সাভারে গ্যাসের আগুনে দগ্ধ আরও একজনের মৃত্যু
Published: 16th, February 2025 GMT
সাভারের আশুলিয়ায় বাসাবাড়ির রান্নার কাজে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ আরও একজন মারা গেছে। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সুমন মিয়া (৩০) নামে একজন মারা যান। তার শরীরের ৯৯ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
এর আগে শিউলি আক্তার (৩২) নামে একজন মারা গেছেন। রোববার রাত ৩টা ২৫ মিনিটে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তাঁর মৃত্যু হয়। বার্ন ইনস্টিউটের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান জানান, শিউলি আক্তারের শরীরের ৯৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। ওই দুর্ঘটনায় দগ্ধ আরও ৯ জন জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ইনস্টিটিউট সূত্র জানিয়েছে- দুর্ঘটনায় আটজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে চারজনের অবস্থা বেশি গুরুতর যাদের শরীরে যথাক্রমে ৯৯ শতাংশ, ৯৫ শতাংশ, ৪২ শতাংশ ও ২৭ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। শারমিন নামে দগ্ধ একজনকে মেকানিকাল ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়েছে। তার শরীরে ৪২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
শুক্রবার রাতে আশুলিয়ার গোমাইল এলাকায় আমজাদ ব্যাপারীর আবাসিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় গ্যাস সিলিন্ডারের এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী ও শিশুসহ দগ্ধ হয়েছেন ১১ জন। আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালে দগ্ধদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার রাতে আশুলিয়ার গোমাইল এলাকায় আমজাদ ব্যাপারীর আবাসিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে।
দগ্ধরা অন্যরা হলেন- সূর্য্য বানু (৫৫), জহুরা বেগম (৭০), মনির হোসেন (৪৩), সোহেল (৩৮), শারমিন (২৫), ছামিন মাহমুদ (১৫), মাহাদী (৭), সোয়ায়েদ (৪) ও সুরাহা (৩)।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জীবনে বহু কিছু করার পর ‘ধৈর্য-সহ্যে’ কপাল খুলছে গোলাম রসুলের
সবে সন্ধ্যা নেমেছে শহরের বুকে। খুলনা নগরের সেন্ট যোসেফ উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের ফুটপাতে ছোট একটা দোকানের সামনে বেশ ভিড়। অর্ডার দিয়ে কেউ টুলে বসে আছেন, কেউ আবার প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করছেন। বিক্রেতা দুজনের চার হাত যেন চলছে সমানতালে। একজন ছোট ছোট ফুচকা বানাচ্ছেন, তো আরেকজন ভেলপুরির প্লেট সাজাচ্ছেন। আবার কখনো একজন পেঁয়াজ–শসা কুচি করে নিচ্ছেন আর আরেকজন বিল রাখা বা টিস্যু এগিয়ে দেওয়ায় ব্যস্ত।
নগরের আহসান আহমেদ রোডের সেন্ট যোসেফ উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের একটি ছোট ফুচকা ও ভেলপুরির ভ্রাম্যমাণ দোকানের চিত্র এটি। দোকানের নামটাও বেশ অন্য রকম। ‘ধৈর্য-সহ্য ছোট ফুচকা ও ভেলপুরি স্টোর’। দোকানটি চালান গোলাম রসুল নামের একজন। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা-১০টা পর্যন্ত চলে এই ভ্রাম্যমাণ দোকান। এই দোকানের ছোট ফুচকা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
গোলাম রসুলের বাড়ি বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়নের পুরাতন ঘোষগাতী গ্রামে। সাত ভাই–বোনের সংসারে রসুলের বড় ভাই ভাজাপোড়া খাবারের ব্যবসা করতেন। বুঝতে শেখার পর থেকেই তাই এতেই হাতেখড়ি হয় রসুলের। তবে তাতে ঠিক পোষাচ্ছিল না। তাই বছর ৩০ আগে কিছু করার আশায় খুলনা শহরে আসেন গোলাম রসুল। তবে এই শহরে পুরোপুরি থিতু হতে পারেননি। নানা টানাপোড়েনে কখনো খুলনা, কখনো মোল্লাহাট, আবার কখনো ঢাকায় কেটেছে তাঁর সময়। ৪৮ বছরের এই জীবনে নানা রকম কাজ করেছেন। ব্যবসাও করেছেন অনেক কিছুর। তবে সেসব ব্যবসায় কেবল লোকসানই হয়েছে তাঁর। অবশেষে ‘ছোট ফুচকায়’ তাঁর কপাল খুলেছে।
কাজের ব্যস্ততার মধ্যেই কথা হয় গোলাম রসুলের সঙ্গে। রসুল বলেন, ‘আগে রিকশা চালাইছি। নানা রকম ব্যবসাও করছি। গ্রাম থেকে কিনে মাওয়া ফেরিঘাট আর ঢাকায় ডাব বেচছি। ওই ব্যবসায় অনেক মার খাইছি। মানুষ টাকা দেয় নাই। এখনো ৬০-৭০ হাজার টাকা পাব। ডাব ব্যবসায় মার খেয়ে দুই বছর আগে আবারও খুলনা শহরে আসি কিছু করা যায় কী না সেই জন্যি।’ খুলনা এসে আবারও রিকশার প্যাডেল ঘোরাতে থাকেন রসুল একই সঙ্গে মাথায় ঘুরতে থাকে চিন্তা। এরপর শীতের পিঠা বিক্রি শুরু করেন। শীত শেষ হতে আবারও অনিশ্চয়তা। এখন কী হবে!
গোলাম রসুল বলেন, ‘গরম চলে আসল, কী করব বুঝে পাচ্ছিলাম না। পরে খুলনার ৭ নম্বর ঘাট থেকে কিনে ভেলপুরি বেচছি। কিন্তু এতে হচ্ছিল না। এরপর চিন্তা করলাম আনকমন কিছু করা যায় কি না। গত বছরের কোরবানির ঈদের পর থেকে শুরু করি ছোট ফুচকা বিক্রি।’
দোকানটি চালান গোলাম রসুল নামের একজন। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা-১০টা পর্যন্ত চলে এই ভ্রাম্যমাণ দোকান