বাংলাদেশ, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিল করল যুক্তরাষ্ট্র
Published: 16th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে নানা প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দক্ষতা বিভাগ (ডিওজিই) এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। তারা বলেছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নেওয়া প্রকল্প ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ ইন বাংলাদেশ’-এ ২ কোটি ৯০ লাখ ডলারের অর্থায়ন বাতিল করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় শনিবার দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে এই অর্থায়ন বাতিলের কথা জানায় ডিওজিই। তাতে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের করদাতাদের দেওয়া অর্থ নিম্নোক্ত ক্ষেত্রগুলোয় (প্রকল্প) খরচ হতে যাচ্ছিল, যেগুলোর সব কটি বাতিল করা হয়েছে।’ এরপর ধারাবাহিকভাবে ওই প্রকল্পগুলো, প্রকল্প বাস্তবায়নের দেশ ও অঞ্চল এবং অর্থের পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ ইন বাংলাদেশ (এসপিএল) প্রকল্পে অর্থায়ন করে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি ও যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ডিএফআইডি)। এই প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক দলগুলো ও ভোটারদের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করা এবং রাজনৈতিক সহিংসতা কমানোর লক্ষ্যে কাজ করা হয়।
এক্সে ডিওজিইর পোস্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারত ও নেপালেও বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। ভারতে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো-সংক্রান্ত প্রকল্পে ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের অর্থায়ন বাতিল করা হয়েছে। আর নেপালের একাধিক প্রকল্পে বাতিল করা হয়েছে ৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এ ছাড়া এ তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে মোজাম্বিক, কম্বোডিয়া, সার্বিয়া, লাইবেরিয়া, মালি ও মিসর। এশিয়া মহাদেশ ও আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলকেন্দ্রিক দুটি প্রকল্পেও অর্থ দেবে না যুক্তরাষ্ট্র।
গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসার পর দেশটিতে সরকারি দক্ষতা বিভাগ বা ডিওজিই নামের বিভাগটি প্রতিষ্ঠা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্ককে। ডিওজিইর মাধ্যমে সরকারি ব্যয় সংকোচনের লক্ষ্যে কাজ করছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ব্যয় সংকোচনে এরই মধ্যে নানা পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছেন ইলন মাস্ক। গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় সরকারের ৯ হাজার ৫০০ জনের বেশি কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এর আগে বিশ্বব্যাপী ইউএসএআইডির সহায়তা স্থগিত করার ঘোষণা দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছিল ইউএসএআইডি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক প রকল প সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে অন্য কাউকে ক্ষমতায় বসাতে অর্থ ঢেলেছিল বাইডেন: ট্রাম্প
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারো বাইডেন প্রশাসনের তরফ থেকে ভারতের জাতীয় নির্বাচনে ‘ভোটার উপস্থিতি’ বাড়ানোর জন্য ২১ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি বলেন, “কেন আমরা ভারতে ভোটদানের হার বৃদ্ধি করতে ২ কোটি ১০ লাখ ডলার খরচ করব?”
তার পরেই পূর্বসূরি বাইডেনকে ইঙ্গিত করে ট্রাম্প বলেন, “আমার মনে হয়, কাউকে জেতানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। আমরা বিষয়টি ভারত সরকারকে জানিয়েছি।” খবর এনডিটিভির।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে আবারো মাঝ আকাশে দুই বিমানের সংঘর্ষ, নিহত ২
ট্রাম্প অপতথ্যের জগতে রয়েছেন: জেলেনস্কি
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার মিয়ামিতে এক সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এখানে শুধু কয়েকটা উদাহরণ দিচ্ছি যে আপনাদের টাকা কোথায় যেত।
ট্রাম্প বাইডেন প্রশাসনের আমলে বিভিন্ন দেশে নানা খাতে যে বরাদ্দ যেত সেইসব দেশের নাম ও কত পরিমাণ অর্থ যেত তা বলেন। বক্তব্য দেওয়ার সময় ট্রাম্প এক পর্যায়ে ভারতের কথা বলেন।
গত রবিবার যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দক্ষতা বিষয়ক দপ্তর ভারতসহ একাধিক দেশে বরাদ্দ বাতিলের কথা জানায়। ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন এই দপ্তর জানায়, ভারতে ভোটের হার বৃদ্ধি করতে যুক্তরাষ্ট্র যে ১৮২ কোটি টাকা (ভারতীয় মুদ্রায়) দিত, তা বন্ধ করা হচ্ছে।
ট্রাম্প বলেন, “আমরা ২ কোটি ১০ লাখ ডলার কেন ভারতকে দিচ্ছি? ওদের অনেক টাকা আছে। আমাদের থেকে তারা অনেক কর নেয়। তাদের করের পরিমাণ এত বেশি বলে আমরা সেভাবে বাণিজ্য করতে পারি না।”
এর পরেই মোদির কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, “ভারত এবং তাদের প্রধানমন্ত্রীকে আমি যথেষ্ট শ্রদ্ধা করি। কিন্তু তাই বলে ভারতে ভোটের হার বৃদ্ধির জন্য ২.১০ কোটি ডলার!” অনুদান বাতিলের নথিতে স্বাক্ষরের পর এই মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ও ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশে বড় ধরনের সহায়তা অর্থায়ন বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য বাংলাদেশের ২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কর্মসূচিও বাতিল করা হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ