ইউক্রেন বিষয়ে জরুরি বৈঠকে বসতে চলেছেন ইউরোপের নেতারা
Published: 16th, February 2025 GMT
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী সপ্তাহে জরুরি সম্মেলনে বসতে চলেছেন ইউরোপের নেতারা। এ যুদ্ধ অবসানে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে যাওয়ার কথা এরই মধ্যে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
কিন্তু ওই আলোচনায় ইউরোপকে যুক্ত করা হবে না—ইউক্রেন বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত কেইথ কেলগ গতকাল শনিবার স্পষ্ট করেই এ কথা বলেছেন। এ নিয়ে উদ্বেগ থেকে ইউরোপের দেশগুলো জরুরি ওই সম্মেলনের আয়োজন করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাদোস্লাভ সিকোরস্কি বলেছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ জরুরি ওই সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন। তবে মাখোঁ এখনো সম্মেলনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেননি।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার প্যারিসে ওই সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। স্টারমার বলেন, ‘আমাদের জাতীয় নিরাপত্তায় এমন মুহূর্ত ২০-৩০ বছরে একবারই আসে এবং এটা স্পষ্ট যে ন্যাটো (পরিচালনায়) ইউরোপকে আরও বড় ভূমিকা নিতে হবে।’
ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের পথ খুঁজে পেতে কয়েক দিনের মধ্যে আলোচনায় বসতে চলেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা, বৈঠক হবে সৌদি আরবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওসহ হোয়াইট হাউসের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা থাকবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছেন, ইউক্রেনকেও ওই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তাঁর দেশ এমন কোনো আমন্ত্রণ পায়নি।
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনায় ইউরোপকে না রাখার পক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে ট্রাম্পের দূত কেইথ কেলগ বলেছিলেন, এর আগের আলোচনাগুলো ব্যর্থ হয়েছিল; কারণ, অনেক বেশি পক্ষ সেগুলোতে জড়িত ছিল।
ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যস্থতায় ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে লড়াই বন্ধে ২০১৫ সালে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই হয়েছিল, এটি মিনস্ক চুক্তি নামে পরিচিত। ব্যর্থ ওই চুক্তি ইউরোপকে এখনো তাড়া করে ফেরে।
ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ন্যাটোসহ আরও কয়েকটি বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ইউরোপের নেতাদের মতপার্থক্যের জের যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। কিয়ার স্টারমার জানেন, এই দূরত্ব মেটাতে যুক্তরাজ্যকে ভূমিকা রাখতে হবে।
এ মাসের শেষ দিকে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যুক্তরাষ্ট্র যাবেন স্টারমার। ওই সময় তিনি ট্রাম্পের কাছে ইউরোপের নেতাদের অবস্থান তুলে ধরবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্টারমার ওয়াশিংটন থেকে ফিরে আসার পর ইউরোপীয় নেতারা প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলেও জানা যাচ্ছে।
কিয়ার স্টারমার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের ঐক্য ধরে রাখা নিশ্চিত করতে যুক্তরাজ্য কাজ করবে।
স্টারমার বলেন, ‘আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এমন মুহূর্ত ২০-৩০ বছরে একবারই আসে, যেখানে আমাদের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয় এবং আজ আমরা রাশিয়ার হুমকির মুখোমুখি। এটা পরিষ্কার যে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে ও রাশিয়া যে হুমকি দিচ্ছে, তা মোকাবিলা করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে গেলে ইউরোপকে ন্যাটোতে আরও বড় ভূমিকা রাখতে হবে।’
আরও পড়ুনরাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনায় ইউরোপকে যুক্ত করা হবে না: ট্রাম্পের দূত১৩ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন য দ ধ ইউর প র ন ত বল ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের চিঠির জবাব দিয়েছে ইরান
পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে নতুন চুক্তির আহ্বান জানিয়ে ইরানকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চিঠির জবাব দিয়েছে তেহরান। ওমানের মাধ্যমে এই জবাব দেওয়া হয়। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এ কথা জানিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক নিবন্ধে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ট্রাম্পের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের জবাব ‘ওমানের মাধ্যমে যথাযথভাবে পাঠানো হয়েছে’।
আরাগচি বলেন, ‘সর্বোচ্চ চাপ ও সামরিক হুমকির মধ্যে থাকা অবস্থায় সরাসরি আলোচনায় যুক্ত না হওয়ার আমাদের নীতি এখনো বহাল আছে। তবে অতীতের মতো পরোক্ষ আলোচনা চলতে পারে।’
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জবাবের মধ্যে একটি চিঠি রয়েছে, যেখানে বর্তমান পরিস্থিতি ও ট্রাম্পের চিঠির বিষয়ে আমাদের অভিমত বিস্তারিত তুলে ধরেছি।’
আরও পড়ুনইরানের নেতাকে ট্রাম্পের চিঠি০৭ মার্চ ২০২৫‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের’ নীতির অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০১৮ সালে তাঁর প্রথম মেয়াদে ইরানের সঙ্গে হওয়া পারমাণবিক চুক্তি থেকে একতরফা সরে আসেন এবং দেশটির ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার শর্তে ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রভাবশালী দেশগুলোর সঙ্গে ওই চুক্তি করেছিল ইরান।
৭ মার্চ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় বসতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে তিনি চিঠি লিখেছেন। তেহরান আলোচনায় বসতে রাজি না হলে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাধ্যমে ওই চিঠি দেওয়া হয়েছিল। চিঠিতে আলোচনায় বসার জন্য ইরান দুই মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।