সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

চলতি বছর ২৯ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত লেবার ডে উইকেন্ডে কানাডার ‘অলিম্পিক নগরী’ মন্ট্রিয়লের ‘সেন্টার ল্য প্লাজা’ হোটেলে ফেডারেশন অব বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশন্স ইন নর্থ আমেরিকার (ফোবানা) ৩৯তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি সেন্টারে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে ‘কানাডা-বাংলাদেশ সলিডারিটি’র সভাপতি ও ফোবানা সম্মেলনের আহবায়ক জিয়াউল হক জিয়া এবং সদস্য-সচিব ইকবাল কবির এ তথ্য জানান। এসময় ফোবানার চেয়ারম্যান আতিকুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।

এবারের সম্মেলনে প্রবাসে বেড়ে উঠা প্রজন্মকে মা-বাবার শেকড়ের সাথে প্রোথিত রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে বলে জানান আয়োজকরা।

আতিকুর রহমান বলেন, আমাদের প্রজন্ম আমাদের অহংকার। সমগ্র উত্তর আমেরিকা জুড়ে আমাদের প্রজন্মের অনেকের সাফল্যে আমরা গর্বিত। আমাদের প্রজন্মকে আরও উৎসাহিত করতে হবে। ওদের মধ্যে বাংলা সংস্কৃতিতে প্রবাহিত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, গত তিন বছর ধরেই আমরা ‘রানী কবির অ্যাওয়ার্ড’ দিচ্ছি বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসাধারণ প্রতিভা সম্পন্নদেরকে। সেটি অব্যাহত থাকবে।

এসময় ফোবানায় ঐক্য বিষয়ক প্রশ্নের উত্তরে সাংবাদিকদের আতিকুর রহমান বলেন, আমরা সবসময় ঐক্যের পক্ষে। প্রস্তুত রয়েছি যে কোন ত্যাগের বিনিময়ে হলেও ব্যানারে ফোবানার ঐক্যবদ্ধ হতে। এ নিয়ে কার্যকর একটি আলোচনাও সক্রিয় রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তবে এক্ষেত্রে আমাদেরকে বাংলাদেশের ‘দেশীয় রাজনীতির’ উর্দ্ধে উঠতে হবে। সবাই মিলে বাঙালি হিসেবে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে পারলেই অনৈক্যের ব্যাপারটি কেটে যাবে।

ফোবানার সাবেক চেয়ারম্যান জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, যারা ফোবানা বাংলাদেশ সম্মেলনের স্পন্সর ছিলেন একসময়, তারাই এখন ফোবানার পিঠে ছুরিকাঘাতের জন্যে দায়ী। তারা জানেন না, ফোবানার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, কিংবা সাংগঠনিক রীতি। জনপ্রিয় শিল্পী নিয়ে গান-বাজনাকে তারা ফোবানা হিসেবে চালিয়ে নিচ্ছেন এবং প্রবাসীদের মহামিলনমেলা হিসেবে পরিচিত ‘ফোবানা’কে ভাঙ্গনের অপবাদ দিচ্ছেন।

উল্লেখ্য, নিউইয়র্কে ২০০০ সালে ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত ফোবানা সম্মেলনের হোস্ট কমিটির কনভেনর ছিলেন প্রয়াত রানী কবির ( ততকালীন লীগ অব আমেরিকার প্রেসিডেন্ট)। সম্মেলনের কদিন আগে তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। ফোবানার জন্যে রানী কবিরের ত্যাগ-তিতীক্ষার কথা স্মরণ করেই অ্যাওয়ার্ডটি চালু করা হয়েছে।

বর্তমানে ফোবানার এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি ও টেক্সাসে করপাশ ক্রিষ্টি শহরে ডেমোক্রেটিক পার্টির কাউন্টি চেয়ার নিহাল রহিম বলেন, মন্ট্রিয়লের এই সম্মেলনে আমরা কানাডা-যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। কানাডা ও আমেরিকায় বেড়ে উঠা বাঙালি প্রজন্মের মধ্যে যারা নিজ মেধাগুণে বিশেষ অবস্থানে উন্নীত হয়েছেন তাদের অভিজ্ঞতা উপস্থাপনের প্রয়াস রয়েছে অন্যদেরকে অনুপ্রাণীত করতে।

সংবাদ সম্মলেনর শুরুতে আয়োজক সংগঠন মন্ট্রিয়লের ‘কানাডা-বাংলাদেশ সলিডারিটি’র সভাপতি ও ৩৯তম ফোবানা সম্মেলনের আহবায়ক জিয়াউল হক জিয়া এবং সদস্য-সচিব ইকবাল কবির সম্মেলনের নানা পর্ব সম্পর্কে বলেন, প্রথম দিন জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও গালা নাইট, দ্বিতীয় দিন থাকবে বিজনেস ডেভেলপমেন্ট সেমিনার, উইমেন এম্পাওয়ারমেন্ট সেমিনার, ইমিগ্রেশন ও নাগরিক সচেতনতা শীর্ষক সেমিনার, প্রবাসে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশ, ইয়ুথ সেমিনার এবং কাব্য জলসা। এদিন আরো থাকবে প্রবাস প্রজন্মের ও বাংলাদেশ থেকে আসা তারকা শিল্পীগনের পরিবেশনায় নৃত্য-গীত-আবৃত্তি ও গীতি আলেখ্যসহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শেষ দিন ফোবানার নির্বাহী কমিটির সভা, নয়া কমিটি নির্বাচনের পাশাপাশি ৪০তম ফোবানার হোস্ট নির্বাচন এবং দেশ ও প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পীগণের পরিবেশনা।

সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে আরও অংশ নেন ফোবানার সাবেক চেয়ারম্যান বেদারুল ইসলাম বাবলা, জয়েন্ট এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি আমিনুল ইসলাম কলিন্স, আব্দুল কাদের চৌধুরী শাহীন, হোস্ট কমিটির ট্রেজারার বজলুর রশীদ ব্যাপারি এবং উপদেষ্টা কামাল চৌধুরী প্রমুখ।

বিএইচ

.

উৎস: SunBD 24

কীওয়ার্ড: প রজন ম অন ষ ঠ আম দ র আম র ক

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদ নিরাপত্তায় ডিএমপির ৬৬৭ টহল দল দায়িত্ব পালন করবে

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক বলেছেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর উৎসবমুখর ও নিরাপদ পরিবেশে উদযাপনের লক্ষ্যে ও ঈদে বাসা-বাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণি বিতানের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ সব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। পবিত্র রমজানে নগরবাসী যাতে নিরাপদে ইবাদত বন্দেগী করতে পারে; সেজন্য যেমন ডিবি সবসময় পাশে ছিল, তেমনি নিরাপদ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপনে নগরবাসীর পাশে থাকবে।

আজ শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গৃহীত কার্যক্রম সংক্রান্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে ঢাকা মহানগর এলাকায় পুলিশি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে মহানগরীতে চেকপোস্ট ও টহল কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের ৫০টি থানা এলাকায় প্রতিদিন জননিরাপত্তা বিধানে দুই পালায় ডিএমপির ৬৬৭টি টহল টিম দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া মহানগর এলাকার নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত স্থানে ডিএমপি কর্তৃক ৭১টি পুলিশি চেকপোস্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। পুলিশকে সহায়তা করার জন্য ইতোমধ্যে অক্সিলিয়ারি ফোর্স নিয়োগ করা হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তারা কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। ইউনিফর্মড পুলিশের পাশাপাশি মহানগরীর নিরাপত্তায় ডিবির উল্লেখযোগ্য সংখ্যক টিম মাঠে ক্লান্তিহীন কাজ করে যাচ্ছে। 
তিনি আরও বলেন, নগরবাসীর নিরাপত্তায় ডিবি ‘ভ্যানগার্ড’ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে ও যাবে। পবিত্র ঈদ উপলক্ষ্যে বিপণিবিতান, রেল স্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে ডিবির কার্যক্রম আরও বেগবান করা হয়েছে। নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে যে কোনো প্রয়োজনে ডিবি সর্বদা নগরবাসীর সঙ্গে রয়েছে। নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে যে কোনো অপতৎপরতা রুখে দিতে ডিবি প্রস্তুত।

রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতান, রেল স্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে কেউ যাতে নাশকতা করতে না পারে সেজন্য ডিবির গোয়েন্দা নজরদারি পূর্বের যেকোন সময়ের চেয়ে বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়াও ডিবির সাইবার টিম তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। সাইবার স্পেস ব্যবহার করে আসন্ন ঈদ উপলক্ষে যে কোন অপপ্রচার রোধে ডিবি তৎপর রয়েছে। প্রোএকটিভ পুলিশিং এর অংশ হিসেবে ডিবির জাল সর্বত্র বিস্তৃত করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরীকে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে ডিবি সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) বলেন, রোজা শুরুর দিন থেকে এখন পর্যন্ত ডিবির অলআউট অ্যাকশনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছিনতাইকারী, ডাকাত, চাঁদাবাজ ও বিভিন্ন অভ্যাসগত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাছাড়া ডিবির মাদকবিরোধী অভিযানে বিপুল পরিমাণ অবৈধ মাদকসহ উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পেশাদার মাদক কারবারি গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছোট বড় যে কোনো অপরাধীর ক্ষেত্রে ডিবি জিরো টলারেন্স নিয়ে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। যে কোনো অপরাধের ক্ষেত্রে ডিবি ‘ইন্টারসেপ্টর বা প্রতিবন্ধক’ হিসেবে কাজ করবে। ডিবির সব সদস্যের মনোবল পূর্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে দৃঢ় রয়েছে। 
তিনি আরও বলেন, নগরবাসীর ‘ভরসার কেন্দ্রবিন্দুতে’ পৌঁছতে ও অপরাধীদের জন্য ‘মূর্তিমান আতঙ্ক’ হিসেবে পরিগণিত হতে ডিবির আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ডিবি তার কার্যক্রমের মাধ্যমেই থাকতে চায় নগরবাসীর ভরসার কেন্দ্রস্থলে, জনগণের দোয়ায় ও প্রার্থনায়। কোন ফাঁকা বুলি নয়; বরং ‘দৃশ্যমান এ্যাকশনের’ মাধ্যমেই ডিবি ক্রমাগত নগরবাসীর আস্থার প্রতীকে পরিণত হচ্ছে।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ঈদ শেষে মহানগরবাসী যাতে নিরাপদে ও স্বস্তিতে ঘরে ফিরতে পারেন এবং কোনো ধরনের বিরূপ পরিস্থিতির সম্মুখীন না হন; সেজন্য ঈদ পরবর্তী সময়ে ডিবির ‘বিশেষ অভিযান’ পরিচালিত হবে। ছিনতাইকারী, চোর, চাঁদাবাজ ও বিভিন্ন অভ্যাসগত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে ডিবির আটটি বিভাগের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক টিম কর্তৃক মহানগরের বিভিন্ন কৌশলগত স্থানে এ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে জাল টাকা তৈরি ও সরবরাহ রোধে ডিবি অত্যন্ত তৎপর রয়েছে। ইতোমধ্যে ডিবির অভিযানে বিপুল সংখ্যক জালনোট ও জালনোট তৈরির সরঞ্জামসহ চক্রের বেশ কয়েকজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া অনলাইনে জালনোট বিক্রয় ঠেকাতে ডিবির সাইবার টিম সার্বক্ষণিক অনলাইনে নজরদারি করছে। জালনোট তৈরি, বিক্রয় ও সরবরাহ রোধে পূর্বের যে কোনো সময়ের চেয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে ডিবি।

রেজাউল আরও বলেন, ঈদ উপলক্ষে ডিএমপির ইউনিফর্মড পুলিশ ও ডিবির কার্যক্রমের পাশাপাশি নিরাপত্তা সচেতনতার অংশ হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানের দায়িত্বে নিয়োজিত নিরাপত্তা রক্ষীদের ডিউটি জোরদার করতে হবে এবং যেকোন অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা নজরদারির ব্যবস্থা রাখতে হবে। সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারিক করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পুলিশের পাশাপাশি মালিক পক্ষকে স্ব স্ব মার্কেট বা শপিংমলের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে হবে এবং এলাকার থানা বা ফাঁড়ির সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে হবে।

ডিবির ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ঈদে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে বা ঘটার আশঙ্কা থাকলে তা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি, থানা বা ডিবিকে অবহিত করবেন। তাছাড়া ডিএমপির কন্ট্রোল রুমের নম্বর অথবা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ যোগাযোগ করা যেতে পারে।

তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে বিপণিবিতানসহ যে কোন স্থানে নাশকতা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও নিরাপত্তাঝুঁকি সম্পর্কিত যে কোন তথ্য থাকলে ডিবিকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে হবে এবং তার পাশাপাশি তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন রেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ