পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে বিএনপির সহযোগী সংগঠন তাঁতী দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীর মধ্যে সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়েছে। ওয়াইফাইয়ের সংযোগ তার কেটে নেওয়ার জেরে শনিবার রাতে উপজেলার দক্ষিণ ভবানীপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

আহতরা হলেন– জেলা তাঁতী দলের সদস্য সচিব মানিক হাওলাদার, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সাগর, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীন ফরাজী, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রাজিব হোসেন, তাঁতী দল নেতা হাসান। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, রাতে ইন্দুরকানী বাজারের ইন্টারনেট ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম খানের ভবানীপুর এলাকার ওয়াইফাই সংযোগের তার কেটে নিয়ে যায় কে বা কারা। এই খবর পেয়ে উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক শাহীন ফরাজী ঘটনাস্থলে গেলে জেলা তাঁতী দলের নেতা মানিক হাওলাদারের সমর্থকদের সঙ্গে তাঁর কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের হামলায় পাঁচ নেতাকর্মী আহত হন।

উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলমগীর কবির মান্নু জানান, আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা সুস্থ হলে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ হোসেন জানান, সংঘর্ষের ঘটনা শুনেছি। কোনো পক্ষ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল স ঘর ষ ব এনপ আহত ছ ত রদল স ঘর ষ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সন্দ্বীপবাসীর অবর্ণনীয় ‘দুর্ভোগের কলঙ্ক’ মোচন হল: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘‘সন্দ্বীপে ফেরি সার্ভিস চালুর মাধ্যমে সন্দ্বীপবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হল। পাশাপাশি স্বাধীনতার এত বছর পর পর্যন্ত সন্দ্বীপের মানুষ যে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন, সে কলঙ্ক মোচন হল।’’

সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুরে সন্দ্বীপ উপজেলা কমপ্লেক্স মাঠে এক সুধী সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘‘সন্দ্বীপ বাংলাদেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী দ্বীপ। দেশের বিভিন্ন জায়গায় উন্নতি হলেও স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর্যন্ত এ দ্বীপ উপকূলটি অবহেলিত অবস্থায় রয়ে গেছে। আজ ফেরি সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দ্বীপবাসী একটি কলঙ্ক থেকে মুক্তি পেল। সন্দ্বীপকে নৌবন্দর ঘোষণা, গুপ্তছড়া ও কুমিরা ঘাট উন্মুক্ত করা এবং ঢাকা-সন্দ্বীপ বাস সার্ভিস চালু করা, ফেরিঘাট এলাকায় সংযোগ সড়ক নির্মাণ; নৌপথে ড্রেজিং-এর উদ্যোগগুলো সন্দ্বীপবাসীর দীর্ঘদিনের ভোগান্তি থেকে তাদের মুক্ত করবে।’’

বঙ্গোপসাগরের জলরাশিঘেরা প্রায় ৭৫০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে রয়েছে সন্দ্বীপ উপজেলা। সীতাকুণ্ড থেকে জলপথে প্রায় ১৭ কিলোমিটার দূরের এ উপজেলার মানুষ দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন করে আসছেন। স্পিড বোট, ট্রলারে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা পারাপার হতো। গর্ভবতী মহিলা বা মুমূর্ষু রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শহরে আনার ক্ষেত্রে তাদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হত। ভাটার সময় অনেক ক্ষেত্রে অনেক পথ কাদাপানি মাড়িয়ে কূলে উঠতে হত। সন্দ্বীপবাসীর দুর্ভোগ ছিল অবর্ণনীয়। তাই তারা দীর্ঘদিন থেকে সন্দ্বীপ-সীতাকুণ্ড সরাসরি ফেরি চলাচলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।’’

এদিন সকালে সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ঘাটে এবং সন্দ্বীপ উপজেলার গুপ্তছড়া ঘাটে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন ফেরিঘাট ও ফেরিসেবার উদ্বোধন করেন। এ সময় তার সঙ্গে আরো ৫ জন উপদেষ্টা ও ২ জন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী উপস্থিত ছিলেন।

ফেরি চলাচল উপলক্ষে আজ থেকে ঢাকা-সন্দ্বীপ রুটে বিআরটিসির বাস চলাচলও উদ্বোধন করা হয়। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বিআরটিসি এসি বাস সার্ভিস উদ্বোধন করেন।

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ-এর সভাপতিত্বে সভায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মিজ্ ফরিদা আখতার, বিশেষ সহকারী (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) খোদা বখশ চৌধুরী, বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়) ডা. মো. সায়েদুর রহমান সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। উপদেষ্টাগণ তাদের বক্তৃতায় ফেরিঘাট ও ফেরিসেবার জন্য সবাইকে অভিনন্দন জানান। 

সন্দ্বীপ অংশে দুটি ঘাটের নাম ‘জুলাই-২৪’ এর গণঅভ্যুত্থানে শহীদ সৈকত ঘাট ও শহীদ মাহিন ঘাট নামকরণ করার জন্য নৌ পরিবহন উপদেষ্টা প্রস্তাব দেন। উপস্থিত সুধীজন সমস্বরে ‘হ্যাঁ’ সূচক জবাব দিয়ে ঘাটের নামকরণকে স্বাগত জানান। 

উল্লেখ্য, ‘জুলাই ২৪’-এর আন্দোলনে সন্দ্বীপের দুজন শহীদ হন। অনুষ্ঠানে এ দুই শহীদ পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে অনুদানের চেক প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে দুই পরিবারকে আরো ২০ লাখ করে অনুদান দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।

ঢাকা/রেজাউল/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ