি এবং জাতীয় দলের সম্ভাবনা নিয়েও কথা বলেন।
মার্টিনেজ বলেন, ‘যদি আমরা টানা দুইটি বিশ্বকাপ জিতি, তাহলে আমি জাতীয় দল থেকে অবসর নেব। তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য জায়গা তৈরি করতে হবে।’
আর্জেন্টিনা যদি টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জেতে, তবে তার অনুভূতি কেমন হবে, সে বিষয়েও কথা বলেছেন মার্টিনেজ। তিনি বলেন, ‘এ রকম ঘটনা আর ঘটবে না। আমরা সবাই আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জিততে দেখেছি, যা আমি জন্মের পর কখনো দেখিনি। এখন সাত বছর বয়সী একটি শিশুও জানে বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ কেমন। তবে দ্বিতীয়বার জিতলে মানুষ খুশি হবে, উদযাপন করবে, কিন্তু আগের মতো আবেগপ্রবণ হবে না।’
বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে কী করেছিলেন, সে বিষয়েও মজার তথ্য দেন মার্টিনেজ। তিনি বলেন, ‘ফ্রান্সের বিপক্ষে বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে আমি আমার বন্ধুদের সঙ্গে 'কল অফ ডিউটি' খেলছিলাম। তখন বিকেলের নাস্তার পর থেকে ম্যাচের ট্যাকটিক্যাল আলোচনা শুরুর আগ পর্যন্ত আমি ভিডিও গেমে ব্যস্ত ছিলাম।’
২০২২ সালে কাতারে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে গোল্ডেন গ্লাভস জিতেছিলেন মার্টিনেজ। ফাইনালে টাইব্রেকারে ফ্রান্সের দুইটি শট ঠেকিয়ে আর্জেন্টিনাকে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জেতাতে বড় ভূমিকা রাখেন তিনি। এখন তার লক্ষ্য ২০২৬ বিশ্বকাপ, যেখানে আর্জেন্টিনা যদি শিরোপা ধরে রাখতে পারে, তবে জাতীয় দল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়ে রাখলেন এই অভিজ্ঞ গোলরক্ষক।