চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের বাম্পার ফলনের আশা
Published: 16th, February 2025 GMT
আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাগানগুলোয় গাছে গাছে এখন মুকুলের সমারোহ। এরমধ্যে আগে বের হওয়া কিছু-কিছু গাছে মুকুল ফুটে আমের গুটিও বের হয়েছে।
গত বছর আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় আমের ফলনে বিপর্যয় হয়। বাগানিরা বলছেন, এবারের মৌসুমে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন তারা। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত ফুটবে আমের মুকুল।
গত বছর মৌসুমের শুরুতে তাপমাত্রা কম থাকা এবং প্রাকৃতিকগতভাবে কম ফলনের বছর হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জে মুকুল এসেছিল মাত্র ৭০ থেকে ৭৩ ভাগ গাছে। যা তার আগে বছর ছিল প্রায় শত ভাগ। তবে চলতি বছরের আমগাছগুলো মুকুলে ভরে উঠবে আশা করছেন এখানকার আম চাষি ও বাগান মালিকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পরিসংখ্যান অনুযায়ী- গত বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমবাগান ছিল ৩৭ হাজার ৬০৪ হেক্টর। এবার ১০০ হেক্টর কমে হয়েছে ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর। এরমধ্যে সদর উপজেলায় আমবাগান রয়েছে ৫ হাজার ১৮০ হেক্টর, শিবগঞ্জ উপজেলায় ২০ হাজার ১০০ হেক্টর, গোমস্তাপুর উপজেলায় ৪ হাজার ২৪০ হেক্টর, নাচোল উপজেলায় ৪ হাজার ৩৫০ হেক্টর ও ভোলাহাট উপজেলায় ৩ হাজার ৬৩৪ হেক্টর জমিতে আম চাষাবাদ হচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের একাধিক বাগানে ঘুরে দেখা গেছে, বড় গাছের তুলনায় বাগানের ছোট-ছোট আম গাছগুলোতে মুকুল ফুটতে শুরু করেছে। বড় গাছগুলোয় মুকুল আসলেও ছোটগাছের তুলনায় কম। গাছে মুকুল আসার সঙ্গে সঙ্গে বাগানজুড়ে চাষিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন পরিচর্যার কাজে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাগানগুলোয় গাছে গাছে এখন মুকুলের সমারোহ
বরেন্দ্র অঞ্চলের আম চাষি মুনজের আলম মানিক বলেন, “মাঘ মাসেই মূলত মুকুল ফুটে বেশি। ফাল্গুন মাসের মুকুল খুব একটা ভালো হয় না। গত বছর ফাল্গুনে মুকুল ফোটায় আম ভালো হয়নি। এবার অন ইয়ার হবে আশা করছি। যার কারণে মুকুলও ভালো হবে আমও ভালো হবে। এখন আমরা আমের বাগানে পরিচর্যা শুরু করে দিয়েছি। যেগুলো গাছে মুকুল বের হয়নি আশা করছি কয়েকদিনের ভিতরে মুকুল বের হয়ে যাবে।”
শিবগঞ্জের আম চাষি রবিউল আলম বলেন, “গতবারের তুলনায় এবার কম বাগান আছে আমার। বাগানের গাছগুলোয় মুকুল ফুটতে শুরু করেছে। এখন বালাই নাশক স্প্রে করা হয়েছে। তবে মাঝেমধ্যে কুয়াশা জেঁকে বসায় মুকুলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।”
প্রচলিত আমের আবাদ কমেছে
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাজুড়ে প্রায় শতাধিক ধরণের আম চাষাবাদ করেন কৃষকরা। তবে নাবিসহ অনান্য জাতের আম বাগান বাড়লেও গত ৪ বছরের ব্যবধানে জেলাটিতে প্রচলিত ৬টি আমের আবাদ কমেছে আশঙ্কাজনক হারে। সবচেয়ে বেশি আবাদ কমেছে খিরসাপাত আমের।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরীসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০২১-২২ অর্থ বছর ও ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের ব্যধানে ৬ধরনের প্রচলিত আমের আবাদ কমেছে ৪ হাজার ৪৮৯ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে গোপালভোগ ২৪৫ হেক্টর, লক্ষণভোগ ১৩৮ হেক্টর, খিরসাপাত ৩০৯৮ হেক্টর, ল্যাংড়া ৮৯ হেক্টর, ফজলি ৬২৯ হেক্টর, আশ্বিনা আম ২৯০ হেক্টর জমিতে আবাদ কমেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুরাতন বাগানগুলোয় সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ করা হয় এধরণের আমের। এসব আমে লাভজনক না হওয়ায় বাগানিরা গাছ কেটে ফেলছেন। পরে ওইসব জায়গা বিক্রি হচ্ছে ফ্লাট আকারে। সবচেয়ে বেশি আমবাগান কমেছে শিবগঞ্জ উপজেলায়।
উপজেলাটির ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের আম চাষি সেতাউর রহমান বলেন, “আম্রপালি আমের কারণে ফজলির দাম কমে যাচ্ছে প্রতিবছর। এদিকে আশ্বিনা আমের বেশি পরিচর্যা করেও কাঙ্খিত ফল পাওয়া যাচ্ছে না। যার কারণে অনেকে আমগাছ কেটে ফেলেছেন। বিশেষ করে রাস্তার পাশের বাগানগুলো বেশি-বেশি কাটা হচ্ছে। কারণ ফ্লাট আকারে জমি বিক্রি করে অনেক টাকা পাওয়া যাচ্ছে।”
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বক্তব্য
চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড.
তিনি আরও বলেন, “গতবছর যেসব ডালে মুকুল আসেনি সেসব ডালে এবছর আসবে। তবে এটা কম বেশি হতে পারে।”
আম বাগান কমে যাওয়ার ব্যাপারে পলাশ সরকার বলেন, “বড় গাছগুলো কেটে ফেলে মাঠ ফসলে গেছেন বাগান মালিকরা। আবার অনেক জায়গা আবাসিকের জন্য বিক্রিও হচ্ছে। যার কারণে জেলায় আম বাগান কমেছে।”
ঢাকা/শিয়াম/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ইনব বগঞ জ র র আম চ ষ উপজ ল য় গত বছর
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্নীতি ও দুঃশাসন করে কেউ টিকে থাকতে পারে না: জামায়াত আমির
লক্ষ্মীপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দুর্নীতি ও দুঃশাসন করে কেউ টিকে থাকতে পারে না। অতীতে সোনার বাংলা গড়ার নামে শোষণ হয়েছে, কিন্তু এখন এমন রাজনীতি করা যাবে না, যাতে পেশিশক্তির মতো দেশ ছেড়ে পালাতে হয়।
শনিবার সকাল ১১টায় লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের আমির মাস্টার রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে আদর্শ সামাদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
দীর্ঘ ২৮ বছর পর লক্ষ্মীপুরে আয়োজিত এই জনসভাকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়। জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসেন, চট্টগ্রাম মহানগর আমির শাহজাহান চৌধুরী, কুমিল্লা মহানগর আমির কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি ডা. রেজাউল করিম, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এড. আতিকুর রহমান ও ঢাকাস্থ লক্ষ্মীপুর ফোরামের সভাপতি ডা. আনোয়ারুল আজীম প্রমুখ।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, দেশে এখনো চাঁদাবাজি চলছে। আমি বিনয়ের সঙ্গে বলছি, এসব বন্ধ করুন। যদি কেউ খাদ্য সংকটে থাকে, আমরা তার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করব।
জুলাই বিপ্লবের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান জামায়াতের আমির। জনসভায় দলীয় নেতা-কর্মীসহ বিপুল সংখ্যক সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।