বিদেশে পড়াশোনার স্বপ্ন থাকে অনেকেরই। কিন্তু নানা কারণে অনেকে ভর্তি হতে পারেন না—এমন সংখ্যাও অনেক। বিদেশে পড়াশোনার সিদ্ধান্তের পরই আপনাকে আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের দিকে যেতে হয়। পড়াশোনার জন্য সঠিকভাবে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তটাও কঠিন। সঠিক বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নিতে পারলে একাডেমিক এবং ব্যক্তিগত ক্যারিয়ার বিকাশে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। এ সিদ্ধান্ত মানসম্পন্ন শিক্ষা অর্জনের বাইরেও নতুন একটি সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার ও মেশার সুযোগ মেলে। পছন্দসই এবং আপনার জন্য সঠিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারলে পেশাদার ক্যারিয়ারের দিকে এগিয়ে যাওয়ার একটি ধাপ হিসেবেও কাজ করে।
বিদেশে পড়াশোনার সিদ্ধান্তের পরই আপনার আগ্রহ স্টেম শিক্ষা, শিল্পকলা, ব্যবসা অথবা অন্য যেকোনো ক্ষেত্রেই থাকুক না কেন, কিছু পদক্ষেপ আপনাকে নিতে হবে। এসব পদক্ষেপে আপনার জন্য মনঃপূত বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে পেতে সহায়তার ধাপ হিসেবেও বিবেচনা করা যেতে পারে। ভর্তিপ্রক্রিয়া কার্যক্রম শুরু করার আগে শিক্ষার মাধ্যম বা ভাষা, বাজেটের সীমাবদ্ধতা এবং থাকার জায়গাসহ নানা বিষয় মাথায় রাখতে হয়। বিদেশে পড়াশোনার জন্য সঠিক বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নিতে আপনাকে সাহায্য করতে পারে এমন ১২টি ধাপ আছে। এগুলো হলো—

১.

কোন বিষয়ে পড়তে চান, সেটি নিয়ে ভাবুন

অধ্যয়নের বিষয়গুলো নিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে অনুসন্ধান শুরু করুন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোগ্রাম, পড়াশোনার অধ্যাপক এবং অত্যাধুনিক গবেষণা খাত শনাক্ত করুন। মৌলিক গবেষণার ক্ষেত্রগুলো পছন্দের শিক্ষার ক্ষেত্রে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে একটি বেছে নেওয়ার সুযোগ তৈরি করবে।

২. বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বৈশ্বিক অবস্থান জেনে নিন

এখন গবেষণা, জার্নালে প্রকাশনা, পড়াশোনার মানসহ নানা বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বৈশ্বিক অবস্থান নির্ধারিত হয়। ভর্তির ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিশ্বব্যাপী অবস্থান মূল্যায়ন করতে হবে। এমন উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলো বিবেচনা করুন, যাদের একটি শক্তিশালী আন্তর্জাতিক খ্যাতি এবং বৈশ্বিক শিল্পের সঙ্গে সহযোগিতা রয়েছে। এমন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি, বিশ্বের সঙ্গে মূল্যবান সংযোগ এবং সমৃদ্ধ একাডেমিক অভিজ্ঞতার সুযোগ করে দেবে।

৩. কাঙ্ক্ষিত দেশগুলোর তালিকা তৈরি করুন

কাঙ্ক্ষিত দেশ নির্ধারণ করে ফেলুন। ভাষা, সংস্কৃতি এবং সম্ভাব্য স্নাতক–স্নাতকোত্তরের সুযোগগুলো বিবেচনা করুন। কাঙ্ক্ষিত দেশগুলোর সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নেওয়া সহজ করবে।

৪. বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

আপনার লক্ষ্যর দেশের মধ্যে পৃথক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। অনুষদ, গবেষণা সুবিধা এবং প্রোগ্রামের মতো বিষয়গুলো মূল্যায়ন করুন। এতে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিশদ গবেষণা এবং একাডেমিক চাহিদাগুলো সম্পর্কে ধারণা মিলবে।

৫. বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাঙ্কিং দেখুন

সম্ভাব্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর একাডেমিক অবস্থান এবং খ্যাতি কেমন, তা জানতে বিশ্বব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‌্যাঙ্কিং খুঁজে দেখতে হবে। যদিও র‍্যাঙ্কিং একমাত্র মানদণ্ড নয়, তবু আপনার শিক্ষার ক্ষেত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক মূল্যায়নের জন্য এটিকে একটি মানদণ্ড হিসেবে ধরা যেতে পারে।

৬. নিজের লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নির্ধারণ

তালিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষাগত এবং কর্মজীবনের লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না জেনে নিন। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদত্ত প্রোগ্রাম, গবেষণার সুযোগ এবং সহশিক্ষাকার্যক্রমগুলো আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, তা–ও বিবেচনা করুন।

৭. স্থান বা ঠিকানা বা এলাকার অবস্থান কেমন

আপনার তালিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভৌগোলিক অবস্থান মূল্যায়ন করুন। জলবায়ু, জীবনযাত্রার ব্যয় এবং শিল্পকেন্দ্রগুলোর কাছাকাছির মতো বিষয়গুলো বিবেচনা করুন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান আপনার জীবনযাত্রার সঙ্গে সম্ভাব্য নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ এবং ইন্টার্নশিপও প্রদানে সহায়তা করবে।

৮. সাংস্কৃতিক এবং জীবনধারা

প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানের সাংস্কৃতিক এবং জীবনযাপনের দিকগুলো নিয়ে ভাবা উচিত ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে। সামাজিক জীবন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ততার মতো বিষয়গুলো বিবেচনা করুন। ইতিবাচক সাংস্কৃতিক পরিবেশের মিল আপনার একাডেমিক অভিজ্ঞতায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।

৯. বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরিদর্শন করুন

যদি সম্ভব হয় সংক্ষিপ্ত তালিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে যেতে পারেন, পরিবেশের সরাসরি অভিজ্ঞতা নিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মুক্ত অনুষ্ঠানগুলোয় যোগ দিন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নানা বিষয়ে আলাপচারিতা চালিয়ে যান এবং আশপাশের কমিউনিটি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। এসবে আপনার মূল্যবান কিছু তথ্য (অন্তর্দৃষ্টি) পাবেন, যা কেবল অনলাইন গবেষণার মাধ্যমে স্পষ্ট না–ও হতে পারে।

প্রথম আলো ফাইল ছবি

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক অবস থ ন ন র জন য এক ড ম ক আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর হবে মাইলফলক: রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফর সফল ও ফলপ্রসূ হবে।

তিনি বলেন, ‘এটি খুবই সফল, ফলপ্রসূ এবং একটি মাইলফলক সফর হবে, যেখানে কিছু ঘোষণা আসতে পারে।’

রবিবার (২৩ মার্চ) মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিনের সঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, “আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। আমরা এখনো আলোচনা করছি। অপেক্ষা করুন এবং দেখুন। আমরা এখনো বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি।”

রাষ্ট্রদূত বলেন, “এ সফর বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ দুটি দেশই কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করছে।”

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, “এ সফরের সময় কোনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে না। তবে, বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে।”

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস হাইনান প্রদেশে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া সম্মেলনে যোগদানের জন্য আগামী ২৬ মার্চ চীনের উদ্দেশে রওনা হবেন।

২৭ মার্চ তিনি সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেবেন এবং চীনের নির্বাহী ভাইস প্রিমিয়ার ডিং জুয়েশিয়াংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন।

প্রধান উপদেষ্টার বেইজিংয়ের গ্রেট হল অফ দ্য পিপলে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে ২৮ মার্চ।

তিনি হুয়াওয়ের একটি উচ্চ প্রযুক্তির প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করতে পারেন এবং চীনের একটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাতকার দিতে পারেন।

এছাড়া, ২৯ মার্চ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় ড. ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করবে। প্রধান উপদেষ্টা এই দিনেই দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

ঢাকা/হাসান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ