প্রতিবছর শুকনো মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদে পানি শুকিয়ে যায়। এ সময় হ্রদের অনেক স্থানে পানি কমে গিয়ে জেগে উঠে ছোট-বড় চর। হ্রদের ওপর নির্ভরশীল মানুষ বর্ষা মৌসুমে হ্রদে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। পানি শুকিয়ে গেলে চরে চাষাবাদ করেন। চলতি বছরও শুকনো মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদের চরে চাষাবাদ শুরু করে দিয়েছেন আশপাশের চাষিরা। হ্রদে ভেসে ওঠা জমি পলি মাটিতে ভরা। তাই এখানে জমিতে কোনো চাষ দিতে হয় না। খরচ ও পরিশ্রম কম হয়। অবশ্য এখন যারা ধান চাষ করছেন তারা কিন্তু বর্ষা মৌসুমে আবার মাছ ধরবেন, এখন তারা ‘শখের চাষি’।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায, প্রতিবছর বোরো মৌসুমে কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হ্রদে ভেসে ওঠা চরের প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হেক্টর জমিতে ধানের চাষ হয়ে থাকে। এসব জমিতে ধানের ভালো ফলন হয়। এসব জমিতে চাষের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের উচ্চফলনশীল ও উন্নত জাতের চারা দেওয়া হয়।
সম্প্রতি কাপ্তাই উপজেলাসহ হ্রদ সংলগ্ন বিলাইছড়ি উপজেলার কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বোরো ধানে ছেয়ে গেছে হ্রদের চারপাশ। খালি থাকা চরগুলোতে পানি সেচ দিয়ে বোরো ধানের চারা লাগানোর ধুম চলছে। অনেকে জেগে ওঠা চরগুলোকে চাষের উপযোগী করে তুলছেন।
 ১৫ বছর ধরে কাপ্তাই হ্রদে শুকনো ভেসে ওঠা জমিতে ধান চাষ করে আসছেন মো.

আলী ও সরাফত আলী। তারা বলেন, ‘একসময় কাপ্তাই হ্রদে সারাবছর মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতাম। কিন্তু দুই দশক ধরে শুকনো মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদে যখন পানি শুকিয়ে যায় তখন মাছ ধরা বন্ধ হয়ে যায়। এই সময় আয়-রোজগার তেমন থাকে না। সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয়। এমতাবস্থায় মাছ ধরার পাশাপাশি শুকনো মৌসুমে হ্রদে পানি কমে গেলে চরের জমিতে চাষাবাদ করি।’
কাপ্তাই হ্রদের ওপর নির্ভরশীল চাষি অংবাচিং মারমা, কালাচাঁন তঞ্চঙ্গ্যা, সুরাইয়া বেগম জানান, জলে ভাসা জমিতে চাষাবাদ করে বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যায়। এসব জমি পলিতে ভরা থাকে বলে চাষ ছাড়াই চাষাবাদ করা যায়। তাছাড়া মাটি নরম থাকায় পরিশ্রম যেমন কম হয়, তেমনি খরচও বেশি লাগে না। এই চাষাবাদে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও অবসর সময় চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করে থাকেন। কয়েকজন চাষি অবশ্য সমস্যার কথাও বললেন, তাদের মতে ধান পাকার আগেই অতিবৃষ্টি হলে হ্রদে পানি বেড়ে যায়, তখন ফসল তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকে। 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরান আহমেদ বলেন, ‘যারা জলে ভাসা জমিতে চাষাবাদ করেন তাদের আমরা কৃষি বিভাগ থেকে ধান, সরিষা, ভুট্টা, ওসূর্যমুখীর বীজ দিয়েছি। এছাড়া চাষের জন্য সার ও সরঞ্জামও দেওয়া হয়।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ ষ ব দ কর উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মিরপুরে খেলতে নেমেই ঘূর্ণিজাদুতে অনূর্ধব-১৯ দলের রাতুলের ফাইফার

অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের সদস্য সামিউন বাসির রাতুলের ঘূর্ণিতে বড় জয় পেয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। ২০২৪ যুব বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন রাতুল।  লিস্ট এ ক্রিকেটে নিজের অভিষেক ম্যাচেই ঘূর্ণিজাদুতে প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করেন এই বাঁহাতি স্পিনার।

রূপগঞ্জ টাইগার্সের বিপক্ষে মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) মিরপুরে খেলতে নেমে ৬ উইকেটে ২৯৮ রান করে রূপগঞ্জ। তাড়া করতে নেমে রাতুলের ঘূর্ণিতে মাত্র ১২৬ রানে অলআউট হয় টাইগার্স।

রাতুল একাই নেন ৫ উইকেট। ১০ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন এই স্পিনার। এর আগে ব্যাট হাতেও রাতুল রাখেন দারুণ অবদান। ম্যাচসেরার পুরস্কার ওঠে রাতুলে হাতে।

আরো পড়ুন:

এবার এনামুলের অপরাজিত ১৪৪, জিতল তার দলও

তিন সেঞ্চুরির ম্যাচে প্রাইম ব্যাংকের জয়

যুব দলের হয়ে মিরপুরে আগে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। ম্যাচ শেষে এই স্পিনার বলেন, “এখানে আমি আগেও ম্যাচ খেলেছি। কিন্তু বড় টুর্নামেন্টে এই প্রথম। বোলিং করতে পেরে ভালোলাগা কাজ করছে।”

এ ছাড়া দুটি করে উইকেট নেন তানভীর ইসলাম ও তানজীম হাসান সাকিব। টাইগার্সের হয়ে সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন আরিফুল হক। আর কেউ বিশের বেশি রান করতে পারেননি।

এর আগে জাকের আলী অনিক-তানজীদ হাসান তামিমের ফিফটিতে ভর করে ২৯৯ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে রূপগঞ্জ।

জাকের সর্বোচ্চ ৭৩ রান করেন। ৮৫ বলে ৫টি চার ও ২টি ছয়ের মারে এই রান করেন জাকের। ৫৯ বলে ৬১ রান আসে তানজীদের ব্যাট থেকে। ১১টি চারে সাজানো ছিল তার ইনিংসটি।

এ ছাড়া রাতুল ৪০, শেখ মেহেদী হাসান ৩৫ ও আফিফ হোসেন ধ্রুব ২৯ রান করেন। রুপগঞ্জের হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন হুসনা হাবিব মেহেদী।

ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ