ফেলিক্স বামগার্টনার। অস্ট্রিয়ান বেজ জাম্পার ও স্কাইডাইভার। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে অনন্য উচ্চতায় দাঁড়ানো। এই বেজ জাম্পারের বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে অনুপ্রেরণার কথা তুলে এনেছেন ইমাম হোসেন মানিক

আমাকে অনেকেই দুনিয়ার সাহসী মানুষদের একজন মনে করেন। এটি আমার জন্য অনেক গর্বের। আমি কিন্তু নাক ডেকে ঘুমাতে পারি না। কারণ, ঘুমাতে গেলেই আমার কানে আসে আকাশের আয় আয় ডাক। আমিও সেই ডাকে সাড়া দিতে পা বাড়িয়ে দিই! মনে করি, যতবার আমি আকাশে উঠেছি ঠিক ততবারই নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেছি। এ জন্যই অন্যদেরও নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে যাচাই করতে আকাশের পথে ছুটতে বলি।
অন্তত একবার হলেও ওপরে যান
১৪ অক্টোবর ২০১২, আমি ছোট্ট একটি প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে আমার স্কেটবোর্ড জুড়ে দিয়ে ১২৭,৮৫২.

৪ ফুট ওপর থেকে লাফ দিয়েছিলাম। লাফিয়ে সেই ক্যাপসুলে ঝুলে থাকার দৃশ্য বিশ্বের কোটি মানুষ দেখেছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। কেউবা টিভিতে দেখে চোখ কপালে তুলে নিয়েছিল! এমন অসংখ্য রেকর্ড যুক্ত হয়েছে আমার নামের সঙ্গে। তবু ২০১২ সালের সেই দিনটিকে স্মরণ করি বারবার। আর বলি, আমি বিশ্বকে দেখাতে পেরেছি, আমি কী করেছি। তা ছাড়া আমি মনে করি, সবার অন্তত একবার হলেও ওপরে যাওয়া উচিত। তখন মানুষ বুঝতে পারবে, মানুষ হিসেবে আমরা কত ছোট আর আমাদের ক্ষমতাটাই-বা কত সামান্য!
যেভাব ইতিহাসে ঢুকে পড়ি 
সময়ের সঙ্গে বদলে যায় প্রযুক্তি। আপনি আপনার সময়ের সব প্রযুক্তিকে বন্ধু করতে পারেন। আমিও গলায় গলায় ভাব করে নিয়েছি প্রযুক্তির। তাই বলে প্রযুক্তিতে ডুবে থাকা যাবে না। আমি লাফ দেওয়ার আগে উচ্চতা মাপক যন্ত্রে সব পর্যবেক্ষণ করি। চলন্ত শব্দ শুনলেই বুঝতে পারি, আমার লাফানো উচিত কিনা। প্রযুক্তি এবং মন যখনই আমাকে সবকিছু ঠিকঠাক আছে বলে সায় দেয়, তখনই আমি দরজা খুলি। তারপর ফের যন্ত্রপাতির সংকেত পেলে লাফিয়ে পড়ি। এভাবেই আমার লাফগুলো ইতিহাস হয়ে দাঁড়ায়। আমিও ঢুকে পড়ি ইতিহাসের সোনালি পাতায়!
ঝুঁকি ও পৃথিবীর প্রতি মায়া
এই লাফানোয় অনেক ঝুঁকি থাকে। কত পরিচিত আর অপরিচিত মুখ এই লাফের খপ্পরে পড়ে হারিয়ে গেছে, তার ইয়ত্তা নেই। লাফাতে গিয়ে কারও ক্যাপসুলে আগুন ধরেছে। কারও অসতর্কতায় ধপ করে নিভে গেছে জীবনপ্রদীপ। নিজে কখনও ভুল করলে মনে হয়, আমি আর পৃথিবীর মাটি চোখে দেখব না? আমার সেলফোনটায় প্রিয় মানুষের সঙ্গে আর কথা বলতে পারব না? এমন কত চিন্তা পৃথিবীর দিকে আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। পৃথিবী আসলেই অনেক সুন্দর! 
ভুল আমিও করেছি
 আমার সব সিদ্ধান্ত যে যথাযথ হয়েছে তা বলব না। অনেক ভুলও করেছি। মানুষ অনেক হাসাহাসি করেছে আমার সিদ্ধান্তে। তাই আমি লাফানোর আগে সব সময় প্রযুক্তির দিকে চেয়ে থাকি। প্রযুক্তি যখনই আমাকে সংকেত দেয়, তখনই আমি লাফিয়ে পড়ি। নতুন রেকর্ড গড়ার পথে এগিয়ে যাই। সাহস আমি সব সময় পকেটে নিয়েই চলি। সাহস নেওয়ার জন্য কোনো কিছুর শরণাপন্ন হতে হয় না আমাকে। প্রতিবার ভুল থেকে আমি নতুন করে সাহস সঞ্চার করি। ওই যে বললাম, প্রযুক্তিতে ডুবে না থেকে আমি জীবন উপভোগ করি; একান্ত নিজের মতো 
করে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম র স

এছাড়াও পড়ুন:

কঙ্গোতে আগুন লেগে নৌকাডুবি, অন্তত ১৪৮ প্রাণহানি

মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক (ডিআর) কঙ্গোতে একটি ইঞ্জিনচালিত কাঠের নৌকায় আগুন লেগে ডুবে যাওয়ার ঘটনায় অন্তত ১৪৮ জন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে কঙ্গো নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর রয়টার্সের।

ডিআর কঙ্গোর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, আগুন লাগার সময় নৌকাটিতে নারী ও শিশুসহ পাঁচ শতাধিক যাত্রী ছিলেন। পুলিশ ও উদ্ধারকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এইচ বি কঙ্গোলো নামের সেই ইঞ্জিনচালিত নৌকাটি মাতানকুমু বন্দর থেকে বোলোম্বা অঞ্চলের দিকে যাচ্ছিল। পথে এমবানদাকা এলাকায় পৌঁছানোর পর নৌকাটিতে আগুন ধরে যায় এবং অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিতে ডুবে যায়।

কঙ্গোর নদী পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কম্পেটেন্ট লোয়োকো অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছেন, নৌকার ডেকে এক নারী রান্না চড়িয়েছিলেন। সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত।

ডুবে যাওয়া সেই নৌকাটি থেকে প্রায় ১০০ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তাদের মধ্যে যাদের আগুনে পোড়ার ক্ষত রয়েছে, তাদেরকে পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে।

কঙ্গোতে নৌকাডুবি বিরল কোনো দুর্ঘটনা নয়। কারণ গণপরিবহন হিসেবে সেখানে যেসব নৌকা ব্যবহৃত হয়, সেগুলোর অধিকাংশই পুরনো ও ত্রুটিযুক্ত। আবার অনেক সময় ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী বা মালপত্র বোঝাই করে নৌকাগুলো।

২০২৪ সালে কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে কিভু হ্রদে একটি নৌকা ডুবে নিহত হয়েছিলেন ৭৮ জন। একই বছর ডিসেম্বরে পশ্চিমাঞ্চলে নদীতে নৌকাডুবে নিহত হন অন্তত ২২ জন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ