আধিপত্য বিস্তারের জেরে পাবনা সদর উপজেলায় জামায়াতের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এসময় একটি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়।

সেইসঙ্গে জামায়াত সমর্থক কয়েকজনের বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আবু সাইদ ও জাহিদুলের ইসলামের ফেস্টুন।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত দশটা নাগাদ সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের কুমারগাড়ী এলাকার তিন নাম্বার ওয়ার্ড জামায়াতের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। 

এসব ঘটনায় রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সাতজনকে অভিযুক্ত করে পাবনা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযুক্তরা হলেন- মালিগাছা ইউনিয়ন বিএনপি সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী, পাবনা সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, পাবনা জেলা ছাত্রদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবির হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র হত্যা মামলার আসামি উজ্জ্বল হোসেনসহ সাতজন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত দশটার দিকে মালিগাছা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলীর নেতৃত্বে আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ জন অস্ত্রধারী ক্যাডার বাহিনী পিস্তল, বন্দুক, রামদা, চাইনিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হেমায়েতপুর ইউনিয়নের কুমারগাড়ি এলাকায় স্থানীয় জামায়াতের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করে।

হামলাকারীরা একটি মুদিখানা দোকান ভাঙচুর ও একটি অটোরিকশার গ্যারেজ ভাঙচুর লুটপাট করে। পাশে থাকা একটি মোটরসাইকেল আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর তারা স্থানীয় বাসিন্দা পাবনা পৌর জামায়াতের ইঞ্জিনিয়ার ফোরামের সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ করিমসহ বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে। 

এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিহত শহীদ আবু সাঈদ ও জাহিদুল ইসলামের ফেস্টুন পুড়িয়ে দেয় হামলাকারীরা।

ভুক্তভোগী জামায়াত নেতা আব্দুল্লাহ করিমের অভিযোগ, ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপি নেতা ইয়াকুব আলী, মাহমুদুল হাসান, আবির হোসেনসহ বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতারা দখলদারিত্ব, আধিপত্য বিস্তার, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ত্রাস সৃষ্টি করে আসছে। তারই ধারাবাহিতকতায় আমাদের অফিসে হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও গুলিবর্ষণ করেছে। সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মালিগাছা ইউনিয়ন বিএনপি সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী বলেন, “এ ঘটনায় আমি মোটেও জড়িত নই। যখন এ ঘটনা ঘটে তখন থানার ওসি সাহেবের ফোন পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছি। এর বেশি কিছু নয়।”

পাবনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, “জমিজমা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি ঝামেলা চলে আসছিল কয়েকদিন ধরে। শনিবার রাতে দোকান ও অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত অভিযোগ পাইনি। পেলে আইনগত্য ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

ঢাকা/শাহীন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

ভাই আজকে আপনার অফিস নেই, কারাবন্দিরা পলককে

প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো মামলায় আদালতে হাজির করা হয় সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে। তবে যেদিন তারা আদালতে আসা লাগে না সেদিন কারাগারে সামনে সামান্য হাঁটার সুযোগ পান। তখন তাকে দেখে  কারাবন্দিরা মজা করে বলেন, “ভাই আজকে আপনার অফিস নেই।”

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে হত্যা মামলায় হাজির করা হয় পলককে। এসময় আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে এসব কথা বলেন তিনি। তবে তখনও বিচারক এজলাসে ওঠেননি। 

আজ সকাল ১০টা ৫৮ মিনিটে সিএমএম আদালতের হাজতখানা থেকে পলককে বের করা হয়। এসময় তাকে হেলমেট, হাতকড়া ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পড়ানো হয়। হেঁটে আদালতে যাওয়ার পথে তিনি বলেন, “মিথ্যা দিয়ে সত্যকে সাময়িকভাবে আড়াল করা গেলেও সত্যের জয় অনিবার্য, ইনশাআল্লাহ।”


পরে তাকে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়। এসময় তিনি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বলেন, “আমাকে তো নিয়মিত আদালতে আসা লাগে। তবে যেদিন আসা লাগেনা, সেইদিন কারাগারে হাঁটতে বের হলে জেলের বন্দিরা আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে, ভাই আজকে আপনার অফিস নেই। আদালতে হাজিরা নিয়ে তারা মজা করে। আদালতকে তারা আমার অফিস ভাবে।”

পলক বলেন, “জেল জীবন মারাত্মক। জীবনে শিক্ষার জন্য সাত দিন হলেও কারাগারে থাকা উচিত। আমি যদি কখনো কারাগার থেকে বের হতে পারি তখনও এই কথা বলবো।”

এ সময় তার আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে পলক বলেন, “তোমরা কথা বললেই তো রিমান্ডের পরিমাণ বেড়ে যায়৷ তারা তো (রাষ্ট্রপক্ষ) বলেছে, রিমান্ড তো শুরু৷ তাই কথা বলার দরকার নেই। আল্লাহ উত্তম পরিকল্পনাকারী। এটা কোনোভাবে পরিবর্তন করা যাবে না।” 

পরে তিনি কাঠগড়ায় সামনে গিয়ে দাঁড়ান। তখন ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকীকে উদ্দেশ্য করে একাধিকবার সালাম দেন। তবে প্রথমে সাড়া না দিলেও পরবর্তীতে পিপি হাসতে হাসতে তার সালামের উত্তর দেন। এরপর পলক বলেন, “যাক এইবার পিপি স্যারের মন নরম হয়েছে।” 

তখনও বিচারক এজলাসে ছিলেন না। পরে ১১টা ১০ মিনিটে এজলাসে উঠেন বিচারক। পরে রিয়াজ হত্যা মামলায় পলককে গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে আদালত তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে পুলিশ প্রহরায় তাকে আদালত থেকে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। 

মামলার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৪ আগস্ট রাজধানীর ধানমন্ডির সায়েন্সল্যাব এলাকা থেকে জিগাতলা এলাকায় যাওয়ার পথে আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন মো. রিয়াজ (২৩)। দুই সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৭ আগস্ট বিকেলে মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের মা মোসা. শাফিয়া বেগম ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার ধানমন্ডি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

ঢাকা/মামুন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিকে বিভিন্ন ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দের শুভেচ্ছা
  • আমাদের সার্বভৌমত্ব আমরাই রক্ষা করবো : নাহিদ 
  • ভাই আজকে আপনার অফিস নেই, কারাবন্দিরা পলককে
  • নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভা ও অপরাধ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ব্যবসায়ীর উপর সন্ত্রাসী হামলা ও  লুটপাটের প্রতিবাদে সমাবেশ, বিক্ষোভ