জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, স্বৈরাচার ও খুনি আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় তাঁরা কোনো হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করেন না। এমন কোনো কিছু দেখলে জাতীয় নাগরিক কমিটি অথবা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওই ব্যক্তি বা প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধে আবার প্রতিবাদ শুরু করবে।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে বের হয়ে সারজিস আলম সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। আজ শনিবার বেলা তিনটার কিছু পরে দেশের ২৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিদের নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের এই বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বড় এবং প্রধান দায়িত্ব খুনিদের বিচার করা উল্লেখ করে সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের দেশে একটা সমস্যা হচ্ছে নেতারা খুনি হাসিনার মতো খুব সহজে সেফ এক্সিট পেয়ে যায়। এই গণ-অভ্যুত্থানে যারা আন্দোলনে ছিল, তাদের কিন্তু এই খুনি হাসিনা ও তাঁর দোসররা ছাড়বে না। সে জায়গায় আমরা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ—কোনো ধরনের নেগোসিয়েশনের চিহ্ন দেখতে চাই না। যারা খুনি, যারা খুনিদের দোসর, তারা যে মত ও দলেরই হোক না কেন, তাদের শাস্তি হতে হবে।’

সারজিস আলম আরও বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে তরুণ প্রজন্ম সামনের সারিতে নেতৃত্ব দিয়ে একটা দায়িত্ব পালন করেছে। এখন বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর যাঁরা অগ্রজ রয়েছেন, তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। যে আওয়ামী লীগ ৫ আগস্ট বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক হয়েছে, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ—এসব নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও গণহত্যা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে হবে। তাদের নিষিদ্ধের প্রক্রিয়ায় যেতে হবে। আর এ ক্ষেত্রে তারা (রাজনৈতিক দলগুলো) যদি নেতৃত্ব দিতে না পারে, এর দায় আগামী দিনগুলোতে তাদের বহন করতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

সংবিধান সংস্কার পরিষদের কাছে নির্বাচনের প্রস্তাব গণসংহতি আন্দোলনের

অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে সংস্কার প্রস্তাব জমা দিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। সেই প্রস্তাবে সংস্কার বাস্তবায়নে ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচন’–এর প্রস্তাব দিয়েছে তারা।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় সংসদ ভবনের এমপি হোস্টেলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের অন্যতম সদস্য বদিউল আলম মজুমদারের কাছে এ প্রস্তাব জমা দেয় গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল।

প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন দলটির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনিরুদ্দিন পাপ্পু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভুঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু ও দীপক রায়। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণসংহতি আন্দোলন এ তথ্য জানিয়েছে।

গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান বলেন, গণতান্ত্রিক বিনির্মাণের জন্য এ দেশের মানুষ অনেক দিন ধরে সংগ্রাম করছেন। মানুষের সংগ্রামে বারবারই একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠায় সংবিধানসহ রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা ফুটে উঠেছে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলন এবং সর্বশেষ গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এটা বাংলাদেশের মানুষের সামগ্রিক অভিপ্রায়ে পরিণত হয়েছে। জনগণের এই অভিপ্রায়কে স্বীকৃতি দিতেই আগামী সংসদ নির্বাচনকে ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচন’ হিসেবে চায় গণসংহতি আন্দোলন।

জনগণের অভিপ্রায়ের প্রকাশ হিসেবে যখন সংবিধান সংস্কার করা হবে এবং গণভোটের মাধ্যমে তা গৃহীত হবে, তখন সেটা সংবিধানের মূল কাঠামো হবে বলেও উল্লেখ করেন আবুল হাসান। তিনি বলেন, যাকে রক্ষা করাই হবে সর্বোচ্চ আদালতের দায়িত্ব। এর ভেতর দিয়ে একটি টেকসই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত্তি রচিত হবে।

আইন কমিশন গঠন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কীভাবে সমাজে গণতান্ত্রিক পরিসরের ক্ষতি না করে সামগ্রিক বিকাশের স্বার্থে ব্যবহার করা যায়, এ বিষয়েও আইন প্রণয়ন করা, ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংস্কার করে একই পরিবারের একাধিক সদস্যদের বারবার ব্যাংক পরিচালনা পরিষদের সদস্য হওয়ার যে আইন, তা বদলের প্রস্তাবও দিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য গঠন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: সৈয়দা রিজওয়ানা
  • নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া সংবিধান পরিবর্তন করা আসলে কঠিন: জোনায়েদ সাকি
  • জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের কিছু রায় দেওয়ার অবশ্যই চেষ্টা করব: রিজওয়ানা হাসান
  • জাতীয় স্বার্থে ব্যক্তিগত ও দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে ঐকমত্য করব: রিজওয়ানা হাসান
  • সংবিধান সংস্কার পরিষদের কাছে নির্বাচনের প্রস্তাব গণসংহতি আন্দোলনের