গভীর রাতে নারীর ঘরে ঢুকে পিটুনি খেলেন মৎস্যজীবী দল নেতা, ভিডিও ভাইরাল
Published: 16th, February 2025 GMT
ভোলার চরফ্যাসনে গভীর রাতে নারীর ঘরে ঢুকে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন শশীভূষণ থানা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি মিজান মুনসী। শুক্রবার চরকলমী ইউনিয়নের বকসীবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আজ রোববার গণধোলাইয়ের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে বহিষ্কারের দাবী জানান।
ভুক্তভোগী নারী জানান, মিজান মুনসী নানা অজুহাতে তার বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। বিভিন্ন সময় অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন। শুক্রবার বিকেলে বাড়িতে এসে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে মোবাইল ফোন নম্বর নেন। যাওয়ার সময় বলে যান রাত ১১টায় আসবেন। গভীর রাতে বাড়ির পেছনের জানালা ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ঘরে প্রবেশ করেন। আতঙ্কিত হয়ে তাকে ঘরে ঢুকতে দেন। তিনি অশোভন আচরণ করলে চোর এসেছে বলে চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। তারা মিজানকে আটক করে গণধোলাই দেন। খবর পেয়ে তার সাঙ্গপাঙ্গরা এসে তাকে উদ্ধার করেন।
এ ঘটনার পর অভিযুক্ত মিজান মুনসী চরফ্যাসন হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গণধোলাইয়ের ভিডিও ভাইরাল হলে মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে হাসপাতাল থেকে আত্মগোপনে চলে যান। এ কারণে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
চরকমলী ইউনিয়নের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান বেপারী জানান, ‘মিজান মুনসীকে রাতে আটক করে মারধর করা হয়েছে শুনেছি। তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। তার ফোন বন্ধ। বাসায়ও তাকে পাওয়া যায়নি।’
উপজেলা মৎস্যজীবীদ ল সভাপতি মো.
শশীভূশষণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিক হাসান রাসেল জানান, বিষয়টি শুনেছি। ভুক্তভোগী নারী কোনো অভিযোগ করেননি। তিনি অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ মিনারে রাষ্ট্রপতি-প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণ
একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রীতি অনুযায়ী রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি এবং পরে প্রধান উপদেষ্টার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে একুশের কর্মসূচি শুরু হয়।
রাষ্ট্রপতি ১১টা ৫৯ মিনিটে শহীদ মিনারে আসেন। এ সময় তাকে অভ্যর্থনা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান, একুশে উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান এবং সদস্যসচিব সাইফুদ্দীন আহমেদ।
আরো পড়ুন:
নতুন বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে সাংবাদিকদের প্রতি রাষ্ট্রপতির আহ্বান
কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্তের অনুমতি দিলেন রাষ্ট্রপতি
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রাত ১২টা ১০ মিনিটে শহীদ মিনারে আসেন। তাকেও উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান, একুশে উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান এবং সদস্যসচিব সাইফুদ্দীন আহমেদ অভ্যর্থনা জানান।
প্রধান উপদেষ্টা রাত ১২টা ১৩ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা রাত ১২টা ১৬ মিনিটে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক ও হাইকমিশনাররা এরপর পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর তিন বাহিনীর প্রধান শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শুরুতে সেনাবাহিনীর পক্ষে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ১২টা ২২ মিনিটে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান। বিমানবাহিনীর পক্ষে চিপ এয়ার মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) নতুন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।
এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা শ্রদ্ধা জানান।
পরে ভাষাসৈনিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা জানান।
একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার রাজপথ ও দেয়াল বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। চারুকলার শিক্ষার্থীরা রাত-দিন খেটে রং-তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলেছেন প্রতিবাদের নানা ভাষা। শহীদ মিনারের বেদি, কালো রাজপথ, দেওয়াল হেসে উঠছে বর্ণিল আল্পনায়।
ঢাকা/হাসান/ইয়াসিন