গণতন্ত্রকে বাস্তবে রূপ দিতে নির্বাচনই একমাত্র পথ: মির্জা ফখরুল
Published: 16th, February 2025 GMT
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই। গণতন্ত্রকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে নির্বাচনই একমাত্র পথ। যার হাত ধরে আমরা গণতন্ত্রে ফিরে যেতে পারি।’
আজ রোববার বিকেলে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় বড় মাঠে জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে জেলা বিএনপি। জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টে জেলা বিএনপির রংপুর বিভাগের আটটি দল অংশ নিচ্ছে। উদ্বোধনী খেলায় পঞ্চগড় ও দিনাজপুর জেলা বিএনপির দল অংশ নেয়।
অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ আমি আবেগাপ্লুত। আমি দীর্ঘদিন পর একটা বর্ণাঢ্য ফুটবল টুর্নামেন্টের শুরুটা দেখতে পারছি। আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই জাতীয়তাবাদী দল ঠাকুরগাঁও জেলা শাখাকে, তারা টুর্নামেন্টটি আয়োজন করে ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষকে নির্মল বিনোদনের পাশাপাশি ক্রীড়াঙ্গনে একটি নতুন ধারা সৃষ্টি করেছে। যদিও কাজটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার। বিএনপি যে কাজটি শুরু করল, আমি মনে করি, তার ধারাবাহিকতা জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও অন্যরা বজায় রাখবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দেশ একটা ভয়ংকর সময় পার করে এসেছে। প্রায় ১৫ বছর একটা পাথর আমাদের বুকের মধ্যে চেপে ছিল। সেই পাথর আমাদের সব প্রতিষ্ঠানকে দানবের মতো ধ্বংস করে দিয়েছে। এই খেলার মাঠগুলোকেও ধ্বংস করে ফেলেছিল। এই মাঠে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ছাত্র-তরুণেরা যেভাবে একটা অভ্যুত্থান সংঘটিত করে আমাদের নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিল, এই সুযোগটা যেন আমরা গ্রহণ করি। শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নয়, আমরা খেলাধুলা, সংস্কৃতি, সামাজিক জীবন, শিক্ষা—সব ক্ষেত্রে যেন একটা নতুন বাংলাদেশ দেখতে পাই।’
ফুটবলে আমিনুল ও সাব্বিরের ফ্যান ছিলেন মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তাঁরা (আমিনুল ও সাব্বির) যখন মাঠে খেলতেন, তখন মাঠে অসংখ্য দর্শক ছিল। কিন্তু আজ ফুটবলে দর্শক কমে গেছে। ফুটবল বাংলাদেশের খেলা, মানুষের খেলা। এই ফুটবলকে আবার জনপ্রিয় করে তুলতে হবে। আমিনুল সারা বাংলাদেশে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন শুরু করেছেন। এটা ইউনিক ব্যাপার যে একটা রাজনৈতিক দল ক্রীড়াঙ্গনে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এ জন্য তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানাতে চান। তাঁর প্রত্যক্ষ দিকনির্দেশনায় আমিনুল সারা দেশে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করছেন।
তরুণ দর্শকদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছিলেন ক্ষণজন্মা মানুষ। তিনি একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছিলেন। এ দেশে গণতন্ত্রকে মুক্ত করে আমূল পরিবর্তন করেছিলেন। মাঠে খেলাধুলাকে তাঁর উন্নত করার চেষ্টা আজও তাঁরা মনে করেন।
আজ বেলা সোয়া তিনটার দিকে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের সূচনা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন টুর্নামেন্টের আহ্বায়ক সৈয়দ মমিনুল হক, বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। এ ছাড়া বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় সৈয়দ রুম্মান বিন ওয়ালী সাব্বির, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, বিএনপির পল্লী ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ টবল ট র ন ম ন ট র গণতন ত র ব এনপ র আম দ র আম ন ল ফখর ল
এছাড়াও পড়ুন:
‘আধিপত্যবাদী শক্তি ষড়যন্ত্র করে আসছে মহল বিশেষের তাবেদারির জন্য’
দেশ স্বাধীন হলেও নতুন করে নানাভাবে আধিপত্যবাদী শক্তি আমাদের ভাষা, সংস্কৃতির ওপর আগ্রাসন চালানোর ষড়যন্ত্র করে আসছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তারেক রহমান বলেন, “দেশ স্বাধীন হলেও নতুন করে নানাভাবে আধিপত্যবাদী শক্তি আমাদের ভাষা, সংস্কৃতির ওপর আগ্রাসন চালানোর ষড়যন্ত্র করে আসছে মহল বিশেষের তাবেদারির জন্য, যাতে আমরা বিশ্ব সমাজে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াতে না পারি। কিন্তু এদেশের মানুষ সবসময় স্বৈরাচার এবং দেশি-বিদেশি কুচক্রীদের অদম্য সাহসে প্রতিহত করে এসেছে।”
তিনি বলেন, “দেশের মানুষকে যাতে আটকিয়ে রাখতে না পারে এজন্য ন্যায়বিচার, মানবিক সাম্য তথা প্রকৃত গণতন্ত্রকে শক্তিশালী ও চিরস্থায়ী করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। গণতন্ত্রকে যাতে আর কেউ কঠিন শৃঙ্খলে বন্দি করতে না পারে সেজন্য স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী গণতান্ত্রিক শক্তিকে সার্বক্ষণিক সজাগ থাকতে হবে। এক্ষেত্রে একুশের অম্লান চেতনা আমাদেরকে উদ্বুদ্ধ করবে।”
ভাষা শহীদদের স্মরণ করে তিনি লেখেন, “একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় জীবনের অবিস্মরণীয় একটি অধ্যায়। আমি এই দিনে সকল শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। রক্তরাঙ্গা ২১ ফেব্রুয়ারিতে মাতৃভাষা’র মর্যাদা রক্ষার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। এ দিনেই সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অনেকেই জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাদের এই মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে রচিত হয়েছে আমাদের জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের প্রথম সোপান।”
তারেক রহমান বলেন, “২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এখন বিশ্বব্যাপী পালিত হয়। বায়ান্ন সালের ২১’শের রক্তাক্ত পথ ধরেই এদেশের সকল গণতান্ত্রিক এবং স্বাধীকারের সংগ্রাম তীব্র হয়ে অর্জিত হয়েছে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমাদের জাতীয় স্বাধীনতা। জনগণ শৃঙ্খলমুক্ত হয়, ফিরে পায় একটি স্বাধীন ভূখণ্ড।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন আমাদের জাতীয়তাবাদ ও ঐক্যের অনুভূতি জাগ্রত করে। আমাদের ২১ ফেব্রুয়ারি আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করায় গোটা বিশ্বে মাতৃভাষা’র মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। মহান ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে আমি বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের আয়োজিত নানাবিধ কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি।”
ঢাকা/ইভা