লিবিয়া টু ইতালি: ‘মৃত্যুর পথে’ কেন মরিয়া যাত্রা
Published: 16th, February 2025 GMT
উন্নত জীবনের আশা আর জীবিকার সন্ধানে চরম বিপদসংকুল জেনেও অবৈধ পথে প্রতিনিয়ত বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন অসংখ্য বাংলাদেশি। তাঁদের অনেকেরই গন্তব্য ইউরোপের আধুনিক রাষ্ট্র ইতালি। ভীষণ বিপজ্জনক পথে নৌযানে করে ভূমধ্যসাগরের মতো মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ জলপথ পাড়ি দিয়ে উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়া থেকে ইতালিতে যাচ্ছেন বহু বাংলাদেশি। অনেকে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন আবার কেউ কেউ যাত্রাপথে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করছেন। এই পুরো বিপদসংকুল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় আদম পাচারকারী ও দালালদের মাধ্যমে অবৈধ প্রক্রিয়ায়। অনেকেই চরম ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগরের উত্তাল পথ পাড়ি দিয়ে যাওয়ার সময় মারা যান। প্রতিকূল পরিবেশে সীমান্ত ও সমুদ্র পাড়ি দিয়ে নিয়মিত বিরতিতে মৃত্যুর মুখে পড়ছেন সোনার হরিণের আশায় অভিবাসনপ্রত্যাশী হাজারো বাংলাদেশি।
লিবিয়া যাওয়ার পথ
বৈধ পথে যেসব অভিবাসনপ্রত্যাশী কাজের সন্ধানে ইতালি যেতে পারেন না তাঁদের একমাত্র ভরসা আন্তর্জাতিক আদম পাচারকারী ও তাদের সহযোগী দালাল। এসব পাচারকারীর সহায়তায় বিরাট অঙ্কের টাকার বিনিময়ে (১৫ থেকে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ পর্যন্ত) বাংলাদেশ থেকে আকাশপথে বিদেশগামীদের নেওয়া হয় দুবাই। দুবাই থেকে তাঁদের পাঠানো হয় তুরস্ক কিংবা মিসর। দালালেরা সেখান থেকে পাঠিয়ে দেয় লিবিয়ায়, পরে লিবিয়া থেকে সমুদ্রপথে যায় ইতালি।
মূলত লিবিয়া থেকে ইতালি যেতে জনপ্রিয় ও বিপজ্জনক তিনটি ধাপ আছে। লিবিয়ায় যাওয়ার পর দালালদের মাধ্যমে তাঁদের একটি দলে ঢোকানো হয়। পরে তাঁদের সাগরে কম্পাস (দিক নির্ণয়ের যন্ত্র) ধরে পথ চেনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ইতালির উদ্দেশে যাত্রা শুরু হয় লিবিয়ার জোয়ারা ও তাজোরা উপকূল থেকে। যাত্রা শুরুর পর প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরাই নৌকা চালাতে শুরু করেন। দালালেরা তখন সঙ্গে থাকেন না। ভূমধ্যসাগরে নৌকা ছাড়ার পর ভাগ্যাহত এসব অভিবাসীর দায়িত্বও কেউ নেয় না। তখন একমাত্র ভরসা ভাগ্যবিধাতা।
ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে মারা যাওয়া সুজন হাওলাদারের স্ত্রী মুন্নী বেগমের আহাজারি। সম্প্রতি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার মজুমদারকান্দি এলাকায়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জিনদের আহার্য
মহানবী (সা.) একবার তার সাহাবি আবু হুরায়রা (রা.)-কে বললেন কিছু পাথর নিয়ে আসতে। তবে হাড় বা গোবর আনতে নিষেধ করলেন। আবু হুরায়রা (রা.) কাপড়ে করে কিছু পাথর এনে সেগুলো নবীজি (সা.)-এর পাশে রেখে চলে গেলেন। নবীজি (সা.) কাজ সেরে ফিরে আসার পর আবু হুরাইরা জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহর রাসুল, হাড় ও গোবরে সমস্যা কী? তিনি উত্তরে বললেন, সেগুলো জিনদের খাবার। নাসিবিন শহরে (সিরিয়া ও ইরাকের মধ্যে আলজাযিরার একটি নগরী) জিনদের একটি প্রতিনিধি দল এসেছিল। তারা সবাই খুব ভালো জিন। আমার কাছে খাবার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিল। আমি আল্লাহর কাছে তাদের জন্য দোয়া করি। তাই তারা যে হাড় বা গোবরের পাশ দিয়ে যাবে, তাতেই নিজেদের জন্য খাবার খুঁজে পাবে। (বুখারি, হাদিস: ৩,৫৭৮)
আরও পড়ুনইবলিস কি জিন নাকি ফেরেশতা১৬ মার্চ ২০২৫তাই কেউ যদি বিসমিল্লাহ বলে খাবার খায় এবং হাড় থেকে মাংস খাওয়ার পর নাপাক স্থানে না ফেলে, মুমিন জিনেরা সেই হাড় হাতে নিলে তাতে গোশত ফিরে আসবে। (তিরমিজি, হাদিস: ৩,২৫৮)
আর দুষ্ট জিন ও শয়তানরা খায় এমন খাবার, যাতে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয় না। যেসব খাবারের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা হয়, সেগুলো তারা ছুঁয়েও দেখে না।
গোবরে জিনদের পশুদের জন্য খাবার জমা হয়। তার মানে জিনদের পোষা প্রাণী আছে এবং তারা তাতে আরোহণ করে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘গোবর বা হাড় নাপাকি পরিষ্কারের কাজে ব্যবহার করো না। কারণ এগুলো তোমাদের ভাই জিনদের খাবার।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১৮)
আরও পড়ুনকোরআন শুনে একদল জিন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন০৬ আগস্ট ২০২৩