সব সম্পদ বিক্রি করে বিদেশে পালানোর পাঁয়তারা করছেন পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ রিজাউল হক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে। আগে থেকে তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের সিংহভাগ ফিলিপাইনে পাচার করেছেন। এবার সুযোগ বুঝে চলে যাওয়ার পালা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গোয়েন্দা অনুসন্ধানে এ সব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
দুদকের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চাকরিকালে ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের ৯০ শতাংশ তিনি ফিলিপাইনে পাচার করেছেন। দেশটিতে তাঁর অর্থ-সম্পদ দেখভাল করছেন তাঁর ভায়রা মেহেদী হাসান সোহেল। নিজ দেশে তিনি ১০ শতাংশ সম্পদ রেখেছেন নামে-বেনামে।

দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, রিজাউল ৬-৭ মাস আগে ঢাকার রামপুরা থানায় কর্মরত ছিলেন। এর আগে তিনি একই পদে ধামরাই, আশুলিয়া, সাভার, নবীনগর, রূপগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও ফতুল্লায় কর্মরত ছিলেন। এই সময়ে তিনি ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত পড়ে বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছেন। তিনি বর্তমানে সিলেট রেঞ্জে ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত। অনিয়ম ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তিনি ২০২৩ সালের শেষ দিক থেকে প্রায় ১৮ মাস সাময়িক বরখাস্ত ছিলেন। তাঁর স্থায়ী ঠিকানা গোপালগঞ্জ।
দুদকের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, স্ত্রী তুহিন আরা বেগমের নামে গোপালগঞ্জ সদরের বৈশাখী সড়কে প্রায় ৩ কোটি টাকায় ছয়তলা ভবন নির্মাণ করেছেন রিজাউল। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল নম্বর ৬৪১৫/২০১১। পরে তিনি বাড়িটি মেজো শ্যালক মোল্লা রাশেদ খালেদের নামে হেবা (দান) করে দেন।
এই শ্যালকের নামে গোপালগঞ্জের চাঁদমারী সড়কে দুইতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। ঢাকার উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরের শাহ মখদুম অ্যাভিনিউয়ে ১৯ নম্বর বাড়িতে একটি ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছেন। টুঙ্গিপাড়ায় ১০ বিঘা জমির ওপর দুইতলা বাংলো বাড়িসহ রাশেদ এগ্রো ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তাঁর ছোট শ্যালক মোল্লা শফিকুর রহমানের নামে হ্যারিয়ার গাড়ি কিনেছেন। এর দাম ৭০ লাখ টাকা। মেজো শ্যালকের নামে ১৫ লাখ টাকায় আরও একটি গাড়ি কেনা হয়। এ ছাড়া ৭০ লাখ টাকায় নোয়া মাইক্রোবাস কিনে দিয়েছেন। টুঙ্গিপাড়ায় ৪০ লাখ টাকায় ১৩১ শতাংশ জমি কিনে দিয়েছেন। ৮০ লাখ টাকায় ২৩৩ শতাংশ জমি কিনে দিয়েছেন। স্ত্রী তুহিন আরা বেগমের নামে টুঙ্গিপাড়ায় ৬ লাখ টাকায় ১২৮ শতাংশ জমি কিনে দিয়েছেন।

এ ছাড়া গোপালগঞ্জ সদর, টুঙ্গিপাড়া, কাশিয়ানী, মুকসুদপুর, কোটালীপাড়া, ঢাকা মহানগরে বিভিন্ন হাউজিংসহ ধামরাই, আশুলিয়া, সাভার, নবীনগর, রূপগঞ্জ, পূর্বাচল, উত্তরা, মুন্সীগঞ্জ, ফতুল্লা ও ফরিদপুরে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন।
বিদেশে পালানোর আগে তাঁর বিরুদ্ধে দ্রুত অনুসন্ধান শুরু, সম্পত্তি ক্রোক ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আদেশ জারির কথা ভাবছে দুদক।
জানতে চাইলে এ অনুসন্ধানের সঙ্গে যুক্ত দুদক উপপরিচালক মো.

মশিউর রহমান সমকালকে বলেন, ‘সোর্সের মাধ্যমে রিজাউল হকের অনিয়ম, দুর্নীতি, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের তথ্য জানা গেছে। অভিযোগটি প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের জন্য কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। কমিশনের অনুমতি পাওয়া গেলে অনুসন্ধান ও তাঁকে আইনের আওতায় আনা হবে।’
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে পরিদর্শক মোহাম্মদ রিজাউল হকের মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি ধরেননি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প লগঞ জ কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

এয়ার ইন্ডিয়ার ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন মন্ত্রী

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান জানিয়েছেন, তাঁর কাছে ভাঙা সিটের টিকিট বিক্রি করেছে এয়ার ইন্ডিয়া। 

গতকাল শনিবার এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে সামাজিক মাধ্যম এক্সে তিনি লেখেন, এয়ার ইন্ডিয়া ‘যাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা’ করছে। 

তিনি জানান, ভাঙা সিটের ব্যাপারে বিমানের এক ক্রুকে জিজ্ঞেস করা হলে তাঁকে বলা হয়, সিটটিতে যে ত্রুটি রয়েছে, সেটি সংস্থাকে জানানো হয়েছিল। এর টিকিট বিক্রি না করতেও বলা হয়েছিল।

এক্সে শিবরাজ সিং লেখেন, ‘পুসার কিষাণ মেলা উদ্বোধন করতে আজ আমার ভোপাল থেকে দিল্লি আসতে হয়। সেখানে বিভিন্ন প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমার আলোচনা হয়। আমি এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট নাম্বার এআই৪৩৬ এ একটি টিকিট বুক করি। আমাকে ৮সি সিটটি দেওয়া হয়। বসতে গিয়ে দেখি সিটটি ভাঙা; নিচু হয়ে আছে। সেখানে বসতে অস্বস্তি হচ্ছিল।’ এনডিটিভি। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ