সাভারে বেতনের দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
Published: 16th, February 2025 GMT
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ছেইন অ্যাপারেল্স লিমিটেড তৈরিপোশাক কারখানার শ্রমিকরা। প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর তারা সড়ক ছেড়ে যান।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে কারখানা সংলগ্ন কাঠগড়া-বিশমাইল সড়কের আমতলা মোড় এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।
শ্রমিকরা জানান, গত কয়েকমাস ধরে আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকায় ছেইন অ্যাপারেল্স লিমিটেড কারখানায় বেতন পরিশোধ নিয়ে জটিলতা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বেতন পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছিল কারখানা কর্তৃপক্ষ। গত জানুয়ারি মাসের বেতন এখনও পরিশোধ করতে পারেননি। এ জন্য বকেয়া বেতনের দাবিতে সকালে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী কমিটি বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ
মোটরসাইকেল আরোহী ১ যুবক নিহত, ২ জন হাসপাতালে
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার এক নারী শ্রমিক জানান, গত কয়েক মাস ধরে সময় মতো বেতন দেওয়া হয় না। আন্দোলন করে বেতন আদায় করতে হয়। গত ৯ তারিখে বেতন পরিশোধ ছাড়াই ১৩ তারিখ পর্যন্ত কারখানা সাধারণ ছুটি দিয়ে দেয়। পরে ১৫ তারিখে নোটিশ দিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবারো ছুটি ঘোষণা করা হয়। গত মাসের বেতন এখনো না দেওয়ায় বকেয়া বেতনের দাবিতে সবাই আন্দোলন করছেন।
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূইয়া জানান, শ্রমিকেরা তাদের জানুয়ারি মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে সকাল থেকে সড়কে অবস্থান নেন। কারখানার একজন মহাব্যবস্থাপকের (জিএম) সঙ্গে যোগাযোগ হয়। তিনি কারখানায় এসে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেবেন বলে জানান। পরে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
প্রায় ৫ ঘণ্টা পর আড়াইটার দিকে আশুলিয়ার জিরাবো-বিমমাইল আঞ্চলিক সড়ক থেকে বকেয়া বেতনের দাবিতে চলমান অবরোধ তুলে নেন স্থানীয় ছেইন অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা। এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ছেইন অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোজাম্মিল হুসাইনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। খুদে বার্তা দিয়েও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/সাব্বির/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন ছ ইন অ য প র ল পর শ ধ অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
তিন শহীদ বোনের স্মৃতি নিয়ে শুরু শিল্প প্রদর্শনী
মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ মানুষের আত্মত্যাগ, যাঁরা যুদ্ধের নির্মম বাস্তবতার শিকার হয়েছিলেন, তাঁদের প্রতীক হিসেবে তিন বোনের করুণ পরিণতির বিস্মৃত গল্পগুলো নিয়ে শুরু হলো শিল্প প্রদর্শনী ‘ত্রিবেণী’। জাতীয় শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালার গ্যালারিতে আজ বুধবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া এ প্রদর্শনীতে উঠে এসেছে আসমা, নাজমা ও ফাতেমা নামে তিন বোনের একসঙ্গে মৃত্যুর মর্মান্তিক ঘটনা। ১৯৭১ সালের ৩ এপ্রিল চট্টগ্রামে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মর্টার শেলের আঘাতে প্রাণ হারান এই তিন বোন। সেই হামলায় তাঁদের সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৬ জন।
বুধবার দুপুরে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আসমা বেগম, নাজমা বেগম ও ফাতেমা বেগম একসঙ্গে শাহাদাত বরণ করেন। তাঁদের পরিবারের অন্য সদস্যরাও আহত হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের এমন আত্মত্যাগের ঘটনাগুলোও ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে জুলাই বিপ্লবের শহীদ আবু সাঈদের প্রতি যথেষ্ট সম্মান প্রদর্শন করা হবে।
এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ততোধিক নামে একটি সংস্থা। কিউরেট করেছেন তরুণ শিল্পনির্দেশক ওয়ারেসু ফাওমি। তিনি বলেন, এই প্রদর্শনী মুক্তিযুদ্ধের সময় ত্যাগ স্বীকার করা মানুষের অজানা গল্পের প্রতিফলন। এটি শুধু শিল্পের জন্য নয়, বরং বিস্মৃত স্বপ্ন, সাহস ও স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর অনন্য প্রয়াস। ফাওমি জানান, এই প্রদর্শনীতে উপস্থাপন করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ওই তিন বোনের ব্যবহৃত পোশাক।
শহীদ তিন বোনের বড় ভাই বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের (পিএইচএফবিডি) প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক মুজাহেরুল হক এই প্রদর্শনীর উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আগের প্রজন্মের ত্যাগের কথা কি আমরা মনে রেখেছি? মুক্তিযুদ্ধের সময়ের প্রথম দিকের শহীদ আমার তিন বোন। কিন্তু কোনো দিন তাঁদের কথা কেউ তুলে ধরেনি। এই প্রথমবারের মতো তাঁদের স্মৃতি স্মরণ করা হচ্ছে জনসমক্ষে।’
ত্রিবেণী প্রদর্শনীতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাদের মর্টার শেলের হামলায় একসঙ্গে শহীদ হওয়া তিন বোনের স্মৃতি তুলে ধরা হয়েছে চিত্রকলা, ইনস্টলেশন, ভিজ্যুয়াল মাধ্যম এবং তাদের ব্যবহৃত পোশাকের প্রদর্শনীর মাধ্যমে। স্থান পেয়েছে মোট ৪৫টি শিল্পকর্ম।
বক্তব্য দেন শহীদ তিন বোনের বড় ভাই বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক মুজাহেরুল হক