সড়কে পড়ে আছে গাড়ি ভাঙচুরের কাচের টুকরো। পাশেই আস্ত গাছের গুঁড়ি। এই গাছ ফেলেই অবরোধ করা হয় সড়ক। ডাকাতের দল লুট করে নিয়ে যায় চালকদের সর্বস্ব। শুধু লুট করেই ক্ষান্ত হয়নি। চালকদের করা হয় মারধর। ভাঙচুর করা হয় যানবাহন। 

গত শনিবার রাত দেড়টার দিকে আবারও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে ঘাটাইলে। উপজেলার সন্ধানপুর ইউনিয়নের ঘাটাইল-সাগরদীঘি সড়কের ফকিরচালা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসি ও পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় সংঘবদ্ধ ডাকাতরা। যানবাহনের মধ্যে ছিল ট্রাক, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল।

এর আগে নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এক মাসে পাঁচ বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ‘রাত নামলেই ডাকাত আতঙ্ক’ শিরোনামে ১৯ ডিসেম্বর সমকালে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

গত শনিবার রাতে ড্রামট্রাক (দশ চাকার বড় ট্রাক) নিয়ে ডাকাতের কবলে পড়েন চালক মিন্টু মিয়া। তিনি জানান, অনেকগুলো গাড়ির সারি দেখে গ্লাস নামিয়ে জানতে চান এখানে কী হয়েছে? এরই মধ্যে ডাকাত দলের একজন এসে তাকে বলে ‘এখানে কী হচ্ছে তুই বুঝছ না? যা আছে বের কর। না দিতে চাইলে রামদায়ের উল্টো পিঠ দিয়ে তার ঘাড়ে আঘাত করা হয়। পরে তার কাছে থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা এবং ২০ হাজার টাকা মূল্যের একটি স্মার্টফোন নিয়ে যায়।

মিন্টু আরও জানান, ডাকাতরা চলে যাওয়ার পর তিনি গাড়ি থেকে নেমে অন্যান্য চালকদের থেকে জানতে পারেন ডাকাতির কবলে পড়েছিল ১০টি গাড়ি, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল। কাঁচামালবাহী এক ট্রাক চালকের কাছে থেকেই লুট করা হয় ৬০ হাজার টাকা। 

কথা হয় ডাকাতির কবলে পড়া তিনটি ড্রাম ট্রাকের মালিক বাদল ফকিরের সঙ্গে। তার ভাষ্য, রাতে তার গাড়ির চালক একজনকে ফোন দিলে ফোন বন্ধ পান। এরপর অপরজনকে ফোন দিলে সে রিসিভ করেন না। কিছুক্ষণ পর মোন্নাফ মিয়া নামে অপর গাড়ির এক চালক ফোন করে তাকে জানান ট্রাকগুলো ডাকাতের কবলে পড়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ঘাটাইল থানায় ফোন করেন। 

বাদল জানান, চালকদের দেওয়া তথ্যমতে তিনটি স্মার্টফোন, একটি বাটনফোন এবং ৩০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে ডাকাতরা। মারধরের শিকার হয়েছেন চালকরা। তিনি ঢাকায় থাকায় এই মুহূর্তে আইনি প্রক্রিয়ায় যেতে পারছেন না। ঘাটাইল ফিরে আইন অনুযায়ী যা করার করবেন। 

ডাকাত দলের কবলে পড়েছিলেন ঘাটাইল উপজেলার বাইচাইল গ্রামের শহিদুল ইসলাম টিক্কা। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে থাকা নগদ ৭ হাজার টাকা এবং একটি স্মার্টফোন দিয়ে গেছে।’

এর আগে নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে যে পাঁচ বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে তাদের মধ্যে ভুক্তভোগী একজন বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম। গত ২৪ নভেম্বর লক্ষিন্দর ইউনিয়নের বেইলা গ্রামে তার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। রাত আড়াইটার দিকে ১০-১৫ জনের ডাকাত দল বাড়ির ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে রশি দিয়ে ঘরের সবার হাত-পা বেঁধে ফেলে। ডাকাতরা আলমিরা ভেঙে লুট করে নিয়ে যায় ১৩ ভরি স্বণালঙ্কা, প্রায় ৫০ ভরি রুপার অলঙ্কার, দেড় লাখ টাকা ও একটি স্মার্টফোন। নগদ টাকাসহ প্রায় ১৯ লাখ টাকার মালপত্র ডাকাতরা নিয়ে যাওয়ার পর ভুক্তভোগীদের ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে তাদের হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেন। এ ঘটনায় ২৮ নভেম্বর থানায় মামলা করেন রফিকুল ইসলাম। 

মামলা নিয়ে কথা হয় রফিকুলের সঙ্গে। তার ভাষ্য, গত সপ্তাহে সাগরদীঘি তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শকের কাছে মামলার অগ্রগতি বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে বলে জানানো হয়। বাদীর দাবি, এ ধরনের কথা বারবার বলে আসছে পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে আগামী সপ্তাহে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপারের কাছে যাবেন বলে সমকালকে জানান তিনি।

ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই এবং ভুক্তভোগীদের দেওয়া তথ্যমতে ডাকাতির ঘটনায় যারা ছিল তাদের বয়স খুবই কম। একটি বাটন মোবাইল ফোন, কয়েকটি স্মার্টফোন এবং কিছু টাকা নিয়ে গেছে ডাকাতরা। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড ক ত র কবল ড ক ত র ঘটন ল ইসল ম চ লকদ র ল ট কর

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যাচেলর পয়েন্টের ‘পলি চেয়ারম্যান’ খ্যাত গুলশান আরা মারা গেছেন

নাটক ও সিনেমার পরিচিত মুখ অভিনেত্রী গুলশান আরা আহমেদ মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে মৃত্যু হয়েছে তার। 

তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছন পরিচালক এম রাহিম। তিনি জানান,  শ্রদ্ধেয় শুলশান আরা আহমেদ আজ আজ সকালে  ইন্তেকাল করেছেন। জংলি আপনার সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি। আপনি আজীবন আমাদের পরিবারেরই একজন হয়ে থাকবেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্ট দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরিচালক কাজল আরেফিন অমি। পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আমাদের গুলশান আরা আহমেদ আপা আপা আজ সকাল ৬:৪০-এ ইন্তেকাল করেছেন।’

অমি আরও লিখেছেন, ‘ব্যাচেলর পয়েন্টে উনি কাবিলার আম্মা, নোয়াখালীর চেয়ারম্যান চরিত্রে অভিনয় করেছেন। আপনাকে আমরা মিস করবো আপা। আল্লাহ পাক ওনাকে জীবনের সমস্ত গুনাহ মাফ করে, জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুক। আমিন।’

জানা গেছে, হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক করেছিলেন অভিনেত্রী। দ্রুতই লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। তবে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি।  গুলশান আরা আহমেদের ফেসবুক আইডি থেকে  মাঝরাতে লেখা হয়, ‘আমার আম্মু গুলশান আরা আহমেদ আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে আছেন, হার্ট অ্যাটাক এবং হার্ট ফেইলিউরের জন্য। আপনার সবাই আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন।’ 

পরে শোনা যায় মৃত্যুর খবর, অর্থাৎ লাইফ সাপোর্ট থেকে আর ফেরানো যায়নি তাকে। ভোরে তাঁর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অভিনেত্রীকে দাফন করা হবে। অভিনেত্রীর বোনের ছেলে অভিনেতা আর এ রাহুল জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছেন অভিনেত্রী। তার লাশ দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে। 

গুলশান আরা ২০০২ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে একজন তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে টিভি নাটকে যাত্রা শুরু করেন। তবে নিজেকে একজন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। সেই ইচ্ছা থেকেই গুলশান আরা প্রথম অভিনয় করেন প্রয়াত এনায়েত করিম পরিচালিত ‘কদম আলী মাস্তান’ চলচ্চিত্রে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দর্শকদের উপহার দিয়েছেন ‘চরিত্র’, ‘ডনগিরি’, ‘ভালোবাসা আজকাল’, ‘পোড়ামন’ এর মতো জনপ্রিয় সব ছবি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আমাকে স্নেহ করা মানুষটি এতো দ্রুত চলে যাবে ভাবিনি: বুবলী
  • মানুষটি এতো দ্রুত চলে যাবেন ভাবিনি: বুবলী
  • আমাকে স্নেহ করা মানুষটি এতো দ্রুত চলে যাবেন ভাবিনি: বুবলী
  • ওয়াক্‌ফ আইনের প্রতিবাদ কেন সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় রূপ নিল মুর্শিদাবাদে
  • মুসা (আ.)-এর বিয়ের শর্ত
  • মারা গেছেন অভিনেত্রী গুলশান আরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হবে দাফন
  • যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেলেন গুলশান আরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হবে দাফন
  • যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেলেন গুলশান আরা, দাফন হবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়
  • যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছেন অভিনেত্রী গুলশান আরা, দাফন হবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়
  • ব্যাচেলর পয়েন্টের ‘পলি চেয়ারম্যান’ খ্যাত গুলশান আরা মারা গেছেন