রোবট নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ অনেক বছর ধরে। আধুনিক সময়ে রোবটের বহুমাত্রিক ব্যবহার নিয়ে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। একদল বিজ্ঞানী নতুন ধরনের রোবট নিয়ে কাজ করছেন, যেগুলো নাকি ধোঁয়ার মধ্যেও দেখতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন রোবট নিয়ে কাজ চলছে। সেখানে বিজ্ঞানীরা রোবটের রেডিও-ভিত্তিক সেন্সিং–ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছেন। পরীক্ষার সময় দেখা যায়, বেতারতরঙ্গ রোবট বা স্বায়ত্তশাসিত যানবাহনকে ঘন ধোঁয়া, তীব্র বৃষ্টি বা বিভিন্ন কোনায় দেখার সক্ষমতা দেয়। এ ধরনের তরঙ্গ লুকানো অস্ত্রও শনাক্ত করতে পারে।

বেতারতরঙ্গের ওপর ভিত্তি করে ভিজ্যুয়াল চিত্র অনুকরণ করা রোবট ও স্বায়ত্তশাসিত যানবাহনের জন্য বেশ অস্বাভাবিক ও অপ্রচলিত পদ্ধতি। সাধারণভাবে অপটিক্যাল ক্যামেরা, লাইট ডিটেকশন অ্যান্ড রেঞ্জিং (লাইডার) প্রযুক্তি ও অন্যান্য সেন্সর রোবটদের দেখার জন্য ব্যবহার করা হয়। যদিও বেতারতরঙ্গ ব্যবহার করে রাডার, বিমান, জাহাজ ও আবহাওয়ার তথ্য জানার কাজ চলছে। পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মিংমিন ঝাও ও তাঁর গবেষক দল সেই বেতারতরঙ্গ ব্যবহার করে রোবটদের দেখার জন্য একটি সম্ভাব্য শক্তিশালী উপায় তৈরি করেছেন। নতুন পদ্ধতিতে দেখা যায়, একটি অন-বোর্ড কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবস্থা বেতারের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য ব্যবহার করে চারপাশের পরিবেশের একটি ত্রিমাত্রিক চিত্র তৈরি করে। বিজ্ঞানী ঝাও বলেন, ‘আমরা মূলত রোবটদের অতিমানবীয় দৃষ্টি দিতে সাহায্য করছি। যেসব পরিস্থিতিতে মানুষের চোখ বা ভিজ্যুয়াল সেন্সর পারে না, তা রোবটরা পারবে। এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতের অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী রোবটকে আগুন লাগা ভবন থেকে মানুষকে বাঁচাতে সাহায্য করতে পারে।’

ইলেকট্রোম্যাগনেটিক বর্ণালির অংশ বেতারতরঙ্গ আসলে আলোর একটি রূপ। এই বর্ণালির মধ্যে এক্স-রে ও গামা রশ্মিও রয়েছে। বর্ণালির একটি ছোট অংশ দৃশ্যমান আলো হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। আলোকশক্তি বলে বেতারতরঙ্গ পৃষ্ঠ ও পদার্থ থেকে দৃশ্যমান আলোর চেয়ে কিছুটা ভিন্নভাবে প্রতিফলিত হতে পারে। অধ্যাপক ঝাও ও তাঁর দল রোবটকে এমনভাবে ডিজাইন করেছেন, যেন তা বেতারতরঙ্গের প্রতিফলন অনুভব করতে পারে। বেতারতরঙ্গ দৃশ্যমান আলোকতরঙ্গের চেয়ে অনেক দীর্ঘ। অর্থাৎ ক্ষুদ্র ধোঁয়ার কণা দ্বারা অবরুদ্ধ হয় না। এই বিষয়কে মাথায় নিয়ে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। এই তরঙ্গের মাধ্যমে রোবটরা আশপাশের সব কোনায় দেখতে পারে।

মার্কিন সংস্থা ওয়াভসেনসের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ফ্যাবিও দা সিলভা বলেন, ‘আমরা একটি অ্যালগরিদম তৈরি করেছি, যা আপনাকে তাৎক্ষণিকভাবে ও ক্রমাগতভাবে পুরো স্থানটি সম্পর্কে ধারণা দেয়। কোনো অ্যানটেনা না ঘুরিয়েই এই কাজ করা যায়।’

পুরো বিষয়টি আসলে বাদুড় যেভাবে তরঙ্গের মাধ্যমে ইকোলোকেশন ঠিক করে, তেমনই। এর আগে কিছু গবেষক বিভিন্ন অস্ত্র শনাক্ত করতে বেতারতরঙ্গ ব্যবহার করেছেন।

সূত্র: বিবিসি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক জ করছ ন ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

শিল্পকলায় অনুষ্ঠিত হলো ‘সাধুমেলা’

মানবিকতা ও ঐক্যের শাশ্বত বার্তা সমাজের প্রতিটি হৃদয়ে পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের আয়োজনে গত ১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় একাডেমির নন্দনমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাধুমেলা “মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি”।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান। সাধুমেলায় শুরুতে সমবেত কণ্ঠে লালনের ‘ভক্তিমূলক গান’ পরিবেশিত হয়। লালনসংগীত পরিবেশন করেন ফকির শামসুল সাঁই, ‘তিন পাগলে হলো মেলা’ পরিবেশন করেন মেহেরুন নেসা পূর্ণিমা। উপস্থাপনা করেন শেখ জামাল উদ্দিন টুনটুন। শ্রীকৃষ্ণ গোপাল পরিবেশন করেন ‘লীলার যার নাইরে সীমা’ এবং ‘দেখো দেখো মনো রায় হয়েছে’। গান পরিবেশন করেন দিপা মণ্ডল। ওমর আলী পরিবেশন করেন ‘আচলা ঝোলা তিলক মালা’। লালনসংগীত পরিবেশন করেন মোঃ মিরাজ সিকদার ‘আমি ওই চরণে দাসের যোগ্য নই’, আকলিমা ফকিরানী এবং লাভলী শেখ ‘রসো প্রেমে ঘাট ভাড়িয়ে তরী বেওনা’।

পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসেন মোঃ সমির হোসেন, ফারজানা আফরিন ইভা পরিবেশন করেন ‘আমায় রাখিলেন সেই কূপজল করে’ এবং লালনের গান ‘মন তোর এমন জনম আর কী হবে রে’ পরিবেশন করেন মোঃ মুক্তার হোসেন। এরপর লালনসংগীত পরিবেশন করেন মোসাঃ লিনা খাতুন ‘কোথায় সে অটল রূপে বারাম দেয়’, মনিরুল ইসলাম এবং আবু শাহীন খান ‘চিরদিন পুষলাম এক অচিন পাখি’। সবশেষে সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় লালনের গান।   
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ