গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ও কার্ডিয়াক বিভাগে চিকিৎসক নেই। ফলে মিলছে না প্রত্যাশিত সেবা। হাসপাতালটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা যন্ত্র, উপকরণ, লোকবল সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত।
জানা যায়, আড়াইশ শয্যার এ হাসপাতালটি স্বাস্থ্যসেবায় প্রায় ১২ লাখ জেলাবাসীর একমাত্র ভরসার স্থল। এ হাসপাতাল থেকে বাগেরহাট, নড়াইল, পিরোজপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, খুলনা ও বরিশাল জেলার মানুষ চিকিৎসাসেবা নেন। হাসপাতালটিতে মোট ১৩টি বিভাগ চালু রয়েছে। এর মধ্যে মেডিসিন ও কার্ডিয়াক বিভাগে চিকিৎসক নেই। মেডিকেল অফিসার দিয়ে কোনো রকমে চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে এ দুই বিভাগ। প্রতিদিন বহির্বিভাগ থেকে গড়ে এক হাজার একশ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে মেডিসিন ও কার্ডিয়াক রোগী সাড়ে চারশ। আন্তঃবিভাগে ভর্তি থাকছেন প্রায় তিনশ রোগী। 
সম্প্রতি হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালের স্যানিটেশন ব্যবস্থা নাজুক। রোগীদের ৩ টাকা লিটার দরে হাসপাতাল চত্বরে স্থাপিত ফিল্টার থেকে সুপেয় পানি কিনে খেতে হচ্ছে। রোগীর ওয়ার্ডগুলো দুর্গন্ধময়। মেডিসিন ও কার্ডিয়াক বিভাগে ঝুঁকি নেই এমন রোগী ভর্তি রাখা হয়েছে। এমআরআই বিভাগ ২০১৯ সালের মার্চ মাস থেকে বন্ধ। সিটিস্ক্যান কাজ করছে না ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে। ফিল্মের অভাবে হচ্ছে না এক্স-রে। এখানে গাইনি, সার্জারি, অর্থোসার্জারিসহ বিভিন্ন ধরনের অপারেশন চালু রয়েছে। খাবারের মান নিয়েও রয়েছে অল্পবিস্তর অভিযোগ। ল্যাবে অতি প্রায়োজনীয় সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালু রয়েছে।
ভর্তি রোগী আলী আজমের স্বজন রহমত আলী বলেন, এখানে স্যানিটেশন ব্যবস্থা নাজুক। খাবার পানি বাইরে থেকে কিনতে হয়। খাবারের মান তেমন ভালো নয়। ওয়ার্ডে দুর্গন্ধ।
চিকিৎসা নিতে আসা বাগেরহাট জেলার গাওলা গ্রামের সাকিব হোসেন মোল্লা বলেন, হাসপাতালে মেডিসিন ও কার্ডিয়াক বিভাগ থেকে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না। এ বিভাগে চিকিৎসক দিলে হাসপাতাল ভালো চলবে। কারণ, হাসপাতালে মেডিসিন ও কার্ডিয়াক রোগী বেশি হয়। এমআরআই, সিটিস্ক্যান ও এক্স-রে চালু করলে তারা স্বল্প খরচে এ সেবা পাবেন।
নড়াইল জেলার নড়াগাতী থানার দেবদুন গ্রামের রোখসানা আক্তার বলেন, চিকিৎসার জন্য তারা এ হাসপাতালের ওপর ভরসা করেন। বিভিন্ন সমস্যার কারণে এখানে এসে সেবা পান না। তাই দ্রুত হাসপাতালের সব সমস্যা সমাধানের দাবি জানান তিনি।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.

জীবিতেষ বিশ্বাস জানান, এ হাসপাতাল থেকে ৮ জেলার রোগী চিকিৎসাসেবা নেন। এখানে চিকিৎসকের পদ রয়েছে ৬৬ জনের। এর মধ্যে কর্মরত ৩৬ জন। ৩০ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। মেডিসিন বিভাগে ১ জন কনসালট্যান্ট ও ১ জন জুনিয়র কনসালট্যান্ট থাকার কথা। এ বিভাগের ওই দুটি পদই শূন্য। এছাড়া কার্ডিয়াক বিভাগেও দুই কনসালট্যান্ট চিকিৎসক নেই। এ দুই বিভাগ মেডিকেল অফিসার দিয়ে চালানো হচ্ছে। পিডব্লিউডি’র সহযোগিতায় স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নতি করা হয়েছে। মেডিসিন, কার্ডিয়াক বিভাগসহ শূন্যপদে চিকিৎসক পেতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এমআরআই, সিটিস্ক্যান ও এক্স-রে চালু করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে তারা চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস থ চ ক ৎসক সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

শিল্পকলায় অনুষ্ঠিত হলো ‘সাধুমেলা’

মানবিকতা ও ঐক্যের শাশ্বত বার্তা সমাজের প্রতিটি হৃদয়ে পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের আয়োজনে গত ১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় একাডেমির নন্দনমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাধুমেলা “মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি”।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান। সাধুমেলায় শুরুতে সমবেত কণ্ঠে লালনের ‘ভক্তিমূলক গান’ পরিবেশিত হয়। লালনসংগীত পরিবেশন করেন ফকির শামসুল সাঁই, ‘তিন পাগলে হলো মেলা’ পরিবেশন করেন মেহেরুন নেসা পূর্ণিমা। উপস্থাপনা করেন শেখ জামাল উদ্দিন টুনটুন। শ্রীকৃষ্ণ গোপাল পরিবেশন করেন ‘লীলার যার নাইরে সীমা’ এবং ‘দেখো দেখো মনো রায় হয়েছে’। গান পরিবেশন করেন দিপা মণ্ডল। ওমর আলী পরিবেশন করেন ‘আচলা ঝোলা তিলক মালা’। লালনসংগীত পরিবেশন করেন মোঃ মিরাজ সিকদার ‘আমি ওই চরণে দাসের যোগ্য নই’, আকলিমা ফকিরানী এবং লাভলী শেখ ‘রসো প্রেমে ঘাট ভাড়িয়ে তরী বেওনা’।

পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসেন মোঃ সমির হোসেন, ফারজানা আফরিন ইভা পরিবেশন করেন ‘আমায় রাখিলেন সেই কূপজল করে’ এবং লালনের গান ‘মন তোর এমন জনম আর কী হবে রে’ পরিবেশন করেন মোঃ মুক্তার হোসেন। এরপর লালনসংগীত পরিবেশন করেন মোসাঃ লিনা খাতুন ‘কোথায় সে অটল রূপে বারাম দেয়’, মনিরুল ইসলাম এবং আবু শাহীন খান ‘চিরদিন পুষলাম এক অচিন পাখি’। সবশেষে সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় লালনের গান।   
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ