বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় তারুণ্যের অবদানের স্মরণে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় আহত ছাত্রদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের আয়োজনে পরিষদের এনেক্স ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার। 

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুদ্দীন মোহাম্মদ শিবলি নোমান, সদস্য দেবপ্রসাদ দেওয়ানসহ পরিষদের অন্যান্য সদস্যরা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদস্য মিনহাজ মুরশীদ।

আহতদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন লংগদু উপজেলার মো.

আমান উল্ল্যাহ। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘‘আমরা ২৪ কে অন্তরে ধারণ করে আগামীর জন্য স্বপ্ন দেখতে চাই। যে দেশের স্বপ্ন নিয়ে আমরা গণঅভ্যুত্থানে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম, সেই বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা আগামীতেও সর্বদা কাজ করে যাবো।’’ কিছুটা বিলম্বে হলেও জেলা পরিষদ গণঅভ্যুত্থানে আহতদের স্মরণ করায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। 

আরো পড়ুন:

সাজেকে ঢল নেমেছে পর্যটকদের, খালি নেই রিসোর্ট 

‘পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিরা আয়নাঘরে বন্দি’

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার বলেন, ‘‘গণঅভ্যুত্থানে আহতদের জন্য কিছু করতে পেরে আমরা সত্যিই খুব গর্বিত। হয়ত খুব বেশি কিছু করতে পারিনি, কিন্তু ভবিষ্যতে আমাদের পক্ষ থেকে আরো কিছু করার চেষ্টা থাকবে।’’

অনুষ্ঠানে মোট আট জন আহত ছাত্রকে সংবর্ধনা ও নগদ অর্থের চেক তুলে দেন অতিথিরা। যার মধ্যে দুইজনকে জনপ্রতি ১ লাখ টাকা, তিনজনকে জনপ্রতি ৪০ হাজার টাকা এবং তিনজনকে জনপ্রতি ৩০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়।
 

ঢাকা/শংকর/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণঅভ য ত থ ন আহতদ র

এছাড়াও পড়ুন:

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: আহতদের দেখতে বার্ন ইনস্টিটিউটে প্রধান উপদেষ

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গিয়ে ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার খোঁজ নিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

শনিবার (২৬ জুলাই) রাত ৯টা ১০ মিনিটে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে যান তিনি। 

হাসপাতালে পৌঁছে প্রধান উপদেষ্টা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিনের কাছ থেকে সেদিনের ঘটনার বর্ণনা শোনেন এবং আহত রোগীদের বর্তমান অবস্থা জানতে চান।

আরো পড়ুন:

অভিযানে ছুরিকাঘাতে আহত পুলিশ কর্মকর্তা হাসপাতালে

রূপগঞ্জে লোহা গলানোর ভাট্টি বিস্ফোরণে ৩  শ্রমিক দগ্ধ 

অধ্যাপক নাসির জানান, বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের মাল্টিডিসিপ্লিনারি কনসালটেশন বোর্ডের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। রোগীদের আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুযায়ী মূল্যায়ন করা হয়েছে এবং সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশি চিকিৎসকদের পাশাপাশি বিদেশি বিশেষজ্ঞদেরও পরামর্শ গ্রহণ করা হচ্ছে।

তিনি জানান, সবার সম্মিলিত মূল্যায়নে বর্তমানে বার্ন ইনস্টিটিউটে চারজন ক্রিটিক্যাল, ৯ জন সিভিয়ার এবং ২৩ জন ইন্টারমিডিয়েট ক্যাটাগরির রোগী আছেন। এই মূল্যায়ন রোগীর অবস্থা অনুযায়ী সময়ে সময়ে পরিবর্তন হতে পারে বলেও জানান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা চিকিৎসার জন্যে কোনো ধরনের যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম, ওষুধ বা অন্যকিছুর প্রয়োজনীয়তা আছে কি না জানতে চান।

পরিচালক বলেন, ‍এই মুহূর্তে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্যে প্রয়োজনীয় সব কিছু সরকারের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। এর বাইরে যে দুয়েকটি সরঞ্জামের প্রয়োজন ছিল, সেগুলো সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদল সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা হতাহতের বিস্তারিত জানতে চাইলে বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান ঘটনার বিশদ বর্ণনা দিয়ে বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি হাসপাতালগুলোতে দগ্ধ রোগীদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে হাসপাতালের চিকিৎসকরা অতিদ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে প্রায় সবাইকে বার্ন ইন্সষ্টিটিউটে এবং কম্বাইন্ড মিলিটারি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। ঘটনার পরপরই মন্ত্রণালয় থেকে বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালককে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছিল। চিকিৎসক, নার্সসহ সব সেবাদানকারীরা প্রস্তুত ছিলেন এবং একসঙ্গে জরুরি বিভাগে আগত প্রায় ৩০ জন দগ্ধ রোগীকে দ্রুত চিকিৎসাসেবা দিতে সক্ষম হয়েছেন।

তিনি আরো জানান, প্রায় ১০টি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে পরবর্তীতে অন্য হাসপাতালে রোগীদের দ্রুত স্থানান্তরিত করার কারণে প্রথমদিকে নিহত ও আহত রোগীর সংখ্যা নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছিল। কয়েকটি দেহাবশেষ ছিল, যেগুলো ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করতে হয়েছে, যার ফলে কিছু সময় লেগেছে।

অধ্যাপক সায়েদুর জানান, রোগীদের স্থানান্তরের সময়ে অ্যাম্বুলেন্সের অভাব প্রকটভাবে বোঝা গেছে। এই দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশের জরুরি স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতাগুলো দৃশ্যমান হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস অবিলম্বে এবিষয়ে করণীয় সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান। 

নিহতদের পরিবার ও আহতদের মানসিক সুস্থতা নিশ্চিতে ও ট্রমা কাটিয়ে উঠতে কাউন্সেলিংয়ের প্রতি জোর দেন তিনি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। এ কার্যক্রমে সব নিহতের পরিবার, আহত ও আহতদের পরিবার এবং মাইলস্টোন স্কুলের প্রত্যেককে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

পাশাপাশি, দগ্ধ রোগীদের নিকটাত্মীয়দের হাসপাতালে অবস্থানের সময়ে তাদের প্রতি যত্নশীল হওয়ার বিষয়ে পরিচালককে নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, “রোগীদের সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আমরা আন্তরিক ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”

বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত সব চিকিৎসক, নার্সসহ সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। একইসঙ্গে, বিদেশ থেকে যারা এই বিপদের সময়ে বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তাদেরকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।

হাসপাতাল পরিদর্শনকালে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/হাসান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ১৫ মামলার চার্জশিট
  • নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জুলাই ৩৬ কর্ণার’ উদ্বোধন
  • জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগ জাতি ভুলে যেতে পারে না: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
  • বার্ন ইনস্টিটিউটে লাইফ সাপোর্টে ১ জন, আইসিইউতে ৩ জন
  • ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ'র জরুরি সভা অনুষ্ঠিত
  • ঢাবিতে গণঅভ্যুত্থানবিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন
  • মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: আহতদের দেখতে বার্ন ইনস্টিটিউটে প্রধান উপদেষ
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান রুখে দাঁড়াবার এক মহাকাব্য: সংস্কৃতি উপদেষ্টা
  • ভুল ট্রেনে টাঙ্গাইলে গিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার তরুণী, গ্রেপ্তার ৩
  • টাঙ্গাইলে ট্রেনের যাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৩