উত্তম নির্বাচন করতে হবে—ডিসিদের নির্দেশনা দেবে ইসি
Published: 16th, February 2025 GMT
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, যেকোনো মূল্যে একটি উত্তম জাতীয় নির্বাচন করতে হবে—জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) এই নির্দেশনা দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবে ইসি।
আজ রোববার দুপুরে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ইসি বিশ্বাস করে, এবার নির্বাচনে কোনো খারাপ উদাহরণ সৃষ্টি হবে না, দেশের ইতিহাসে একটি উত্তম নির্বাচন হবে।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, এবার ডিসি সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেয়েছে ইসি। ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ইসির জন্য একটি নির্ধারিত সেশন রয়েছে।
ডিসেদের উদ্দেশে ইসির কী ধরনের বার্তা থাকবে, এমন প্রশ্নের জবাবে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘যেহেতু নির্বাচন কমিশনের কাজ হলো নির্বাচন করা। আর নির্বাচনের “পার্ট অ্যান্ড পার্সেল” হচ্ছে মাঠ প্রশাসন, জেলা প্রশাসকেরা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপালন করেন, পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকে। সে ক্ষেত্রে এবার যেহেতু বর্তমান নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং এ নির্বাচন না হওয়ার কোনো বিকল্প নেই; একটা উত্তম নির্বাচন করতে চাচ্ছি আমরা এবং যেকোনো মূল্যে এটি করতে হবে— এই মেসেজ আমরা দেওয়ার চেষ্টা করব।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ইতিপূর্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যেসব নির্বাচন হয়েছে, সেগুলো মাঠ প্রশাসনকে দিয়েই হয়েছে। সুতরাং সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের চাপ বা প্রভাব থাকবে না। তাই তাঁরা আশাবাদী, এবারও সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন হবে।
আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে থাকতে পারবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমাদের এ বিষয়ে বলার সময় এখনো আসেনি। আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে। অপেক্ষা বলতে আরও সময় লাগবে। এ বিষয়ে আমরা এখনো কিছু বলতে চাচ্ছি না। সময়ই বলে দেবে, সময়ই আমাদের গাইড করবে। সময়ই বলবে, আমরা কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।’
সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সীমানা নির্ধারণ একটি জটিল প্রক্রিয়া। বিদ্যমান আইন যদি সংশোধন করা হয়, তাহলে ইসি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। কমিশনও আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শুরুর ‘জট’ খুলছেই না
পেসার নায়ুচির লেন্থ বলে আত্মঘাতি শট খেলে স্লিপে ক্যাচ দিলেন সাদমান ইসলাম। বেনেট সামনে ঝাঁপিয়ে বল তালুবন্দি করলেন অতি সহজে।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টেস্টের নবম ওভার চলছিল। বলের উজ্জ্বলতা একটুও হারায়নি। উইকেট থেকে জিম্বাবুয়ের দুই পেসার তেমন কোনো সাহায্যও পাচ্ছিলেন না। হালকা সিমের মুভমেন্ট ছিল যেটা নতুন বলে স্বাভাবিকভাবেই থাকে। উইকেটের জন্য ব্যাটসম্যানদের ‘ভুলের’ অপেক্ষায় অতিথিরা।
সাদমান নিজের উইকেট ছুঁড়ে অতিথিদের মুখে ফুটিয়েছেন হাসি। সামদানের (১২) আউটে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। এক ওভার পর সঙ্গী মাহমুদুল হাসান জয়ও পথ হারালেন। একই পেসারের বলে ক্যাচ দিলেন উইকেটের পেছনে আলগা শটে। তার রান ১৪। ৩২ রানে বাংলাদেশের দুই ওপেনার সাজঘরে।
আরো পড়ুন:
ক্যাচ প্র্যাকটিস করে আউট শান্ত
নাহিদকে নিয়ে উইলিয়ামসের মন্তব্যে শান্তর ‘খোঁচা’
শুরুর লড়াইয়ে আবার ব্যাকফুটে বাংলাদেশ। ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে মুমিনুল ও শান্ত ৬৬ রান যোগ করেন। কিন্তু বাংলাদেশের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইনিংসের শুরুতে রান না পাওয়া। যেই ‘জট’ খুলছেই না।
টেস্ট ক্রিকেটে জুটির বিকল্প নেই। ভালো রান, বড় রান করতে হলে জুটি গড়তেই হবে। সাদা পোশাকে সঙ্গ দিয়ে ব্যাটিং করতে না পারলে, দলের হাল ধরতে না পারলে লড়াই করা যায় না। তাতে পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় অধিংকাশ সময়ই। একক নৈপূণ্যে এই ফরম্যাটে লড়াই অধরাই থাকে। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। ২৫ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে তোলার কথা ফুটে উঠে।
অথচ মাঠে নেমেই শুরুতে বিপর্যয়ে পড়তে হয়। নতুন বলে উইকেট হারানো নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা। এই টেস্টে মাঠে নামার আগে ৩১ ইনিংসে ওপেনিংয়ে কোনো সেঞ্চুরির জুটি ছিল না। সিলেটে প্রথম ইনিংসে সংখ্যাটি আরো বেড়েছে। ২০২২ সালে ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকির হাসান ১২৪ রানের জুটি গড়েছিলেন। এরপর পাঁচটি জুটি ইনিংস উদ্বোধনে মাঠে নেমেছিল। কিন্তু কোনো জুটিই দলের রান তিন অঙ্কে নিয়ে যেতে পারেননি। ভাবনার সবচেয়ে বড় জায়গা হলো, ৩১ ইনিংসের ১১টিতেই দুই অঙ্কে যেতে পারেনি। ফিফটি রানের জুটি কেবল ২টি। নতুন বলে পেসারদের বিপক্ষে ওপেনারদের যে দূর্বলতা তা ফুটে উঠেছে এসব হতশ্রী পরিসংখ্যানেই।
অবশ্য ওপেনিং জুটি বাংলাদেশের জন্য সব সময়ই মাথা ব্যথার কারণ ছিল। ১৫১ টেস্ট খেলা বাংলাদেশের ওপেনিং জুটিতে সেঞ্চুরি এসেছে কেবল নয়টি। যেখানে দেশের সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল ছিলেন সাতটিতে। তার সঙ্গে ইমরুল কায়েস চারটিতে, সৌম্য, মাহমুদুল হাসান জয় ও জুনায়েদ সিদ্দিকী একটি করে জুটিতে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন। এছাড়া জাভেদ ওমর ও নাফিস ইকবাল এবং নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকির হাসান জুটি একটি করে সেঞ্চুরির জুটি পেয়েছেন।
টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে তোলার যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন অধিনায়ক শান্ত সেজন্য লড়াই শুরু হবে ইনিংসের শুরু থেকে। অথচ ওপেনাররা এখনো পায়ের নিচের মাটি শক্ত করতে পারছেন না। পারফরম্যান্সে নেই জোর। নিবেদনে প্রবল ঘাটতি। তাতে ভুগছে দলও। জাকির, সামদান, মাহমুদুল ঘুরিয়ে ফিরিয়ে টেস্টে ওপেনিং করছেন। আশানুরূপ পারফরম্যান্স নেই তাদের ব্যাটে।
মাহমুদুল ১৭ টেস্টে ৩২ ইনিংসে ৭২৮ রান করেছেন ২২.৭৫ গড়ে। সাদমান ২০ টেস্টে ৩৯ ইনিংসে ৯২৩ রান করেছেন ২৪.৯৪ গড়ে। জাকির ১৩ টেস্টে ২৬ ইনিংসে ৫৯৩ রান করেছেন ২৩.৭২ গড়ে। তিনজনই একেবারে কাছাকাছি পর্যায়ের। সামনে এগিয়ে যেতে বিকল্প খুঁজতে হবে কিনা সেই প্রশ্নটাও উঠছে সিলেটে প্রথম ইনিংসে হতশ্রী আউটের পরপরই।
সিলেট/ইয়াসিন/নাভিদ