সাবেক এমপি ছানোয়ার হোসেন গ্রেপ্তার
Published: 16th, February 2025 GMT
রাজধানীর ভাটারায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় টাঙ্গাইল-৫ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেনসহ (৫৪) তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির ভাটারা থানা পুলিশ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমানের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার অন্য দু’জন হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি আবু মুসা আনসারী (৫৬) ও ভাটারা থানার ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি সালাউদ্দিন সালেক ওরফে সালেক ঢালী (৫৮)। শনিবার গভীর রাতে ভাটারা থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ভাটারা থানা সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সকাল ১০টায় ভাটারা থানার জে ব্লকের ৯ নম্বর রোডে সড়কে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী মিঠুন ফকির (২৮) হামলায় আহত হন। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে ১৯ ডিসেম্বর ভাটারা থানায় একটি মামলা করেন। গ্রেপ্তার সালাউদ্দিন সালেক ওরফে সালেক ঢালী এ মামলায় এজাহারনামীয় ও এমপি ছানোয়ার হোসেন ও আবু মুসা আনসারী মামলার সন্দেহভাজন আসামি। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড এমপ
এছাড়াও পড়ুন:
ইতালি নেওয়ার নামে লিবিয়ায় নির্যাতনে ছেলের মৃত্যু, কাঁদছে পরিবার
পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে ভিটেমাটি বিক্রি করে প্রবাসে পাড়ি জমান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার তরুণ মো. রাসেল মিয়া (২৫)। অবৈধপথে দালালের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে তার ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। তবে তার আগেই দালাল চক্রের নির্যাতনে লিবিয়ায় শুক্রবার (২১ ফ্রেরুয়ারি) তার মৃত্যু হয়েছে বলে স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন।
শনিবার (২২ ফ্রেরুয়ারি) দুপুরে এক প্রবাসীর মাধ্যমে রাসেলের মৃত্যুর খবর জানতে পারে পরিবার। নিহত রাসেল নাসিরনগর উপজেলার ধরমণ্ডল ইউনিয়নের ধরমণ্ডল গ্রামের লাউস মিয়া ও আউলিয়া বেগমের বড় ছেলে।
রাসেলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাঁচ ভাই–বোনের মধ্যে রাসেল ছিল সবার বড়। ২০২৪ সালের শুরুর দিকে ইতালি যাওয়ার জন্য লিবিয়ায় পাড়ি জমান তিনি। পরিবারের শেষ সম্বল পৈতৃক ভিটা বিক্রি করে ও স্বজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে মোট ১৫ লাখ টাকা দিয়ে একই গ্রামের দালাল লিলু মিয়ার মাধ্যমে তিনি লিবিয়ায় যান। কথা ছিল লিবিয়া থেকে তাকে ইতালিতে পাঠানো হবে। কিন্তু লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর তাকে স্থানীয় দালাল চক্রের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় নির্যাতন। দালাল চক্র রাসেলকে নির্যাতন করে ভিডিও বাংলাদেশে পাঠিয়ে পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন দফায় আরও ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। সর্বশেষ কয়েক দিন আগে আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করে চক্রটি। টাকা দিতে না পারায় দালাল চক্রের সদস্যরা তাকে নির্যাতন করা শুরু করেন। এতে শুক্রবার তার মৃত্যু হয়। আজ (শনিবার) দুপুরে এক প্রবাসীর মাধ্যমে স্বজনেরা তার মৃত্যুর সংবাদ জানতে পারেন।
রাসেলের বাবা আউয়াল মিয়া বলেন, “আমার জীবনের শেষ সম্বল বসতভিটা ও ফসলি জমি বিক্রি কইরা কয়েক ধাপে টাকা দিছি। আরও টাকা চাইছিল তারা। দিতে না পারায় আমার ছেলেরে হত্যা করছে দালাল লিলু মিয়া ও মাফিয়া চক্র।”
তিনি বলেন, “লিবিয়ায় যাওয়ার পর ছেলের কপালে জোটে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। মাফিয়া চক্র রাসেলকে নির্যাতন করে একাধিকবার ভিডিও পাঠিয়ে তাদের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। আরও ১০ লাখ টাকা চেয়েছিল। টাকা না দেওয়ায় বিষাক্ত ইনজেকশন দিয়ে ছেলেকে হত্যা করেছে।”
রাসেলের মৃত্যুর বিষয়টি জানাজানির পর গণমাধ্যমকর্মীরা ধরমণ্ডল গ্রামের দালাল লিলু মিয়ার বাড়িতে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে পরিবার নিয়ে তিনি পলাতক। একাধিকবার চেষ্টা করেও মুঠোফোন না ধরায় লিলু মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ধরমণ্ডল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, “রাসেলকে বাঁচাতে তার পরিবার লাখ লাখ টাকা দিয়েছে। টাকা দিয়েও ছেলেকে বাঁচাতে পারেনি। যারা মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই। যাতে রাসেলের মতো আর কোনো তরুণের অকালে মরতে না হয়।”
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল আলম বলেন, “স্থানীয় বিভিন্ন মাধ্যমে ওই তরুণের মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পেরেছি। ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
ঢাকা/রুবেল/টিপু