চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে ও প্রক্টরের ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় বহিষ্কারাদেশকে ‘একপাক্ষিক’ সিদ্ধান্ত দাবি করে প্রক্টরের পদত্যাগের দাবি জানান তারা।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তানভির মোহাম্মদ হায়দার আরিফের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা মন্তব্যকে ‘কুরুচিপূর্ণ’ আখ্যা দিয়ে তার পদত্যাগ দাবি করেন।

মানববন্ধনে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরোজ তৃণা বলেন, ‘আমি ওই হলের একজন আবাসিক শিক্ষার্থী। যেখানে প্রক্টরের দায়িত্ব ছিল আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সেখানে তিনি বিশৃঙ্খলাকে উসকে দিয়েছেন। রাত ১২টায় একদল শিক্ষার্থী কীভাবে মেয়েদের হলের সামনে গিয়ে আতঙ্ক ছড়ায়? অথচ প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আমাদের হলের মেয়েদেরই বহিষ্কার করেছে। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক।’

ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী আল মাশনূন বলেন, ‘এই প্রশাসন একপক্ষীয় বিচার করে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা যারা এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কথা বলেছি, তাদেরকে হানিট্র্যাপ বলে অপমান করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, তারা যেন বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে এবং শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চায়। অন্যথায়, আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।’

ইতিহাস বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাহসান হাবীব বলেন, ‘নিরাপত্তার দাবি তোলার কারণে শিক্ষার্থীদের দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এটি চরম অন্যায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট মনোভাবের প্রকাশ। আমরা তাদের এ ধরনের আচরণকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।’

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানান, তারা প্রশাসনের কাছে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য সময় দিচ্ছেন। যদি প্রশাসন দ্রুত এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা না করে, তাহলে তারা আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেবেন।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলে ছাত্রীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির বাগবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। ওই হলের সামনে রাখা নৌকা আকৃতির বসার স্থান ভাঙচুর করা নিয়ে প্রথমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে সহকারী প্রক্টরের গায়ে হাত তোলেন শেখ হাসিনা হলের শিক্ষার্থী আফসানা এনায়েত এমি। শিক্ষার্থীরা ওই হলের ছাত্রীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগও করেছিলেন। পাশাপাশি ভিডিও ধারণ করতে যাওয়া ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকদেরও লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছিল। পরে এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পদত য গ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

গ্রাফিতি মুছে বিএনপি নেতাদের নাম, প্রতিবাদ করায় হামলার অভিযোগ

জুলাই-আগস্টের গ্রাফিতি মুছে ফেলা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। এতে দু’জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। সোমবার দুপুরে পাবনার ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- ছাত্র মাহবুবুর রহমান জিহাদ ও তানজিদ জামান দিহান। ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। দিহান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঈশ্বরদী উপজেলা সমন্বয়ক বলে জানা গেছে।

ঘটনার পর ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীর মধ্যে ধাওয়া, বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন এবং পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

সম্প্রতি ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের দেয়ালে জুলাই-আগস্ট গ্রাফিতি মুছে ফেলা হয়। সেখানে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের নাম লেখা হয়। এর প্রতিবাদে সোমবার মানববন্ধনের আয়োজন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। 

অন্যদিকে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের কর্মী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এতে নেতৃত্ব দেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম নয়ন। বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা মাহবুবুর রহমান পলাশ, ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র আনোয়ার হোসেন জনি, খন্দকার তৌফিক আলম সোহেল, মামুনুর রহমান নান্টু প্রমুখ।

সমাবেশের একপর্যায়ে উভয়পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিলে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেন। অধিকাংশ দৌড়ে পালিয়ে গেলেও কয়েকজন আহত হন।

আহত তানজিদ জামান দিহান বলেন, ঈশ্বরদীর বিভিন্ন দেয়ালে আঁকানো গ্রাফিতি মুছে ফেলা ও জুলাই অভ্যুত্থানকে মুছে ফেলার প্রতিবাদে আমাদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি প্রতিহত করতে ছাত্রদল নেতা রফিকুল ইসলাম নয়ন প্রকাশ্যে তার লোকজন নিয়ে হামলা চালিয়েছে।  

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিতে সোমবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে ঈশ্বরদী উপজেলা, পৌর ও কলেজ ছাত্রদল। ঈশ্বরদী প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম নয়ন।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয় ছাত্রদলের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি বানচাল করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসীরা মানববন্ধন করার চেষ্টা করেছিল, যা ছাত্রজনতা প্রতিহত করেছে।

ঈশ্বরদী থানার ওসি শহিদুল ইসলাম শহিদ বলেন, ছাত্রদের ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ এলাকায় উত্তেজনা ও ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এসব ঘটনায় কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি বলে জানান ওসি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবিতে সড়ক অবরোধ, স্কুলে তালা
  • গুম শিক্ষার্থীদের ফেরত দাবি জবি হিউম্যান রাইটস সোসাইটির
  • রাসূল (সা.)-কে নিয়ে কটুক্তিকারী ইবি কর্মকর্তার বহিষ্কার দাবি
  • ফটো জার্নালিস্টদের জন্য বরাদ্দ ভবনের একাংশ অবৈধ দখলের প্রতিবাদ
  • জাবিতে অবিলম্বে নির্মাণ কাজ শুরুর দাবি
  • বোয়ালমারীতে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন
  • কৃষিবিদদের বৈষম্য নিরসনের দাবি রাবি শিক্ষার্থীদের
  • পুঁজিবাজারে শৃঙ্খলা অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান ডিবিএর
  • কৃষিবিদদের প্রতি বৈষম্য নিরসনের দাবি গোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের
  • গ্রাফিতি মুছে বিএনপি নেতাদের নাম, প্রতিবাদ করায় হামলার অভিযোগ