রাবিতে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ২০
Published: 16th, February 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট খেলা নিয়ে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে এক শিক্ষকসহ প্রায় ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে রাবি মেডিকেলে নেওয়া হয়। পরে গুরুতর আহত পাঁচজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রামেকে) পাঠানো হয়েছে।
আজ রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে আন্তঃবিভাগ ক্রিকেটের সেমিফাইনালে গণিত বিভাগ এবং ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের খেলা শেষে এ ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহতরা হলেন- গণিত বিভাগের ২১-২২ সেশনের মানিক বাবু, সাইদ সিয়াম ও মনির আহমেদ এবং ১৯-২০ সেশনের শহিদ আক্তার, ২০২০-২১ সেশনের আলি আহসান। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী গণিত বিভাগের ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তবে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছে কিনা এ খবর পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা স্টেডিয়ামের গ্যালারির দুই পাশে বসে খেলা দেখতেছিলেন। এ সময় তারা পরস্পরকে স্লেজিং করতে থাকেন। খেলা শেষে যখন ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ হেরে যায় তখন তারা গণিত বিভাগের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা শুরু করে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীদের ওপর। তখন সেখানে পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত হন। পরবর্তীতে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা স্টেডিয়ামের মাঠের মধ্যে অবস্থান নিলে ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা স্টেডিয়ামের উত্তর পাশের গেট ভেঙে মাঠের ভেতরে প্রবেশ করেন। তখন আরেক দফা সংঘর্ষ হয়। এ সময় শিক্ষকসহ প্রায় ১৫ জন আহত হন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শেখ শামসুল আরেফিন বলেন, ‘ঘটনাস্থলে আমি ছিলাম না। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে পেরেছি। গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা আমাদের বিভাগের শিক্ষার্থীদের গালাগালি করছিলেন। পরবর্তীতে ওই বিভাগের শিক্ষকরাও গালাগালি করেন। যার ফলে আমার বিভাগের শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে যান। এখন আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গেই আছি।’
ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে গণিত বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘শুরু থেকেই আমি খেলার মাঠে ছিলাম। আমাদের শিক্ষার্থীরা খুব শান্তভাবেই খেলা উপভোগ করতে ছিলেন। খেলা শেষ হলে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে প্রায় ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদেরকে রামেকে পাঠানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আমার কাছে ফোন আসে তখন জানতে পারি যে গণিত বিভাগ এবং ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। এসে দেখতে পাই, দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা মাঠে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। তখন গ্যালারিতে থাকা শিক্ষার্থীরাও মাঠে ঢুকে পড়েন। যদিও এই খেলাতে দুই বিভাগের শিক্ষকদের থাকার কথা ছিল। কিন্তু এক বিভাগের শিক্ষকরা কম ছিলেন। যার জন্য তাদেরকে থামানো যাচ্ছিল না। পরবর্তীতে শিক্ষকদের ডেকে এনে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে। দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের দুই পাশের গেট দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ আহত গণ ত ব ভ গ র পরবর ত ত
এছাড়াও পড়ুন:
ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘শিবির’ নিয়ে যা বললেন ছাত্রদল সম্পাদক
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে ছাত্রদল।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১টার দিকে সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের নেতৃত্বে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা শহীদ মিনারের শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অপর্ণ করে।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, “বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন শহীদ দিবস পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। সেই সময়ের যে আবহ, যে ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য শহীদরা আত্মহুতি দিয়েছিলেন সেটি এখনো আবহমান রয়েছে।”
আরো পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে শেরপুরে সমাবেশ
কুয়েটে সংঘর্ষ নিয়ে যা বলছে ছাত্রদল
তিনি বলেন, “আপনারা দেখেছেন, সিলেটের এমসি কলেজে মতামত প্রকাশের জন্য একজন শিক্ষার্থী হামলার শিকার হয়েছেন। ১৯৫২ সালেও নিজের ভাষায় অভিব্যক্তি প্রকাশের জন্য করা আন্দোলনে একটি পক্ষ তাদের মতামতকে বাধাগ্রস্ত করেছে।”
তিনি আরো বলেন, “জুলাই-আগস্ট পরবর্তী সময়ে আমরা মনে করছি, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষ তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারবে। তবে, সিলেটে এমসি কলেজে হামলার বিষয়ে গণমাধ্যমে আমরা দেখেছি, একজন শিক্ষার্থী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিল, ‘শিবিরের গুপ্ত রাজনীতি রগ কাটা রাজনীতি’। এজন্য শিবিরের সন্ত্রাসীরা তাকে হুমকি দিয়েছে, ‘রগ তো কাটিনি, তোমাকে দিয়ে শুরু করবো’। পরক্ষণে তার বক্তব্য পরিবর্তন করার জন্য শিবিরের সন্ত্রাসীরা গণমাধ্যমকর্মীদের হুমকি দিয়েছে। ছাত্রদলের একটি টিম আহত ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছে। ওই শিক্ষার্থী এখনো ভয়ে রয়েছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাও শিবিরের বিপক্ষে কথা বলতে ভীত-সন্ত্রস্ত হচ্ছে যে, কখন না জানি শিবিরের সন্ত্রাসীরা রগ কেটে দেয়।”
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “এই দিবসে আমরা মনে করছি, সবার মধ্যে মুক্ত মনের আবহ থাকবে, মতামত প্রকাশ করতে পারবে, সেটি যেন কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত না হয়।”
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আমরা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন পরে সুশৃঙ্খলভাবে শহীদ মিনারে সমাবেত হয়েছি। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পেরেছি। এর আগে ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে ফুল দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখানে মারামারির ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। আমাদের আগেও ৮-১০টি ছাত্র সংগঠন ফুল দিয়েছে। আমরা নিয়ম মেনে সিরিয়াল অনুযায়ী ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছি।”
ঢাকা/মামুন/মাসুদ