বিদেশি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকসহ কর্মস্থলে কেন সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে যান ইলন মাস্ক
Published: 16th, February 2025 GMT
বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের সন্তানেরা এমন এমন সব জায়গায় যায়, যেখানে অনেকের কখনো যাওয়ার সুযোগই হবে না।
বিদেশি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক থেকে শুরু করে স্পেসএক্সের উৎক্ষেপণ কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণকক্ষ—সব জায়গাতেই মাস্কের সন্তানদের উপস্থিতি দেখা যায়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রযুক্তি ধনকুবের ও টেসলার সহপ্রতিষ্ঠাতা মাস্ককে তাঁর প্রশাসনের নবগঠিত গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি বিভাগের দায়িত্ব দিয়েছেন। এই দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে ওয়াশিংটনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও মাস্কের সঙ্গে তাঁর সন্তানদের দেখা যাচ্ছে।
এমনকি মাস্কের চার বছর বয়সী সন্তান ‘লিল এক্স’-কে গত বুধবার ওভাল অফিসের রেজল্যুট ডেস্কের (মার্কিন প্রেসিডেন্টের ব্যবহৃত ডেস্ক) কোনা ধরে ঝোলাঝুলি করতে দেখা গেছে।
গত বৃহস্পতিবার প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সফররত ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনা করেন মাস্ক। তখন সেখানে এক্সসহ মাস্কের তিন সন্তান উপস্থিত ছিল। তারা মোদির সঙ্গে উপহার বিনিময় করে।
ওয়াশিংটনে আসার আগেও মাস্কের সঙ্গে তাঁর সন্তানদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক–আয়োজনে দেখা গেছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক, একটি স্মরণসভা ও টাইম সাময়িকী আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মাস্কের সঙ্গে তাঁর সন্তানেরা ছিল।
কিন্তু মাস্ক কেন তাঁর সন্তানদের এভাবে সঙ্গে রাখেন?
আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের জনযোগাযোগ বিভাগের অধ্যাপক কার্ট ব্র্যাডকের মতে, এটা মাস্কের একটি রাজনৈতিক কৌশল। তিনি জনসাধারণের কাছে নিজেকে অনেক বেশি ব্যক্তিত্ববান ও মানবিক হিসেবে উপস্থাপন করতে চান।
তবে ব্র্যাডক মনে করেন, মাস্কের চার বছর বয়সী সন্তানকে ওভাল অফিসে নেওয়ার ঘটনাটি বিরল।
ওভাল অফিসে ৩০ মিনিটের প্রেস ব্রিফিং চলার সময় এক্সকে দেখে মনে হচ্ছিল, সে একঘেয়ে হয়ে উঠেছে। সে তার বাবার দিকে তাকাচ্ছিল, মেঝেতে বসে পড়েছিল।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ইলন মাস্কের বৈঠক চলাকালে তাঁর সন্তানদের দেখা যায়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব যে কারণে হয়, যেভাবে এল
মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব। এই উৎসবে পরস্পরের দিকে পানি ছিটিয়ে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হন মারমারা। ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’(এসো হে সাংগ্রাইংয়ে সবাই মৈত্রী পানিবর্ষণে) গানটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে এই উৎসবের ‘থিম সং’।
গবেষক ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের শুরু গত শতকের সত্তরের দশকে। কিছু তরুণ মিয়ানমারে সাংগ্রাইং উৎসবে এ ধরনের আয়োজন দেখে দেশেও এর প্রচলন করেন। আর ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’ উৎসবের থিম সং হয়েছে ১৯৮৪ সালে।
মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবকে অনেকেই ‘জলকেলি’ ও ‘পানি খেলা’ বলে থাকেন। তবে এসব নাম আপত্তিকর বলে মনে করেন মারমা সমাজের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে ধর্মের যোগ থাকা অনুষ্ঠানটি ভুলভাবে উপস্থাপন হয়।
এবারের সাংগ্রাইং উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বান্দরবান জেলা শহরে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব শুরু হয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার এই উৎসব শুরু হয়। খাগড়াছড়িতে কোথাও কোথাও সোমবার শুরু হয়েছে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব।
মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণদের একজন শিক্ষাবিদ থোয়াইংচ প্রু। তিনি প্রথম আলকে বলেন, সাংগ্রাইং আখ্যেয়া বা মূল সাংগ্রাই দিনে বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব হয় না। এটা প্রথাসিদ্ধ রীতি। তাই মৈত্রী পানিবর্ষণের সঙ্গে ধর্মের যোগ বেশ স্পষ্ট। তিনি বলেন, পানিকে মারমারা পবিত্র মনে করে। তাই সাংগ্রাইং উৎসবে বন্ধুত্বের বন্ধন এবং পরস্পরের প্রতি মৈত্রী ভাবনা নবায়ন ও সুদৃঢ় করার জন্য একে-অপরের দিকে পানি ছোড়েন। পানি ছিটানোর পর কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে বোঝা যাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ও বন্ধনে টানাপোড়েন আছে। এটিই মৈত্রী পানিবর্ষণের মূল্যবোধ। এ কারণে অনেক সময় অযাচিত কাউকে পানিবর্ষণ করলে আগে সালিসের মুখোমুখিও হতে হতো।
মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। গতকাল বান্দরবানের ডলুপাড়ায়