দগ্ধ চিকিৎসাধীন ১১ জনের মধ্যে মারা গেলেন গৃহবধূ শিউলি আক্তার
Published: 16th, February 2025 GMT
ঢাকার সাভারে আশুলিয়ার নরসিংহপুরের একটি বাসায় রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নারী-শিশুসহ দগ্ধ হয়েছিলেন ১১ জন। এরমধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিউলি আক্তার (৩২) নামে একজন গৃহবধূ মারা গেলেন।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার শরীরের ৯৫ শতাংশ দগ্ধ ছিল।
মৃত গৃহবধূ শিউলি আক্তার ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ থানার দিঘীরপাড় গ্রামের মো.
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান জানান, আশুলিয়া থেকে নারী শিশুসহ দগ্ধ ১১ জন বার্ন ইনস্টিটিউটে এসেছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ (রবিবার) সকালের দিকে মারা যান শিউলি আক্তার। বাকি ১০ জনের মধ্যে ৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ৬ জনের খাদ্যনালী, শ্বাসনালী ও এনহেলুশন বার্ন রয়েছে।
অন্যান্য দগ্ধরা হচ্ছেন- মমিন (৪) ২০ শতাংশ দগ্ধ, মাহাদী (৯) ১০ শতাংশ দগ্ধ, শামীম (১৫) ১৪ শতাংশ দগ্ধ, সোয়াইদ (৪) ২৭ শতাংশ দগ্ধ, সুমাইয়া (৩ মাস) ৯ শতাংশ দগ্ধ, মোছা. সূর্য বানু (৫০) ৭ শতাংশ দগ্ধ, মোছা. শারমিন (৩৫) ৪২ শতাংশ দগ্ধ, মোহাম্মদ সোহেল রানা (৩৮) ১০ শতাংশ দগ্ধ, মোহাম্মদ সুমন মিয়া (৩২) ৯৯ শতাংশ দগ্ধ ও মোছাঃ জহুরা বেগম (৭০) ৫ শতাংশ দগ্ধ।
এ ছাড়া দুজনকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে।
গত শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সোয়া ৯ টার দিকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। প্রতিবেশীরা দগ্ধদের উদ্ধার করে ওইদিন রাত পৌনে ১ টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসলে চিকিৎসক ৯ জনকে ভর্তি করেন।
দগ্ধদেরকে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা আবু ইসহাক জানান, নরসিংহপুর গোমাইল এলাকার একটি বাসার দ্বিতীয় তলায় শবেবরাত উপলক্ষে পিঠা তৈরি করার সময় হঠাৎ বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে একই পরিবারে নারী শিশুসহ ১১ জন দগ্ধ হয়। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে সাভারের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়।
ঢাকা/বুলবুল/টিপু
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে বিয়ের দাবিতে এক নারীর অবস্থান নিয়ে সংঘর্ষ, আহত একজনের মৃত্যু
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় বিয়ের দাবিতে এক নারীর অবস্থানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আহত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর মৃত্যু হয়।
মারা যাওয়া মকবুল হোসেন (৩৮) দুর্গাপুর উপজেলার দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়নের আমগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। এর আগে সোমবার বিকেলে ওই এলাকায় বিয়ের দাবিতে এক নারীর অবস্থানকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা জানান, হামলার সময় মকবুলের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত লাগে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।
মকবুল এলাকায় বিএনপির কর্মী হিসেবে পরিচিত। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুজ্জামান আয়নাল ও সদস্যসচিব জোবায়েদ হোসেন একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, আনুলিয়া গ্রামের এক নারী প্রেমের টানে আমগ্রামের ইসমাইল হোসেনের বাড়িতে আসেন। গ্রামবাসী তাঁদের বিয়ের আয়োজন প্রায় সম্পন্ন করেন। এ সময় আমগ্রামের কিছুসংখ্যক লোক এবং পার্শ্ববর্তী তরিপতপুর গ্রামের লোকজন ইসমাইল হোসেনের পক্ষ নিয়ে ওই বিয়ে বন্ধের চেষ্টা করেন। এ নিয়ে আমগ্রামের লোকজনের সঙ্গে তাঁদের দ্বন্দ্ব হয় এবং এক পর্যায়ে পালিয়ে যান। ওই ঘটনার জের ধরে পরের দিন রাত আটটা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যে প্রেমিক ইসমাইল হোসেনের পক্ষের লোকজন সশস্ত্র হামলা করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেন এবং বেশ কয়েকজনকে আহত করেন। আহতদের কেউ কেউ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁদের মধ্যে একজন মঙ্গলবার বিকেলে মারা যান।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে উপজেলা বিএনপি কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নয়। এই হত্যাকাণ্ডে বিরোধী কোনো রাজনৈতিক দলের ইন্ধন বা সম্পৃক্ততা আছে কি না এবং বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কোনো ব্যক্তিবিশেষ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে জড়িতদের চিহ্নিত করা হবে।
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুরুল হুদা মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, একটি পরকীয়ার ঘটনা মীমাংসার জের ধরে এই সংঘর্ষ হয়েছিল। এটা একটা ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা। যে পক্ষের লোক মারা গেল, তারা বিষয়টি মীমাংসা করে দিতে চেয়েছিল। অন্য পক্ষ একই প্রস্তাব দিয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। মামলা করার জন্য তাদের বলা হয়েছে তারা এখনো আসেনি।