চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১ ছাত্রীকে বহিষ্কার এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কবি, সাহিত্যিক ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নামে থাকা ভবনগুলোর নাম পরিবর্তনের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী। শনিবার এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানানো হয়।

গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স, হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিন কমিটির এক সভায় ১১ ছাত্রীকে বহিষ্কার করা হয়। এর প্রতিবাদে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী এই বিবৃতি দিয়েছে।

ছাত্র মৈত্রীর বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গভীর রাতে শেখ হাসিনা হলের নামফলক ও হলের অভ্যন্তরে থাকা ভাস্কর্য ভাঙার চেষ্টার সময় পুরুষ শিক্ষার্থীরা জোরপূর্বক নারীদের হলে প্রবেশের ঘটনায় নিরাপত্তার স্বার্থে আপত্তি জানানো নারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১০ জনকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। শুধু নিরাপত্তার প্রশ্নে নারী শিক্ষার্থীরা হলে পুরুষ শিক্ষার্থীদের প্রবেশে আপত্তি তুলেছিলেন। সেই আপত্তিকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর করতে আসা পুরুষ শিক্ষার্থীরা অভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকা পালনকারী নারী শিক্ষার্থীদের “আওয়ামী লীগের দোসর” বলে গালাগালি করে। পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সামনেই বাক্‌বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। অথচ প্রশাসন নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে সব পক্ষের বক্তব্য শোনা বা ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পর্যালোচনা ছাড়াই ১০ নারী শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ৫ আগস্টের পর ছয় মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পতিত ফ্যাসিস্ট জমানার মতোই ভিন্নমত দমনের ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে শেখ হাসিনা হলের নামফলক ও ভাস্কর্য ভাঙার আবেদন জানানো নারী শিক্ষার্থীদেরই বহিষ্কার করা হলো। কারণ, তারা সংঘবদ্ধ পুরুষ শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করতে দেখে নিরাপত্তার স্বার্থে আপত্তি জানিয়েছিল।

অপর দিকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভবনের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করেছে ছাত্র মৈত্রী। তারা বলেছেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন খ্যাতনামা কবি, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী, দার্শনিক ও একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নামে থাকা ভবনগুলোর নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ, অসাম্প্রদায়িকতা, বিজ্ঞান ও মুক্তবুদ্ধির চর্চাকে নিরুৎসাহিত করার অপচেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুনপ্রক্টরকে লাঞ্ছনা ও ধর্ম অবমাননার অভিযোগ, ১১ ছাত্রীসহ ১২ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ১১ ছ ত র র ঘটন আপত ত

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পর দৃশ্যমান মাভাবিপ্রবি

টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে প্রধান ফটকের সংস্কার ও বৈদ্যুতিক আলোযুক্ত লোগোসহ নামফলক লাগিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরই সঙ্গে প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পর প্রধান ফটকে দৃশ্যমান হলো মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নাম ও লোগো।

প্রধান ফটকের জরাজীর্ণ অবস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম স্পষ্টভাবে না থাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষার্থীরা ফটক সংস্কার ও নতুন নামফলক বসানোর দাবি জানিয়ে আসছিল। তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক ড. মো. ফরহাদ হোসেনের কাছে বেশ কয়েকবার শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটক সংস্কারের দাবি তোলেন। কিন্তু দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। ৫ আগস্টের পর নতুন প্রশাসক এলে প্রধান ফটক সংস্কারের দিকে নজর দেওয়া হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রঙ করার পাশাপাশি প্রধান ফটকে লাগানো হয়েছে ৬০ বর্গফুটের একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি নামফলক। তাতে বৈদ্যুতিক আলো সংযুক্ত করা হয়েছে। প্রধান ফটক সংস্কারের পাশাপাশি বাকি ফটকগুলোরও সংস্কারের কথা জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

সংস্কার কাজ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিব আল হাসান রাব্বি বলেন, “ফটক একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক প্রতিচ্ছবি। অনেক শিক্ষার্থীর প্রথম আবেগ শুরু হয় সেই ফটকের সামনে থেকেই। প্রথমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দৃশ্যমান দেখে খুবই ভালো লাগছে।”

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সুফিয়ান বলেন, “প্রধান ফটক সংস্কার ও নামফলক লাগানো খুবই দরকার ছিল। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার দাবি ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ও লোগো যেন প্রধান ফটকে অনেক বড় করে লেখা থাকে, যা বাস্তবায়ন করেছে এই প্রশাসন।”

ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান এথি বলেন, “প্রধান ফটকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থাকায় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি পর্যটকদের কাছেও আকর্ষণীয় লাগবে। যা বিশ্ববিদ্যালয়কে সুন্দরভাবে তুলে ধরবে সবার কাছে।”

সংস্কার কাজের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলী মুহাম্মদ ফারুক হোসাইন (চলতি দায়িত্ব) বলেন, “আমরা প্রধান ফটকের কাজ শুরু করেছি। নতুন করে রঙ করার পাশাপাশি থাকবে আলোকসজ্জিত নামফলক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো। উপাচার্য স্যার অনুমতি দিলে আমরা বাকি ফটকগুলোরও সংস্কার করবো।”

মাভাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ জানান, ‘এবার বিশ্ববিদ্যালয়কে একটু গোছানো ও সুন্দর মনে হচ্ছে। আশাকরি শিক্ষার্থীদের কাছেও এটা ভালো লাগবে।"

ঢাকা/আবিদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পর দৃশ্যমান মাভাবিপ্রবি