যদি আমাদের মাঠে নামান কতটুকু সময় টিকবেন, ভেবে দেখবেন: অন্তর্বর্তী সরকারকে গয়েশ্বর
Published: 16th, February 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘আমার পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বিনীত অনুরোধ—একটা নির্বাচন আদায় করার জন্য জনগণকে যেন রাস্তায় গুলি খেয়ে মরতে না হয়। আপনারা সময়মতো নির্বাচনটা দেন, তাতে আপনারা ফুলের পাপড়িতে ঢাকা পড়বেন। আপনাদের গলায় যত মালা পরাব, তত মালার ওজন আপনারা সইতে পারবেন না।’
গয়েশ্বর রায় আরও বলেছেন, ‘আপনাদের আমরা সম্মানের সঙ্গে আনছি, সম্মানের সঙ্গেই বিদায় করতে চাই। আপনারা দায়িত্বটা পালন করেন। আর যদি আমাদের শেষ পর্যন্ত মাঠে নামান কতটুকু সময় টিকবেন, সেটা একটু ভেবে দেখবেন।’
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী তৃণমূল দলের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘এই সরকার যদি একবার গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তাহলে তো আমাদের নিজ পক্ষে অবস্থান নিতে হবে। এমন একটা দিন আসুক, চাই না। যা হওয়ার হয়েছে, এখন একটা নির্বাচন হোক।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘এই যে রাজনীতিবিদদের মধ্যে সংস্কারের চিন্তাভাবনা, ইতিবাচক মনোভাব, এটা তো কম কথা না। আমরা যে ভুলগুলো করেছি, যার জন্য দেশের আজকের এই দুরবস্থা, সেটিকে সঠিক জায়গায় আনতে গেলে একটা স্বাধীন দেশের জন্য যে পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করা দরকার, সেটাই সংস্কার।’
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘আমরা তো ৩১ দফা দিয়েই রেখেছি। যে যে কমিশন বানিয়েছেন, তাদের ৫ জনকে বসিয়ে দেন। সেখানে কী বাদ দিতে হবে, যোগ করতে হবে করেন বা তাদের কোনো ভাবনা থাকলে দিতে পারেন। একেকটা কমিশন ২০০ পৃষ্ঠা, ৩০০ পৃষ্ঠা লিখে পাঠাবে আর সারা দিন এগুলো পড়ব, এটা হয়? হয় না।’
আশাবাদ ব্যক্ত করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙার আগেই অন্তর্বর্তী সরকার যথাযথভাবে নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করবে। নির্বাচনের মাধ্যমে ফয়সালা হয়ে যাবে, জনগণ কাকে ক্ষমতা দেবে। জনগণই দেশের মালিক, ক্ষমতার উৎস। সেই জনগণ যদি ১৯৭১–এর যুদ্ধের বিরোধীদের ভোট দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনে, আমার আপত্তি নেই।’
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী তৃণমূল দলের সভাপতি হানিফ ব্যাপারীর সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী তৃণমূল দলের সাধারণ সম্পাদক আল-ফাতাহ খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি-এনসিপি নিয়ে একতরফা নির্বাচন হলে কেউ ভোট দিতে যাবে না: কাদ
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেছেন, বাংলাদেশের সব দল নির্বাচনে এলে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগও অংশ নেবে। কিন্তু, যদি বিএনপি ও এনসিপিকে নিয়ে একতরফা নির্বাচন হয়, তাহলে কেউ ভোট দিতে যাবে না।
শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল জেলা হানাদারমুক্ত দিবসে কাদেরিয়া বাহিনীর উদ্যোগে শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ: ফখরুল
‘নির্বাচন সহজ হবে না, পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে নামতে হবে’
আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমি যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন বঙ্গবন্ধুকে লালন করব। যতদিন বেঁচে আছি ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’র আদর্শই ধারণ করে চলব। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা যুদ্ধ করেছি। জিয়াউর রহমানও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। কিন্তু, আমরা ভুল করে জামায়াত-শিবিরকে সুযোগ দিয়েছি। বঙ্গবন্ধু ক্ষমা না করলে তারা টিকতেই পারত না।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যেখানে নেই, সেখানে মুক্তিযুদ্ধ নেই, বঙ্গবীরও নেই। শেখ হাসিনাকে আমি মায়ের মতো দেখি। শেখ হাসিনার অন্যায় বঙ্গবন্ধুর অন্যায় নয়। আর ড. ইউনূস মনে করেন, আওয়ামী লীগকে বিচার করবেন, এটা সম্ভব নয়। যদি আওয়ামী লীগ স্বৈরাচার হয়, তাহলে এখন কী হচ্ছে?
এই খ্যাতিমান মুক্তিযোদ্ধা বলেন, সরকার যদি সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে, তখন জনগণ চাইলে দলের বাইরে থেকেও প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা ভাবব। কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হয়, এই নির্বাচনে মানুষের আগ্রহ কমে যাবে। নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে হলে আগে পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনার যে ভাটি খেয়েছে, আপনাদেরও সেই ধাক্কা খেতে হতে পারে। ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয় অনেকেই দেয় । যারা জনগণের পথ দেখাবেন, তারা কোথায়? জনগণের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ১৯৭১ সালে নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে আজ জুলাই যোদ্ধারা কথা বলতে পারেন। দ্বিমতের স্বাধীনতা দিতে হবে। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব, এমন পরিবেশ ফেরাতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন বাঙ্গাল, ফজলুল হক বীর প্রতীক, কুড়ি সিদ্দিকীসহ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় মুক্তিযুদ্ধকালীন কাদেরিয়া বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/কাওছার/রফিক