বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাড়ি নির্মাণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বাড়ি নির্মাণে উপযুক্ত জমি, বাড়ির ডিজাইন, নির্মাণ কৌশল ও ভালো সামগ্রী ব্যবহারসহ নানা বিষয় রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে সমকালের সঙ্গে কথা বলেছেন নীড় বিল্ডিং ডিজাইন অ্যান্ড কন্সট্রাকশনের প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবির রবিন।

একটি ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়গুলোর ওপর নজর দেওয়া উচিত সে সম্পর্কে প্রকৌশলী হুমায়ুন বলেন, ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে অনেকগুলো বিষয় আছে। সবচেয়ে প্রথম ভালো একজন ইঞ্জিনিয়ার বা অর্কিটেক্ট দিয়ে ডিজাইন করানো উচিত। তবে আমাদের দেশে বেশিরভাগ মালিক বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে সঠিক নিয়ম অনুসরণ করতে চান না। একটা বাড়ি করতে গেলে মোট জমির ৩৩ শতাংশ ছেড়ে দিতে হয়। তবে জমির মালিকরা এসে বলেন, কীভাবে পুরো জমিটা ব্যবহার করে তাকে বাড়ি করে দেওয়া যায়। বাড়ি নির্মাণে আমাদের সঠিক নীতি অনুসরণ করা উচিত। চারপাশে জায়গা ছেড়ে রাখলে ভবন যেমন সুন্দর হবে, পুরো পরিবেশটাও দেখতে সুন্দর হবে। আরেকটা দিক হলো- বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে খুব ভালো মানের সামগ্রী ব্যবহার করতে হবে, রড-সিমেন্টসহ অন্যান্য সামগ্রী যেন খুব ভালো মানের হয়।

আমাদের দেশে অনেক কোম্পানির অনেক ধরনের সিমেন্ট আছে, এসবের মধ্যে কোনটা ভালো- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রকৌশলী হুমায়ুন বলেন, আমরা বাড়ির ডিজাইন করার সময় সিমেন্টের পিএসআই ৩০০ ধরে ডিজাইন করি। সম্প্রতি ঢালাই স্পেশাল নামে একটি সিমেন্ট বাজারে এসেছে। তাদের টেস্ট রিপোর্টগুলো দেখেছি। এই সিমেন্টটা র‌্যাপিড হার্ডেনিং টাইপের। কনক্রিট ঢালাইয়ের পর একটু সময় লাগে সিমেন্ট জমতে। তবে র‌্যাপিড হার্ডেনিং সিমেন্ট খুব দ্রুত জমাট বাঁধে। আমরা সাধারণত কনক্রিট শাটারিং যেখানে ২১-১৮ দিনে রিমুভ করি সেখানে র‌্যাপিড হার্ডেনিং সিমেন্ট ব্যবহার করলে ১৪-১৫ দিনের মধ্যেই ডিশাটারিং করা যায়। এর ফলে ব্রিক ওয়ালের কাজ দ্রুত করা যায়। সহজভাবে বললে সাধারণ সিমেন্ট ব্যবহারে ১০ তলা ভবন নির্মাণে যে সময় লাগত সেখানে র‌্যাপিড হার্ডেনিং সিমেন্ট ব্যবহার করলে ৬ মাস সময় কম লাগবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ভবন ন র ম ণ স ম ন ট ব যবহ র ভবন ন র ম ণ ড জ ইন

এছাড়াও পড়ুন:

এস আলম দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

এক হাজার ৫৩৯ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীনের নামে আলাদা মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গতকাল মঙ্গলবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান মামলা দুটি করেন। পরে কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে মামলা দুটি করা হয়েছে।’

গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ২৪ আগস্ট ব্যবসায়ী সাইফুল আলমের অবৈধ সম্পদের অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধানে নামে দুদক।

মামলায় সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, ৭৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা মূল্যের সম্পদ অবৈধভাবে অর্জন করে ভোগদখল করে আসছেন তিনি। এজাহারে আরও বলা হয়, সাইফুল আলম ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ অনুযায়ী কোনো ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান একজন পাবলিক সার্ভেন্ট। আয়কর নথি অনুযায়ী করবর্ষ ২০১০-১২ এর রিটার্ন দাখিলের আগ পর্যন্ত তাঁর আগের সঞ্চয় ছিল ৯৭ কোটি ৩৯ লাখ ৮৯ হাজার ৭ টাকা।

২০১১-১২ থেকে ২০২৩-২০২৪ করবর্ষ পর্যন্ত অতীত সঞ্চয়সহ সাইফুল ইসলামের গ্রহণযোগ্য আয় ২৫৬ কোটি ৩৫ লাখ ৫৬ হাজার ৯৭৫ টাকা। এ সময় তাঁর মোট ব্যয় ৯৭ কোটি ৩২ লাখ ৭ হাজার ৯৪০ টাকা।

অনুসন্ধানে দুদক দেখতে পেয়েছে, সাইফুল আলম ৯৫৫ কোটি ৩১ লাখ ৯৩ হাজার ৪৫৯ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। ব্যয়সহ তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ১ হাজার ৫২ কোটি ৬৪ লাখ ১ হাজার ৩৯৯ টাকা। গ্রহণযোগ্য আয় বাদ দিলে তাঁর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৭৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা।

অন্যদিকে, সাইফুল আলমের স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ, তিনি ৭৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৪৫৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক ফারজানার স্থাবর-অস্থাবর, ব্যয়সহ মোট সম্পদের পরিমাণ ৭৫৯ কোটি ৮৭ লাখ ৭৭ হাজার ১৩ টাকা। তাঁর অতীত সঞ্চয়সহ গ্রহণযোগ্য আয় ১৬ কোটি ৩০ লাখ ৭৫ হাজার ৫৬৫ টাকা। বাকি ৭৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৪৫৩ টাকার সম্পদের বৈধ কোনো উৎস নেই, যা তাঁর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

এজাহারে আরও বলা হয়, সাইফুল আলম ও তাঁর স্ত্রীর নামে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সম্পদ রয়েছে। সিঙ্গাপুর, সাইপ্রাস, ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া আইল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশেও স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে আয়কর নথিতে তা অন্তর্ভুক্ত না থাকায় এ সম্পদকে পাচার বলছে দুদক। বিদেশে সম্পদের বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার ওপর নির্ভর করে মামলার তদন্তে তা যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ