রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার যুদ্ধ থামাতে দেশ দুটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে শান্তি আলোচনার পরিকল্পনা হয়েছে, তাতে ইউরোপকে যুক্ত করা হবে না। শনিবার জার্মানিতে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিয়ে এ কথা বলেছেন ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত কেইথ কেলগ।

শান্তি আলোচনায় ইউরোপ অংশ নেবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে কেইথ কেলগ ইউরোপের সঙ্গে শুধু আলোচনার বিষয়ে পরামর্শ করার ইঙ্গিত দেন। আলোচনায় ইউরোপকে সরাসরি যুক্ত করা হবে না, তা স্পষ্ট করে তিনি বলেন, ‘এটা ঘটবে না। এটা ব্ল্যাকবোর্ডের ওপর চকের মতো, শুধু একটি ঘষা দিতে পারবে। তবে আমি আপনাদের যা বলছি, তা আসলেই সত্যি।’

কেলগের এই মন্তব্যের পর আগামীকাল রোববার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে এক আলোচনায় ইউরোপের নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ।

আজ কেইথ কেলগ বলেন, ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে পূর্ববর্তী শান্তি আলোচনাগুলো ব্যর্থ হয়েছিল; কারণ, ওই আলোচনাগুলোর সঙ্গে অনেক দেশ যুক্ত ছিল। ওই দেশগুলোর এ ধরনের আলোচনা কার্যকর করার কোনো যোগ্যতা ছিল না। এবার আলোচনার ক্ষেত্রের আগের ওই পথ অনুসরণ করা হবে না।

শান্তি আলোচনা থেকে যে ইউরোপকে বাদ দেওয়া হতে পারে, তা এর আগে মিউনিখ সম্মেলনেই সতর্ক করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। একই সঙ্গে ইউরোপকে আরও তৎপর হওয়ার এবং নিজস্ব একটি সেনাবাহিনী গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। জেলেনস্কি বলেন, এই সেনাবাহিনী গঠনে ইউক্রেন কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করবে।

প্রায় তিন বছর ধরে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ চলছে। গত ২০ জানুয়ারি ক্ষমতায় বসার আগে থেকেই এই যুদ্ধ থামানোর বিষয়ে তৎপর ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে ফিরে সেই তৎপরতা আরও বাড়িয়েছেন তিনি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে আলাপ করেছেন। একটি শান্তি চুক্তি নিয়েও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদ নিরাপত্তায় তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাজধানী ঢাকাকে গুরুত্ব দিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, থানা পর্যায়ে নিরাপত্তার বিশেষ বার্তা পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ বেশকিছু সুপারিশ করেছে।

সম্পতি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ঈদ নিরাপদ উদযাপনের জন্য নাগরিকদের পরামর্শ দিয়েছে। এর মধ্যে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে ঈদে ভ্রমণ করা, ভ্রমণে নিজ ও পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে বিবেচনায় রাখা, চালকদের দ্রুতগতিতে গাড়ি চালাতে তাগিদ না দেওয়া, ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী হয়ে ছাদে  ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।রাস্তা পারাপারের সময় জেব্রা ক্রসিং অথবা ওভার ব্রিজ ব্যবহার করা, যেখানে জেব্রা ক্রসিং বা ফুট ওভার ব্রিজ নেই সেখানে যানবাহনের গতি দেখে নিরাপদে রাস্তা পার হওয়া, প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।

বাস মালিকদের প্রতি অপেশাদার, অদক্ষ ক্লান্ত অসুস্থ চালককে যাত্রীবাহী বাস বা গাড়ি না চালাতে বলা হয়েছে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি বের না করা, চালক যাতে নিয়ম মেনে গাড়ি চালায়, ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং না করে স্বাভাবিক গতিতে গাড়ি চালাতে হবে।

আরো পড়ুন:

শপিংমলগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে: র‌্যাব

রাজশাহীতে ভগ্নিপতিকে হত্যায় সম্বন্ধি গ্রেপ্তার

মালিকপক্ষকে পুলিশ জানিয়েছে, লঞ্চ স্পিডবোর্ড, স্টিমারে যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে না ওঠা, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের নৌভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সারা দেশের নিরাপত্তায় পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা  ছাড়াও আনসার সদস্য মাঠে রয়েছেন। তাদের নিরাপত্তায় সহযোগিতা করতে মাঠে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের।

এছাড়া সারা দেশে র‍্যাবের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে।বিপুলসংখ্যক র‌্যাব সদস্য নিরাপত্তায় নিয়োজিত আছেন। বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদেরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন, “ঈদের আগে, ঈদ ও ঈদ পরবর্তী সময়ে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার উদ্ভব যেন না হয় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতা শুরু করেছে। পোশাক পরিহিত পুলিশের সঙ্গে গোয়েন্দারা সমন্বয় করে এই নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।” 

পুলিশ জানিয়েছে, ঈদের সময় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি বেশি হয়। এসব প্রতিরোধে দেশের বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি ঢাকাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বসানো হয়েছে বিপুল পরিমাণ চেকপোস্ট, নেওয়া হয়েছে টহল তৎপরতা। অলি-গলিতে টহল জোরদার করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, সারা দেশের সবগুলো থানা এবং রাজধানীর ৫০ থানার অফিসার ইনচার্জদের নিয়ে ডিএমপি কমিশনার সভা করেছেন। সেখানে ঈদে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। পাশাপাশি মানুষ গ্রামে গেলে রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকার বাসা বাড়িতে যেন কোনো ধরনের চুরি, ডাকাতির মতো ঘটনা না ঘটে সেজন্য থানা পুলিশের সঙ্গে এলাকার নিরাপত্তা প্রহরীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় এলাকায় দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্যামেরা স্থাপন করা হয় সে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাত আলী বলেন, “আমরা আগে থেকেই পরিকল্পিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এ কারণে এখন পর্যন্ত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। যেন এ ধরনের পরিস্থিতির না হয় সেজন্য ডিএমপির প্রতিটি সদস্যকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”

এদিকে, প্রতিবারের মতো র‍্যাবও ঈদে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে।এরই অংশ হিসেবে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া র‍্যাবের টহল টিম, মোবাইল টিম দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানসহ বিভিন্ন স্থানে টহল অব্যাহত রেখেছে।

বুধবার (২৬ মার্চ) রাতে র‌্যাবের লিগাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, “ঈদে নিরাপত্তায় কোনো ধরনের ঝুঁকি বা শঙ্কা নেই। তারপরও সতর্ক অবস্থানে রয়েছি আমরা। মানুষ যেন ঈদ উংসব আনন্দমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উদযাপন করতে পারেন সেজন্য রাজধানীতে ১০০টি এবং সারা দেশে পায় সাড়ে ৩০০ টহলদল কাজ করছে।”

ঢাকা/এমআর/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ট্রাম্পের পারস্পরিক শুল্ক এড়াতে তৎপর ভারত, অর্ধেকের বেশি পণ্যে শুল্ক কমাতে রাজি
  • ঈদ নিরাপত্তায় তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
  • ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে রয়েছে চাপ, নেই যানজট