Samakal:
2025-03-25@22:22:54 GMT

বসন্ত বাতাসে সুরের মায়া

Published: 15th, February 2025 GMT

বসন্ত বাতাসে সুরের মায়া

চট্টগ্রামে বসন্ত উৎসব মানেই বোধন। ডিসি হিলে বোধনের বসন্ত উৎসব হয়ে উঠেছিল ঐতিহ্যের স্মারক। তবে সময়ের ঘাতে বোধনের বসন্ত উৎসবও ভাগ হয়ে গেছে। এক গ্রুপ বসন্তবরণ করে মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুলে, অন্য গ্রুপ মাতে পাহাড়তলী আমবাগান রেলওয়ে জাদুঘর সংলগ্ন পার্কে ফাগুন হাওয়ায়। আর বসন্ত উৎসবের প্রাণকেন্দ্র বসন্ত দিনে থাকে নীরব।
এবারও ১৪ ফেব্রুয়ারি গান, নাচ, আবৃত্তি, ঢোলবাদন, কথামালা, শোভাযাত্রায় সরগরম ছিল দুই গ্রুপের বসন্ত উৎসব। পহেলা ফাল্গুন ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করেছে বোধন আবৃত্তি পরিষদের দুই গ্রুপ। পাশাপাশি ১৫ ফেব্রুয়ারি দিনব্যাপী চট্টগ্রামের সিআরবি শিরীষ তলায় অনুষ্ঠিত হয় প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের আয়োজনে বসন্ত উৎসব।
পাহাড়তলী আমবাগান রেলওয়ে জাদুঘর সংলগ্ন পার্কে ‘নিবিড় অন্তরতর বসন্ত এলো প্রাণে’ শিরোনামে বোধনের বসন্ত উৎসব সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হয় ভায়োলিনিস্ট চিটাগংয়ের যন্ত্রসংগীতের মধ্য দিয়ে।
বোধন আবৃত্তি পরিষদের সভাপতি সোহেল আনোয়ারের সভাপতিত্বে এ সময় কথামালায় অংশ নেন সংগঠনের উপদেষ্টা বাসুদেব সিনহা, নিপ্পন পেইন্টের সিনিয়র ম্যানেজার মানব কুমার সাহা ও সুবর্ণা চৌধুরী। এরপর বসন্তের হাওয়ায় দলীয় নৃত্যে অংশ নেন– স্কুল অব ক্লাসিক্যাল অ্যান্ড ফোক ডান্স, ওডিসি অ্যান্ড টেগোর ডান্স মুভমেন্ট সেন্টার, নৃত্যরূপ একাডেমি, মাধুরী ডান্স একাডেমি, সুরাঙ্গন বিদ্যাপীঠ, নৃত্য নিকেতনের শিল্পীরা। 
এরপর নানা ভাব-বন্ধনের গাঢ়তায় গানে অংশ নেন সুরপঞ্চম, ধ্রুপদ সংগীত নিকেতন, আর কে মিউজিক একাডেমি, আন্তর্জাতিক বিশ্বতান ও নন্দিনী রায়। বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করেন বোধন আবৃত্তি পরিষদের আবৃত্তি শিল্পীরা।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিকালের আয়োজন। ঢোলবাদনের মধ্য দিয়ে বসন্ত শোভাযাত্রা পাহাড়তলীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে বসন্ত মঞ্চে যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করে মোহন সংগীত বিদ্যালয়। সংগীত পরিবেশন করে বাগেশ্বরী সংগীতালয়। নৃত্য পরিবেশনায় ছিলেন নৃত্যেশ্বর নৃত্যালয়ের শিল্পীরা। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশনায় ছিল বোধন। পুরো অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন– গৌতম চৌধুরী, পল্লব গুপ্ত, পলি ঘোষ, সুচয়ন সেনগুপ্ত, ঋত্বিকা নন্দী, ফাতেমা তুজ জোহরা, ইভান পাল, অংকিতা ভট্টাচার্য্য।
কথামালায় বোধন সভাপতি সোহেল আনোয়ার 
বলেন, ‘নানা টানাপোড়েনের গ্লানি মুছে যায় এই
 বসন্তে। এ ফাগুনেই রক্তে রঞ্জিত হয়েছে বাংলার রাজপথ। বুকের রক্তে বাঙালি রক্ষা করেছে মাতৃভাষার মর্যাদা। বসন্ত আমাদের মনে দোলা দিয়ে যায়। আমাদের নতুন করে বাঁচতে শেখায়। আমাদের প্রাণোচ্ছল করে তোলে।’
বোধনের অনুষ্ঠান সম্পাদক মৃন্ময় বিশ্বাস বলেন, ‘সমাজ গঠনের জন্য বাঙালির উৎসব-পার্বণগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম। সেই চিন্তা মাথায় রেখে বোধন ২০০৬ সালে চট্টগ্রামে প্রথমবারের মত বসন্ত উৎসবের সূচনা করেছিল। প্রতিবারের মতো এবারও দিনভর বর্ণিল আয়োজনে দিনটি উদযাপন করেছি আমরা। এতে সবার প্রাণবন্ত উপস্থিতি ও ইতিবাচক সাড়া আমাদেরকে আনন্দিত করেছে। সবার সহযোগিতায় এই ধারাবাহিকতা আগামীতেও বজায় থাকবে।’
পুরো দিনের এমন আয়োজন পরিবার নিয়ে উপভোগ করা স্নেহা চৌধুরী বলেন, ‘এই দিনটির জন্য সারা বছর অপেক্ষায় থাকি। দেশের চলমান পরিস্থিতির মাঝে এমন বর্ণিল আয়োজন আনন্দ ও স্বস্তি ফিরে দিয়েছে আমার মতো অনেকের মনে। প্রতিবারের মতো এবারও এমন দারুণ আয়োজনের জন্য বোধন আবৃত্তি পরিষদের সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বড়দের মতো প্রতিটি পরিবেশনা দারুণভাবে উপভোগ করেছে আমার সন্তানরাও। এমন আয়োজন সত্যি প্রশংসার দাবিদার।’
মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুলে বোধন আবৃত্তি পরিষদের অন্য অংশের বসন্ত উৎসব শুরু হয় তালতীর্থ তবলা শিক্ষাকেন্দ্রের যন্ত্রসংগীত দিয়ে। যন্ত্রসংগীতে ছিলেন সুদেব কুমার দাশ। দলীয় সংগীতে ছিল সদারঙ্গ উচ্চারঙগ সংগীত পরিষদ, নজরুল সংগীত শিল্পী সংস্থা। একক সংগীত পরিবেশন করেন মহিমা দেব এয়ী, নীপা চৌধুরী।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বসন ত ব ত স র বসন ত উৎসব স গ ত পর আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

নাম বদলাতে পারে মঙ্গল শোভাযাত্রার

বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলাতে পারে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। নতুন নামের বিষয়ে আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে। সব জাতিসত্তার অংশগ্রহণে এবারের শোভাযাত্রায় নতুন রং, গন্ধ ও সুর পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

গতকাল রোববার সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ে জাতীয়ভাবে বাংলা নববর্ষ এবং চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর নববর্ষ উদযাপন নিয়ে সভা শেষে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। তিনি বলেন, এবার চারুকলা থেকে যে শোভাযাত্রা বের হবে, এতে সত্যিকার অর্থেই নতুন জিনিস দেখা যাবে। এই শোভাযাত্রা হবে বাঙালি, চাকমা, মারমা, গারো– প্রত্যেকের। এ জন্য মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলাতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি প্রথমে আনন্দ শোভাযাত্রা নামে শুরু হয়েছিল। পরে হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠকে সবাই যদি একমত হয়, তবে আবার নাম পরিবর্তন হতে পারে। এবারের শোভাযাত্রাটি আর বাঙালিদের শোভাযাত্রা না। কেন্দ্রীয়ভাবে এটিকে ডাকা হবে, যে নামে সবাইকে একটা ছাতার মধ্যে আনা যায়। 

মঙ্গল শোভাযাত্রা নামে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি দেওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন,  ‘ইউনেস্কো আগামীবার জানবে এ শোভাযাত্রা আরও বড় হয়েছে, আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়েছে। ইউনেস্কোর এটাতে খুশি হওয়ার কারণ হবে, আপত্তি করার কোনো কারণ নেই। আমরা বরং এতদিন অনেকগুলো জাতি-গোষ্ঠীকে মাইনাস করে এসেছিলাম। এটাকে সংশোধন করছি।’ অনুষ্ঠানটি পুনর্বিবেচিত হয়েছে, তাই এর নামটিও পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বিভিন্ন আয়োজন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমিতে রক কনসার্ট হচ্ছে। যেখানে চাকমা, গারো, মারমা ও বাংলা ব্যান্ড– সবাই পারফর্ম করবে। এ ছাড়া চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে বাউল ও ফকিররা গান গাইবেন। ওদের একটা উৎসব হবে সেখানে। ১৪ এপ্রিল সংসদ ভবনের সামনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ড্রোন শোর আয়োজন করা হবে। চীনের দূতাবাসের সহযোগিতায় ড্রোন শো হবে।‌ বিকেলে গান শুনবেন, সন্ধ্যার পর দেখবেন সংসদ ভবনের ওপর বাংলার আকাশের ড্রোন দিয়ে কিছু ইমেজ তৈরি করা হচ্ছে।’ 

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘এবার ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় সুরের ধারার গানের অনুষ্ঠান হবে। মেলার মতো আয়োজনও সেখানে করা হবে। ঢাকার নানান জায়গায় উৎসব ছড়িয়ে যাবে। সূর্যাস্তের মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে– এবার আমাদের নির্দেশনা এটা না। কোন অনুষ্ঠান কখন শেষ হবে, সেটা স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা ঠিক করে নেবে।’ তিনি জানান, এবার প্রতিটি জেলা ও উপজেলার জন্য বরাদ্দ দ্বিগুণ হয়েছে। পাশাপাশি যে জেলাগুলোতে ভিন্ন ভাষাভাষী লোকজন আছেন, সেগুলোতে বরাদ্দ আরও বেশি হবে।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, নববর্ষের আয়োজন নিয়ে কাল (আজ) বৈঠক হবে। নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা সময় লাগবে। ঈদের ছুটি শেষে সংবাদ সম্মেলনে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঈদ আনন্দ উৎসব আয়োজন করছে ডিএনসিসি
  • ‘কন্যা’র পর নুসরাত ফারিয়া-সজলের ‘ব্যবধান’
  • বৈশাখের উৎসবে রঙ বাংলাদেশ
  • নাম বদলাতে পারে মঙ্গল শোভাযাত্রার
  • অচেনা ফোনকলে ঝুঁকি!
  • উৎসবে ডিজিটাল ক্যানভাস
  • মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলাতে পারে, জানালেন উপদেষ্টা ফারুকী
  • এ বছর জাতীয়ভাবে নববর্ষ পালন হবে অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে
  • এক উৎসবে অনেক দেশ
  • চারদিকে এত এত পুরুষের গল্প