পেট্রোল বোমা মেরে ৮ বাস যাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যায় গ্রেপ্তার ২
Published: 16th, February 2025 GMT
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা মেরে ৮ যাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে নগরীর একটি বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
রোববার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ।
গ্রেপ্তার সালাহ উদ্দিন আহমেদ মজুমদার চৌদ্দহগ্রাম উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। তার ছেলে নেয়ামত উল্লাহ মজুমদার রুমি কালিকাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য।
মামলার বরাত দিয়ে ডিবি পুলিশ জানায়, ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে কালিকাপুর ইউনিয়নের জগমোহনপুর এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা হামলায় ৮ যাত্রী নিহত হন। এ ঘটনায় গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর বাস মালিক আবুল খায়ের বাদী হয়ে কুমিল্লার আদালতে সাবেক রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, র্যা বের সাবেক ডিজি বেনজীর আহমেদ, কুমিল্লার তৎকালীন পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তীসহ ১৩০ জনের নামে মামলা করেন। এ মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয় ৬০ জনকে। এ মামলার ১১ নম্বর আসামি সাবেক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আহমেদ মজুমদার এবং ৭৯ নম্বর আসামি তার ছেলে নেয়ামত উল্লাহ মজুমদার রুমি।
কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, পেট্রোল বোমা মেরে বাসের ৮ যাত্রী হত্যা মামলার আসামি সালাউদ্দিন আহমেদ ও তার ছেলে রুমি আত্মগোপনে ছিলেন। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নগরীর একটি বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আহম দ
এছাড়াও পড়ুন:
শতবর্ষী ঐতিহ্যে চুনারুঘাটের বৈশাখী মেলা, কৃষিপণ্যের বাহারে মুখর পীরের বাজার
শত বছরের ঐতিহ্য নিয়ে চুনারুঘাট উপজেলার পীরের বাজারে শুরু হয়েছে বৃহৎ বৈশাখী মেলা, স্থানীয়ভাবে যা 'বান্নি' নামে পরিচিত। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত এই মেলাটি চুনারুঘাটসহ সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় বৈশাখী মেলা হিসেবে পরিচিত।
মঙ্গলবার সকাল থেকে মেলা শুরু হয় এবং মূল আকর্ষণ হিসেবে থাকছে কৃষিপণ্যের বিশাল সমাহার। মেলায় পাওয়া যাচ্ছে লাঙল, জোয়াল, দা, কাঁচি, মই, মাছ ধরার সরঞ্জামসহ অসংখ্য কৃষি উপকরণ। মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, খেলনা, হস্তশিল্প ও মনিহারি পণ্যেরও ছিলো চোখধাঁধানো উপস্থিতি।
স্থানীয় দোকানিরা জানান, প্রতিবছর বিভিন্ন জেলা ও অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা পণ্য নিয়ে এই মেলায় অংশগ্রহণ করেন। শুধু হবিগঞ্জ নয়, ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী এমনকি উত্তরবঙ্গ থেকেও বিক্রেতারা অংশ নিয়েছেন এ ঐতিহ্যবাহী আয়োজনে।
চুনারুঘাট পৌরসভার সাবেক মেয়র নাজিম উদ্দিন সামছু বলেন, এই মেলা মূলত কৃষকদের জন্য। এখান থেকে প্রয়োজনীয় কৃষিপণ্য সংগ্রহ করতেন তারা।
তবে আধুনিক প্রযুক্তির প্রসারের ফলে কৃষিকাজে ব্যবহৃত অনেক সরঞ্জামের প্রয়োজন কমে যাওয়ায় মেলার জৌলুস কিছুটা কমেছে বলে মনে করেন অনেকে। সেইসঙ্গে আশপাশে ঘরবাড়ি গড়ে ওঠায় মেলার পরিসরও সীমিত হয়েছে।
স্থানীয় ইউএনও মোহাম্মদ রবিন মিয়া জানান, মেলায় অংশ নিতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ আসছেন। মেলা চলাকালীন নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে পুলিশ বাহিনী, নিশ্চিত করেন চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে, শত বছর আগে এই মেলা শুরু হয়েছিল ছোট পরিসরে পূজা আয়োজনের মাধ্যমে। পরে তা বৃহৎ মেলায় রূপ নেয়।
এখনও অনেকেই শৈশবের স্মৃতি রোমন্থন করতে এই মেলায় আসেন, স্মৃতিচারণ করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। মেলায় পরিবেশিত হচ্ছে গ্রামবাংলার আবহমান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।
চুনারুঘাটের এই বৈশাখী মেলা শুধু একটি উৎসব নয়, বরং এটি এ অঞ্চলের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও কৃষিভিত্তিক জীবনের প্রতিচ্ছবি।