তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন-২০২৫ শুরু হচ্ছে আজ রোববার। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দু রশীদ জানান, রেওয়াজ থাকলেও এবারও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সাক্ষাৎ হচ্ছে না।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সময় মেলাতে না পারায় এ বছর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কোনো অধিবেশন থাকছে না।

এবারের ডিসি সম্মেলনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধরে রাখা হবে বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রিপরিষদসচিব। 

তিনি বলেন, “জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠার পর সরকারের দর্শনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠার পর আগের সরকারের দর্শনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্নজনের নামে সড়ক, সেতুর মতো অবকাঠামোগতসহ কিছু প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে বিগত সম্মেলনগুলোর তুলনায় এ বছর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হার কম হয়েছে। তবে মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন হলে গত বছরের সম্মেলনের বাস্তবায়ন অগ্রগতির হার ৪৬ শতাংশ থেকে আরো বাড়বে। এ বছর এক কোটি ৭০ লাখ টাকা বাজেট আছে। কিছু কম হবে বলে আশা করি।”

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “তিন দিনের ডিসি সম্মেলন চলবে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। গত বছরের মতো এবারও সম্মেলনের মূল ভেন্যু রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন। সম্মেলনে চারটি বিশেষ ও ৩০টি কার্য অধিবেশন থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একটি মুক্ত আলোচনা এবং বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের একটি সভা। এই চারটি বাদ দিয়ে বাকি ৩০টি হবে কর্ম-অধিবেশন। বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাটি হবে বাংলাদেশ চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে।”

তিনি আরও জানান, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে নির্দেশনা গ্রহণের যে একটি অনুষ্ঠান আছে, সেটি হবে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে। আর প্রধান উপদেষ্টার অফিসের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি এবং তার (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আরেকটি কর্ম অধিবেশনসহ দুটি হবে প্রধান উপদেষ্টার অফিসে। অংশগ্রহণকারী মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা ৫৬টি। বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত এক হাজার ২৪৫টি প্রস্তাবের ৩৫৪টি কার্যপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সেগুলো নিয়ে সম্মেলনের বিভিন্ন সেশনে আলোচনা হবে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ডিসিদের পাঠানো এক হাজার ২৪৫টি প্রস্তাবের মধ্যে ৩৫৪টি প্রস্তাব কার্যপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর গত বছর ডিসি সম্মেলনে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি মোট ৩৮১টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে ১৭৭টি সিদ্ধান্ত। বাস্তবায়নাধীন রয়েছে ২০৪টি সিদ্ধান্ত। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৪৬ ভাগ।

প্রস্তাবের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, “এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যা আয় হয়, তা কিভাবে ব্যয় হয় জানা যায় না বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। তার হিসাব রাখার প্রস্তাব করেছেন একজন ডিসি। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে বডি ক্যামেরা রাখা, মারণাস্ত্র ও ছররা গুলি না রাখার প্রস্তাব আছে। সার্কিট হাউসে গুরুত্বপূর্ণ অতিথি থাকলে কেপিআই হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব আছে। পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে অনিয়ম দূর করতে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে একজনকে রাখার প্রস্তাব থাকছে সম্মেলনে।”

এবারের ডিসি সম্মেলনের উল্লেখযোগ্য কিছু প্রস্তাব- এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত আয় ও ব্যয় সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের প্রস্তাব করেছেন হবিগঞ্জ জেলার ডিসি। আর জেলায় স্কুল-কলেজ এমপিওভুক্তি ও জাতীয়করণে জেলা প্রশাসকের মতামত গ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছেন বরিশালের ডিসি। এক শিক্ষাবর্ষে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে খাতভিত্তিক ফি আদায় এবং আদায়কৃত ফি ব্যয় সম্পর্কিত নীতিমালা প্রণয়নের প্রস্তাব এসেছে পাবনার ডিসির কাছ থেকে। ময়মনসিংহের ডিসি কওমি মাদ্রাসার শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার পদবি পরিবর্তন করে ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা’ করার প্রস্তাব দিয়েছেন ঝিনাইদহ, সিলেট, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও গাইবান্ধার ডিসি। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে হাসপাতালগুলোতে সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে আনসার নিয়োগ করার প্রস্তাব দিয়েছেন শরীয়তপুর ও হবিগঞ্জের ডিসি। সন্দ্বীপ উপজেলায় আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত দুটি সি-অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহের প্রস্তাব এসেছে চট্টগ্রামের ডিসির কাছ থেকে। 

বান্দরবান পার্বত্য জেলায় সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছেন এই জেলার ডিসি। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালটি ৫০০ শয্যায় উন্নীতকরণসহ সিসিইউ, আইসিইউ এবং ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপনের প্রস্তাব করেছেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেলে পর্যাপ্ত সংখ্যক পদ সৃজন ও পদায়নের প্রস্তাব করেছেন বরিশালের ডিসি। পরিবার কল্যাণ সহকারীদের কর্ম এলাকা পুনঃনির্ধারণ করার প্রস্তাব দিয়েছেন সিলেটের ডিসি।

গাইবান্ধা, জামালপুর ও কুড়িগ্রামের ডিসি চর উন্নয়ন বোর্ড গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। কৃষকের জন্য বজ্রপাত নিরোধক ছাউনি স্থাপনের জন্য পৃথক কর্মসূচি নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন নওগাঁ ও সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক। আর হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় হাওরের মাঠগুলোতে বজ্র নিরোধক দণ্ড সম্বলিত সম্মিলিত আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছেন এই জেলার ডিসি।

কক্সবাজার জেলায় লবণ শিল্পের বিকাশে ফরোয়ার্ড ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছেন এই জেলার ডিসি। ভোলা জেলায় একটি ইউরিয়া সার কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব এসেছে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। চায়ের নিলাম মূল্য ও ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রয়মূল্যের মধ্যে সামঞ্জস্যতা আনার প্রস্তাব করেছেন মৌলভীবাজারের ডিসি।

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন থেকে খুচরা বিক্রয় পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে মূল্য তালিকা একটি কেন্দ্রীয় ওয়েবসাইটে প্রকাশের প্রস্তাব করেছেন খাগড়াছড়ির ডিসি।

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা/ইজিবাইক সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন ও সেন্ট্রাল চার্জিং স্টেশন স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছেন ময়মনসিংহ, গাইবান্ধা ও বরগুনার ডিসি। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কটিকে জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণসহ যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণের প্রস্তাব দিয়েছেন সুনামগঞ্জ ডিসি।

ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালিতে পানিসারা রেলস্টেশনে ঢাকাগামী রেল স্টপেজের ব্যবস্থা এবং প্রতিটি রেলে একটা বগি শুধুমাত্র ফুল পরিবহনের জন্য ব্যবস্থা রাখার প্রস্তাব করেছেন সেই যশোরের ডিসি।

যমুনা সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছেন জামালপুরের ডিসি। মনপুরা উপজেলাকে জাতীয় গ্রিডের সাথে যুক্তকরণের মাধ্যমে সম্পূর্ণ উপজেলাকে বিদ্যুতায়িত করার প্রস্তাব দিয়েছেন ভোলার ডিসি।

প্রত্যেক জেলায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছেন গাইবান্ধা ও জামালপুরের ডিসি। মৌলভীবাজার জেলার বাদ পড়া ৭২টি চা-বাগান বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের প্রস্তাব দিয়েছেন এই জেলার ডিসি। রবি মৌসুমে অনাবাদি জমিগুলো চাষের আওতায় আনার জন্য গভীর নলকূপ স্থাপন করা যেতে পারে বলে মনে করেন হবিগঞ্জের ডিসি।

কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশ গমনে ইচ্ছুক নাগরিকদের জন্য জেলা পর্যায়ে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ স্থাপনের প্রস্তাব করেছেন মাগুরার ডিসি। আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে প্রতিটি পৌরসভায় ইটিপি স্থাপনের প্রস্তাব করেছেন নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ময়মনসিংহ, মেহেরপুর, মাদারীপুর ও টাঙ্গাইলের ডিসি।

ঢাকা জেলার নদ-নদীগুলো অবৈধ দখল ও দূষণমুক্ত করার জন্য কর্মপরিকল্পনা নেওয়া ও বাস্তবায়নের প্রস্তাব বরেছেন ঢাকার ডিসি। ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও স্লুইসগেট সংস্কারের মাধ্যমে সেচ সুবিধা বৃদ্ধি করে ফসলের আবাদ সম্প্রসারণের প্রস্তাব করেছেন ঝালকাঠির ডিসি। পর্যায়ক্রমে ইবতেদায়ি মাদ্রাসা সরকারিকরণের প্রস্তাব এসেছে সাতক্ষীরার ডিসির কাছ থেকে। ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও লোকবল নিশ্চিত করার প্রয়োজন বলে মনে করেন গাইবান্ধার ডিসি।

নিবন্ধন পরিদপ্তরকে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন থেকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাভূক্তকরণের প্রস্তাব করেছেন নাটোর, কুড়িগ্রাম, রাজশাহী, বগুড়া ও নেত্রকোনার ডিসি। ভূমিহীনদের অনুকূলে বন্দোবস্তকৃত খাস জমি বিনামূল্যে নামজারি করার বিধান সম্বলিত পরিপত্র জারি এবং ই-মিউটেশনে বিনামূল্যে নামজারি করার সুযোগ সন্নিবেশকরণের প্রস্তাব দিয়েছেন ঝিনাইদহের ডিসি। মেহেরপুর ও নওগাঁর ডিসি একই খতিয়ানের একের অধিক মালিকদের আংশিক ভূমি উন্নয়ন কর নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। দলিলমূল্যের ওপর নামজারি ফি নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের ডিসি।

সরকারি ও বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে জেলেদের ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন বরগুনার ডিসি।

সব ধরনের লাইসেন্সের জন্য ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ চালুর প্রস্তাব দিয়েছেন লালমনিরহাট জেলার ডিসি। রেলপথ মন্ত্রণালয়ে পোষ্য কোটা বাতিলের প্রস্তাব করেছেন খাগড়াছড়ির ডিসি। সব জেলায় দুদকের কার্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া এবং জেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগের সুপারিশ করেছেন সাতক্ষীরা, নরসিংদী ও বান্দরবানের ডিসি।

শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিদ্যমান পদ্ধতির বিকল্প হিসেবে প্রিলিমিনারি (এমসিকিউ টাইপ) ও মৌখিক পরীক্ষার পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব করেছেন জামালপুরের ডিসি। মাগুরার ডিসি মোবাইল কোর্ট আইন-২০০৯ এর বিধিমালা তৈরির প্রস্তাব করেছেন। তামাকের বিকল্প ফসল চাষিদের জন্য প্রণোদনা দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন বান্দরবানের ডিসি।

সংসদ সদস্য ও জনপ্রতিনিধিদের জন্য আচরণ বিধিমালা প্রণয়নের প্রস্তাব করেছেন সুনামগঞ্জের ডিসি। জেলা পরিষদের অনুকূলে অর্থবছরের শুরুতেই এডিপি তহবিলে বরাদ্দ এবং প্রকল্প নেওয়া ও বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট অর্থবছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার প্রস্তাব করেছেন বরিশালের ডিসি।

ঝালকাঠির ডিসি উপজেলা পর্যায়ে ক্রীড়া অফিসার পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করেছেন। কক্সবাজারের ডিসি খাগড়াছড়ির জেলা শিল্পকলা একাডেমি ভবন ও মিলনায়তন নির্মাণের প্রস্তাব করেছেন।

সিলেট বিভাগীয় কমিশনার সিলেট বিভাগে সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছেন। সিলেটের ডিসি জনবল সংকট নিরসনে বিভাগীয় নির্বাচনী বোর্ডের অধীনে সব সরকারি দপ্তরের ১৩-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার সুপারিশ করেছেন। বান্দরবানের ডিসি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বদলি ও পদায়ন বিভাগীয় কমিশনারদের কাছে ন্যস্তকরণের প্রস্তাব করেছেন।

ঢাকা/হাসান/টিপু

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন মগঞ জ ব ন দরব ন কর ছ ন স ব সরক র প রণয়ন তকরণ র ছ ন বর বর শ ল পর ক ষ পর য য় র জন য বছর র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে আলাদা অধিদপ্তর হচ্ছে না

জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে আলাদা অধিদপ্তর হচ্ছে না। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়া অনুমোদনের একটি সারসংক্ষেপ অনুমোদনের জন্য পাঠানো হলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে তাতে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। প্রস্তাবটি ফেরত দেওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তরটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি সংযুক্ত দপ্তর, সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান নয়।’

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর খসড়ার ওপর মতামত চেয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বিষয়ক মন্ত্রণালয় খসড়ার ওপর অর্থ বিভাগের মতামতের জন্য পাঠানো হয়। বিষয়টি বিবেচনার জন্য অর্থ সচিব গত ১৯ মার্চ অর্থ উপদেষ্টা ড.সালেহউদ্দিন আহমদের কাছে একটি সারসংক্ষেপ পাঠালে তিনি ২০ তারিখে সারসংক্ষেপে স্বাক্ষর করেন। এরফলে তার মতামত দেন। এরফলে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ নামে আলাদা অধিদপ্তর হচ্ছে না। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে তাদের কাজ অব্যাহত রাখবে।

সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস ও স্মৃতি সংরক্ষণ, গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের পরিবার এবং আহত ছাত্র-জনতার পুনর্বাসনসহ গণঅভ্যুত্থানের আদর্শ ও চেতনাকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে সরকার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়। উক্ত অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রস্তুতকৃত খসড়া অধ্যাদেশের ওপর অর্থ বিভাগের মতামত পাঠানোর জন্য বিবেচ্য পত্রে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এতে দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার জন্য গত ১২ ডিসম্বের ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ প্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অ্যালোকেশন অব বিজনেস এ ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিষয়ক’ বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পরবর্তীতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর-এর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রাজস্বখাতে ৩৩ টি পদ সৃজনসহ সাংগঠনিক কাঠামো হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। বর্তমানে উক্ত অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক খসড়া অধ্যাদেশ প্রস্তুত করে এর ওপর অর্থ বিভাগের মতামত চাওয়া হয়।

উল্লেখ্য যে, সচিবালয় নির্দেশমালা, ২০২৪ অনুযায়ী অধিদপ্তরসমূহ সংযুক্ত দপ্তর হিসেবে সরকারি নীতি বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী কার্যব্যবস্থার অংশ। মন্ত্রণালয়/ বিভাগ কর্তৃক নির্দেশিত নীতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে সংযুক্ত দপ্তরসমূহ প্রয়োজনীয় নির্বাহী কার্যাবলি পরিচালনা করে থাকে। মন্ত্রণালয়/বিভাগের অধীনে নতুন দপ্তর/অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি'র কার্যপরিধিভুক্ত। প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি'র অনুমোদনের প্রেক্ষিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অ্যালোকেশন অব বিজনেস হালনাগাদ করা হয়েছে। তাছাড়া, আইন/অধ্যাদেশের মাধ্যমে সাধারণত সংবিধিবদ্ধ/স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা হয়।

জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান নয়। উপদেষ্টা পরিষদ ও প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তরটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি সংযুক্ত দপ্তর, সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান নয়।

অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং আহত ছাত্র-জনতার পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ এ শহীদ পরিবারের কল্যাণ ও আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নীতিমালা, ২০২৫’ খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে এবং এর ওপর অর্থ বিভাগ থেকে মতামত দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীতব্য উল্লিখিত নীতিমালা এবং মন্ত্রণালয়ের অ্যালোকেশন অব বিজনেস বাস্তবায়নের মাধ্যমে আলোচ্য অধিদপ্তরের কার্যাবলি পরিচালিত হবে। এসকল বিষয়াদি বিবেচনায় জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার জন্য আইন/অধ্যাদেশ প্রণয়নের প্রয়োজন নেই বলে অর্থ বিভাগ মনে করে।

এ অবস্থায়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা ও এর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পৃথকভাবে আইন/অধ্যাদেশ প্রণয়নের প্রয়োজন নেই মর্মে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়কে অবগত করে চিঠি যেতে পারে। এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টার মতামত চাওয়া হলে তিনি তাতে অনুমোদন দিয়েছেন।

ঢাকা/টিপু
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরকারি চাকরিতে ৭ শতাংশ কোটার পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সরকারের কমিটি
  • এক হাজার কোটি টাকা ব্যাংকঋণ নিলে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তি বাধ্যতামূলক
  • নবম গ্রেডের দাবিতে ঝিনাইদহে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারদের স্মারকলিপি
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে আলাদা অধিদপ্তর হচ্ছে না