তাঁর মতো না পাওয়ার ঈর্ষা, না কি তাঁর মতো না দেওয়ার বঞ্চনা? ব্যাপারটি যেভাবেই দেখা হোক না কেন, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র কিন্তু এই মুহূর্তে ভেতরে ভেতরে ক্ষুব্ধ। তার কারণ, ক্লাবের হয়ে ভালো খেলার পরও তাঁর বেতন এমবাপ্পের চেয়ে কম। ভিনি যখন এমবাপ্পের অ্যাকাউন্টের দিকে চোখ রেখেছেন, তেমনি ভিনির দিকে তাকিয়ে আছেন আরেক তারকা জুড বেলিংহাম। তাঁর এজেন্টও জানিয়ে দিয়েছেন, সবার চেয়ে বেশি বেতন হওয়া উচিত বেলিংহামের।
এই যখন অবস্থা, তখন মাঠে তাদের গোল উদযাপনের সময় একফ্রেমে হাসিমুখে দেখা গেলেও আসলে কেউ সুখী নয়। তারকায় ঠাসা রিয়াল মাদ্রিদকে আবার নতুন করে দর কষাকষিতে নামতে হতে পারে। তবে স্প্যানিশ মিডিয়াগুলোর ইঙ্গিত রিয়াল মাদ্রিদের প্রসিডেন্ট ফ্লোরেন্তো পেরেজের ঘাড়ে বন্দুক রেখে অতীতে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোও ফায়দা তুলতে পারেননি, সেখানে ভিনি কিংবা বেলিংহাম তেমন কিছু করতে পারবেন না।
আসলে ভিনির সামনে সৌদি প্রো লিগ থেকে ১০০ কোটি ইউরোর প্রাথমিক প্রস্তাব আসার পর থেকেই রিয়ালে বেতন বাড়ানোর জন্য চাপ দেওয়া শুরু। স্প্যানিশ দৈনিক মুন্ডো ডিপোর্তিভোর খবর, নতুন করে চুক্তি নবায়নের জন্য রিয়ালকে চাপ দিচ্ছেন ভিনি। তিনি চাইছেন, নতুন চুক্তিতে তাঁর বেতন যেন এমবাপ্পের চেয়ে বেশি হয়। এই মুহূর্তে মৌসুমে প্রায় ১ দশমিক ৫ কোটি ইউরো পেয়ে থাকেন এমবাপ্পে। সেখানে ভিনির বেতন ১ কোটির মতো। কিন্তু মূল বেতনের সঙ্গে এমবাপ্পে চুক্তি স্বাক্ষরের বোনাস হিসেবে বাড়তি ৮০ লাখ ইউরো পেয়ে থাকেন। এ কারণে সব মিলিয়ে এমবাপ্পে যেখানে ২ কোটি ৩০ লাখ ইউরো পাচ্ছেন, সেখানে ভিনির আয় সেই দেড় কোটি।
ভিনির এজেন্টের দাবি, এই মৌসুমে তাঁর খেলোয়াড় সবচেয়ে ভালো করছেন। মৌসুমে তিনি রিয়ালের হয়ে মোট ১৭টি গোল করেছেন। এমবাপ্পেও কিন্তু কম যাচ্ছেন না। ২৫টি গোল করে এই তালিকায় ভিনিকে বরং তিনি ছাপিয়ে গেছেন। মাদ্রিদভিত্তিক স্প্যানিশ ট্যাবলয়েড এএসের খবর, ভিনির নড়েচড়ে বসার পর রিয়াল কর্তৃপক্ষ নাকি তাঁকে বাড়তি আরও ১ কোটি ইউরোর প্রস্তাব দিয়েছে। এই চুক্তির ব্যাপারটি এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। সেটি এলে নাকি বেঁকে বসবেন বেলিংহাম এবং তার পর একে একে রদ্রিগো, ভালবার্দেরাও বেতন বাড়ানোর দাবি তুলতে পারেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন এমব প প
এছাড়াও পড়ুন:
আন্দোলনের সময় ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ তরুণীর
ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় গত বছরের ৪ আগস্ট নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন এক তরুণী। তিনি অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনার বিষয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা ও নির্বাহী কমিটির সদস্য নুসরাত তাবাসসুমকে বারবার জানালেও তিনি কারও সহযোগিতা পাননি। তবে উমামা ও নুসরাত এই তরুণীর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (পুনাব) ও জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স নামের দুটি সংগঠন ‘আন্দোলনে নারীর শক্তি, নারীর কথা: শিক্ষা, নেতৃত্ব ও সম্ভাবনার দিগন্ত’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে অংশ নিয়ে ওই তরুণী ধর্ষণের শিকার হওয়ার কথা জানান। তাঁর এই বক্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
অভিযোগকারী তরুণী বলেন, ‘২০–২৫ জন নারায়ণগঞ্জের তোলারাম কলেজের পাশের কলেজ রোডের গলিতে আজমেরী ওসমানের বাড়ির নিচে একটা অফিসে নিয়ে যায়। আমাকে টেনেহিঁচড়ে মারতে মারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আশপাশে অনেক মানুষ থাকলেও কেউ সামনে আসেননি আটকানোর জন্য। আমাকে মারধর করে মুঠোফোন নিয়ে যায় তারা। সেই অফিসে নিয়ে যাওয়ার পর আমাকে অনেক বাজে বাজে কথা বলেছে, অনেক বাজে গালিগালাজ করেছে, আমার পরিবার নিয়েও অনেক কথাবার্তা বলেছে। বাজে কথাও শুনতে হয়েছে। পরে ওখান থেকে সবাইকে বের করে দিয়ে দুজন ছিল। দুজন মিলে পরে আমাকে ধর্ষণ করে। এটা এখন পর্যন্ত কোনো গণমাধ্যমে আসেনি। আমি নিজেই আসতে দিইনি। এখন পর্যন্ত তারা (অপরাধী) ঘুরছে, এখনো শাস্তি হয়নি।’
সারজিস আলম, উমামা ফাতেমা ও নুসরাত তাবাসসুম তাঁর ঘটনাটি জানেন বলে উল্লেখ করেন ওই তরুণী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘১০ নভেম্বর আমি কনসিভ (গর্ভধারণ) করি। উমামা ফাতেমাকে যখন আমি জানাই, তখন তিনি বলেন, “তোমার সাথে না অনেক খারাপ হইছে। আচ্ছা, দেখবোনে বিষয়টা।” শেষ। এখানেই ক্লোজ করে দিয়েছে টপিক। নুসরাত তাবাসসুম আপুকে জানাই। উনি আমাকে বলেন, “তুই আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে নক দিস।” টিএসসি ক্যাফেটেরিয়ায় আমি তাঁর পাশের টেবিলে বসে হোয়াটসঅ্যাপে নক করি। তিনি হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজগুলো দেখলেও কোনো রিপ্লাই করেননি।’
এই তরুণীর যে অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন, সেখানে অংশ নিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন। অনুষ্ঠানের পর জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক কমিটির নারী সেল ও আইন সেল রয়েছে। ওই তরুণী যোগাযোগ করলে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ অস্বীকার
অভিযোগকারী তরুণীর বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে উমামা ফাতেমা প্রথম আলোকে বলেন, তিনি তাঁর জায়গা থেকে ওই তরুণীকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছেন।
এ ছাড়া অভিযোগকারী তরুণীর বক্তব্যের পর আহনাফ তাহমিদ নামের এক ব্যক্তি বিষয়টির কড়া সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেন। ওই পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করে নুসরাত তাবাসসুম ফেসবুকে অভিযোগের জবাব দিয়েছেন। অভিযোগকারী তরুণীর নাম উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘একবার আমার সামনে এনে তাকে অভিযোগ করতে বলেন যে তাকে সাহায্য করতে চাওয়া হয়নি। তাকে সব রকম সাহায্য দিতে চাওয়া হয়েছিল, তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সুচিকিৎসা, নারায়ণগঞ্জের ঘটনাস্থলে তদন্ত, মামলা—সবকিছুর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সে চেয়েছিল অন্য কিছু। কিন্তু তাঁর অনুমতি ব্যতিরেকে আমি সেটা প্রকাশ করতে পারছি না।’
এদিকে বক্তব্যের বিষয়ে জানতে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে রাত নয়টার দিকে ওই তরুণীর মুঠোফোনে কল করা হলে এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি।