নারায়ণগঞ্জে অধ্যক্ষের বদলির আদেশ বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
Published: 16th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের বদলির আদেশ বাতিলের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার দুপুর ১২টায় কলেজ প্রাঙ্গণে তাঁরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদকে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে। ওই আদেশ বাতিলের দাবিতে আজ দুপুরে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে কলেজ প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তাঁরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর বদলির আদেশ বাতিল চেয়ে লিখিত আবেদন জমা দেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, ছয় মাস আগে অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ নারায়ণগঞ্জে আসেন। তিনি অত্যন্ত ভালো একজন শিক্ষক। অধ্যক্ষ হওয়া সত্ত্বেও তিনি নিজে বিভিন্ন ক্লাসে গিয়ে ইংরেজি পড়ান। তিনি আসার পর শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র প্রদর্শন করার উদ্যোগ নেন। এতে শিক্ষার্থীরা ভুলত্রুটিগুলো ধরতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী সমাধানের উদ্যোগ নিতে পারেন। এ জন্য শিক্ষার্থীরা তাঁর বদলির আদেশ বাতিলের দাবি জানান।
যোগাযোগ করলে অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি চাকরি করি। সরকারি আদেশ হয়েছে বদলির। আমি আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি অধ্যক্ষ। কিন্তু আমি ইংরেজির অধ্যাপক। আমি প্রতিনিয়ত শ্রেণিকক্ষে ইংরেজি ক্লাস নিতাম। সাধ্য অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও কলেজের উন্নয়ন করার চেষ্টা করেছি। এ কারণে হয়তো শিক্ষার্থীরা আমার প্রতি ভালোবাসা থেকে এটা করেছে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের নেতাকে বাসা থেকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী
গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সদস্য সেলিম মাহমুদকে তাঁর বাসা থেকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার রেলস্টেশন এলাকার বাড়ি থেকে তাঁকে আটক করা হয়।
সেলিম মাহমুদের স্ত্রী বিথী মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, রাত একটার দিকে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের বাড়ির গেট ভেঙে ঘরে ঢুকে সেলিম মাহমুদকে তুলে নিয়ে যান। এ সময় বাসা থেকে তিনটি মুঠোফোন নিয়ে যান এবং তাঁদের নবম শ্রেণিপড়ুয়া ছেলে ওয়াজিদ মাহমুদকে মারধর করেন। তাঁর স্বামী উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন বলে জানান তিনি।
বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক নিখিল দাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেলিম মাহমুদ দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে কাজ করছেন। যেখানেই শ্রমিকেরা সমস্যায় পড়েন, সেলিম মাহমুদ তাঁদের পাশে দাঁড়ান। রবিনটেক্স কারখানায় ইউনিয়ন গঠনের জন্য গত দেড় বছর আগে ওই কারখানার শ্রমিকেরা শ্রম আদালতে কমিটি জমা দিয়েছিল। এটা বানচাল করার জন্য কয়েক দিনে ইউনিয়ন নেতাসহ ২২ জন শ্রমিককে আটক করা হয়েছে। শ্রমিকদের আটকের প্রতিবাদ করার কারণেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। যে মুজিববাদের বিরুদ্ধে এত কথা হচ্ছে, অথচ মুজিবের আমলের আইন দিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হলো। এটা কী অসংগতি নয়। আমাদের প্রশ্ন, শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানো কি অপরাধ? আমরা তাঁর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।’
নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (গ-সার্কেল) মেহেদী ইসমাইল বলেন, রূপগঞ্জের পোশাক কারখানা রবিনটেক্সে শ্রমিক আন্দোলনের উসকানিদাতা হিসেবে তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনী সেলিম মাহমুদকে আটক করে। পরে তাঁকে রূপগঞ্জ থানায় সোপর্দ করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা ও ভাঙচুরের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে রবিনটেক্স বাংলাদেশ লিমিটেড নামের একটি তৈরি পোশাক কারখানায় ছাঁটাই বন্ধের দাবিতে শ্রমিকেরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে যৌথ বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্যসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন। এ ঘটনায় হামলা, ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে রূপগঞ্জ থানায় দুটি মামলা করা হয়।