সব বেচে দেশ ছাড়তে চান পুলিশ পরিদর্শক
Published: 15th, February 2025 GMT
সব সম্পদ বিক্রি করে বিদেশে পালানোর পাঁয়তারা করছেন পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ রিজাউল হক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে। আগে থেকে তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের সিংহভাগ ফিলিপাইনে পাচার করেছেন। এবার সুযোগ বুঝে চলে যাওয়ার পালা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গোয়েন্দা অনুসন্ধানে এ সব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
দুদকের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চাকরিকালে ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের ৯০ শতাংশ তিনি ফিলিপাইনে পাচার করেছেন। দেশটিতে তাঁর অর্থ-সম্পদ দেখভাল করছেন তাঁর ভায়রা মেহেদী হাসান সোহেল। নিজ দেশে তিনি ১০ শতাংশ সম্পদ রেখেছেন নামে-বেনামে।
দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, রিজাউল ৬-৭ মাস আগে ঢাকার রামপুরা থানায় কর্মরত ছিলেন। এর আগে তিনি একই পদে ধামরাই, আশুলিয়া, সাভার, নবীনগর, রূপগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও ফতুল্লায় কর্মরত ছিলেন। এই সময়ে তিনি ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত পড়ে বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছেন। তিনি বর্তমানে সিলেট রেঞ্জে ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত। অনিয়ম ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তিনি ২০২৩ সালের শেষ দিক থেকে প্রায় ১৮ মাস সাময়িক বরখাস্ত ছিলেন। তাঁর স্থায়ী ঠিকানা গোপালগঞ্জ।
দুদকের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, স্ত্রী তুহিন আরা বেগমের নামে গোপালগঞ্জ সদরের বৈশাখী সড়কে প্রায় ৩ কোটি টাকায় ছয়তলা ভবন নির্মাণ করেছেন রিজাউল। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল নম্বর ৬৪১৫/২০১১। পরে তিনি বাড়িটি মেজো শ্যালক মোল্লা রাশেদ খালেদের নামে হেবা (দান) করে দেন।
এই শ্যালকের নামে গোপালগঞ্জের চাঁদমারী সড়কে দুইতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। ঢাকার উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরের শাহ মখদুম অ্যাভিনিউয়ে ১৯ নম্বর বাড়িতে একটি ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছেন। টুঙ্গিপাড়ায় ১০ বিঘা জমির ওপর দুইতলা বাংলো বাড়িসহ রাশেদ এগ্রো ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তাঁর ছোট শ্যালক মোল্লা শফিকুর রহমানের নামে হ্যারিয়ার গাড়ি কিনেছেন। এর দাম ৭০ লাখ টাকা। মেজো শ্যালকের নামে ১৫ লাখ টাকায় আরও একটি গাড়ি কেনা হয়। এ ছাড়া ৭০ লাখ টাকায় নোয়া মাইক্রোবাস কিনে দিয়েছেন। টুঙ্গিপাড়ায় ৪০ লাখ টাকায় ১৩১ শতাংশ জমি কিনে দিয়েছেন। ৮০ লাখ টাকায় ২৩৩ শতাংশ জমি কিনে দিয়েছেন। স্ত্রী তুহিন আরা বেগমের নামে টুঙ্গিপাড়ায় ৬ লাখ টাকায় ১২৮ শতাংশ জমি কিনে দিয়েছেন।
এ ছাড়া গোপালগঞ্জ সদর, টুঙ্গিপাড়া, কাশিয়ানী, মুকসুদপুর, কোটালীপাড়া, ঢাকা মহানগরে বিভিন্ন হাউজিংসহ ধামরাই, আশুলিয়া, সাভার, নবীনগর, রূপগঞ্জ, পূর্বাচল, উত্তরা, মুন্সীগঞ্জ, ফতুল্লা ও ফরিদপুরে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন।
বিদেশে পালানোর আগে তাঁর বিরুদ্ধে দ্রুত অনুসন্ধান শুরু, সম্পত্তি ক্রোক ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আদেশ জারির কথা ভাবছে দুদক।
জানতে চাইলে এ অনুসন্ধানের সঙ্গে যুক্ত দুদক উপপরিচালক মো.
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে পরিদর্শক মোহাম্মদ রিজাউল হকের মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি ধরেননি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকায় কেন্দ্রীয় কমিটির সভা ডেকেছে হেফাজত
মহাসমাবেশের আলোচ্য বিষয় ও ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে ২০ এপ্রিল সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সভা ডেকেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। ওই দিন সকাল ১০টায় রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এ সভা হবে।
সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৩ মে মহাসমাবেশ হবে। হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী এতে সভাপতিত্ব করবেন। মহাসমাবেশ সামনে রেখে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সভা আহ্বান করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই সভায় সমাবেশের আলোচ্য বিষয়, আমন্ত্রিত অতিথিসহ মহাসমাবেশের ঘোষণা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির পুনর্গঠনের পর ২১ সেপ্টেম্বর সংগঠনের প্রথম কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সভা হয়। ২০ এপ্রিল সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির দ্বিতীয় সভা হতে যাচ্ছে।
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মুফতি কিফায়াতুল্লাহ আজহারীর নামে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ বিষয়ে গতকাল সোমবার রাতে চট্টগ্রামের জামিয়া ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগর মাদ্রাসায় সংগঠনের এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সংগঠনের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা কেন্দ্রীয় পরিকল্পনাগুলো আরও সংগঠিত ও কার্যকর করার লক্ষ্যে ২০ এপ্রিল কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ বৈঠকে বসবে। সেদিন সভায় কমিটির সব সদস্যের উপস্থিতি নিশ্চিত করার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়।
হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে সভায় সংগঠনের মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নায়েবে আমির মুফতি জসিম উদ্দীন, মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, মাওলানা আইয়ুব বাবুনগরীসহ প্রমুখ।