Samakal:
2025-02-23@02:15:55 GMT

শিরিনার আঙিনায় ‘সোনার হাঁস’

Published: 15th, February 2025 GMT

শিরিনার আঙিনায় ‘সোনার হাঁস’

বাড়ির এক কোণে পুকুর। উঠান থেকে পুকুরের এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত জালের ঘেরা। দু’ভাগে বিভক্ত ঘেরার একপাশে ফাওমি জাতের মুরগি, অন্য পাশে রয়েছে পিকিং জাতের হাঁস। গ্রাম্য সড়ক ধরে হেঁটে গেলে ওই বাড়ি থেকে হাঁস-মুরগির ডাক কানে আসে। গৃহবধূ শিরিনা আক্তার ও তার স্বামী সারোয়ার মিয়া মিলে বাড়তেই খামারটি গড়ে তুলেছেন। সীতাকুণ্ডে প্রথম পিকিং জাতের হাঁস পালন করেছেন তারাই। তাতে ঘুরে গেছে ভাগ্যের চাকা। 
শিরিনা আক্তারের বাড়ি মুরাদপুর ইউনিয়নের রহমতনগর গ্রামে। স্বামী সারোয়ার মিয়া ট্রান্সপোর্টের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সংসারে দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। শিরিনা আক্তার এনজিও সংস্থা ইপসার সদস্য তিনি। তাদের দু’জনের পাশাপাশি খামারটি দেখাশোনা করেন নাজিম খান নামে তাদের এক ভাগনে।
সরেজমিন দেখা যায়, গ্রাম্য সড়কের পাশেই শিরিনা আক্তারের বাড়ি। সড়কের পাশে টিনের বেড়া। মূল সড়ক থেকে বাড়িতে ঢুকতেই উঠোন। ঘরে যাওয়ার পথ বাদে উঠোনের বাকি অংশের চারপাশ ও ওপরের অংশ জাল দিয়ে ঘেরা। বসতঘরের সামনেই তৈরি করা হয়েছে মুরগি রাখার শেড। জালের ভেতর অবিরত ডেকে চলেছে ফাওমি জাতের অন্তত তিন শতাধিক মুরগি। পুকুরে সাঁতার কাটছিল ৯২টি সাদা রঙের পিকিং জাতের হাঁস। পাড় থেকে পুকুরের দিকে তৈরি করা হয়েছে হাঁসের বাসা।
সারোয়ার মিয়া জানান, চার মাস আগে ইপসার এক কর্মকর্তা বাড়ির ভেতরের জায়গা দেখে তাকে হাঁস-মুরগির খামার করার পরামর্শ দেন। ওই কর্মকর্তার কথা তার ভালো লাগে। পরে তিনি ইপসার সহযোগিতা চান।
সারোয়ার বলেন, ‘শুরুতে আমাদের ৫০টি পিকিং জাতের হাঁস দিয়ে সহযোগিতা করে ইপসা। পাশাপাশি ৮০ টাকা করে আরও ৫০টি এক দিনের পিকিং জাতের হাঁসের বাচ্চা কিনে নিই। প্রথমে ১০০টি পিকিং জাতের হাঁস ও ৩০০টি ফাওমি জাতের মুরগির বাচ্চা দিয়ে তাদের খামার শুরু করি। এখন পর্যন্ত ছয় লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছি। ইতোমধ্যে হাঁস থেকে প্রতিদিন ৪০-৫০টি ডিম পাই। খামার বাড়ানোর জন্য আপাতত আমরা ডিম বিক্রি করছি না। নতুন ইনকিউবেটর কিনেছি। সেখান থেকে বাচ্চা ফুটানো হবে। ফাওমি মুরগির বয়সও ১০০ দিন হয়েছে। আরও বড় হলে মোরগ বিক্রি শুরু করব।’
সারোয়ার মিয়া ও শিরিনা আক্তার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন জেলা হাঁস-মুরগি খামারের পোলট্রি ডেভেলপমেন্ট কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন ইমনের কাছে। সাখাওয়াত বলেন, ‘কয়েক মাস আগে সারোয়ার মিয়া দম্পতি প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। এরপর তারা খামার গড়ে তুলেছেন। ওই খামারটি আমি পরিদর্শন করেছি। প্রশিক্ষণের নির্দেশনা মোতাবেক তারা খামার করে সফল হয়েছেন।’
ইপসার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার গোলাম সারোয়ার বলেন, ‘পিকিং হাঁস দ্রুত বাড়ে। ফলে দ্রুত মাংস ও ডিম পাওয়া যায়। একটি পিকিং হাঁস ওজন ৩-৪ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রতিটি হাঁস বছরে প্রায় ১৭০ থেকে ১৮০টি ডিম দিয়ে থাকে। মাংস খেতে বেশ সুসাদু, পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ও নরম। সব বয়সের মানুষ পিকিং হাঁসের মাংস খেতে পারে।’ 
সাবেক উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তাহামিনা আরজু বলেন, ‘বাণিজ্যিকভাবে হাঁস চাষের জন্য সীতাকুণ্ড উপযুক্ত নয়। কারণ হাঁস প্রচুর খাবার খায়। সেটা প্রাকৃতিকভাবে না পাওয়া গেলে বাণিজ্যিক খাবার দিয়ে খামারিরা লাভবান হতে পারবেন না। তবে এ হাঁসের রোগবালাই তেমন নেই। ফাওমি জাতের মুরগিরও রোগবালাই কম।’

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

চুরি-ছিনতাই-খুন প্রতিরোধে তৎপরতা বাড়িয়েছি: র‍্যাব ডিজি

সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

দেশব্যাপী চুরি, ছিনতাই, খুন ও ডাকাতি প্রতিরোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‍্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত ২টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে র‍্যাবের টহল ও চেকপোস্ট পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন তিনি।

র‍্যাব মহাপরিচালক বলেন, অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে র‌্যাবও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে। সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে কতিপয় দুষ্কৃতকারী ও স্বার্থান্বেষী মহল হামলা ও নাশকতার মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

শহিদুর রহমান বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংস কায়দায় হামলা ও আক্রমণ চালাচ্ছে। এসব অপরাধ দমনে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে র‌্যাব ফোর্সেসও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছে। এরইমধ্যে র‌্যাবের সব ব্যাটালিয়ন তাদের নিজস্ব দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় রোবাস্ট প্যাট্রোলিং পরিচালনা করছে। ঝুঁকিপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিরতিহীনভাবে অতিরিক্ত টহল মোতায়েনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

র‍্যাব ডিজি বলেন, ব্যাটালিয়নগুলোতে নিজস্ব কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে ঢাকাসহ সারাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। দেশব্যাপী বিভিন্ন জায়গায় অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশির মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য র‌্যাব বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব মেট্রোপলিটন শহর, জেলা শহর ও উপজেলা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট স্থাপন, পর্যাপ্ত সংখ্যক টহল মোতায়েন এবং সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান মহাপরিচালক।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যদের খুন, হত্যাচেষ্টা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক কারবারি এবং চাঞ্চল্যকর সৃষ্টিকারী বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়। এসব গ্রুপের সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এক গ্রুপ অপর গ্রুপের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে মারামারি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করার প্রবণতাও লক্ষ্য করা যায়। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য মোহাম্মদপুরের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কবজি কাটা গ্রুপের প্রধান আনোয়ার ওরফে শুটার আনোয়ার ওরফে কবজি কাটা আনোয়ার, জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ সন্ত্রাসী বুনিয়া সোহেল এবং জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক কারবারি সেলিম আশরাফি ওরফে চুয়া সেলিমসহ তাদের সহযোগীদের গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

র‍্যাব ডিজি আরও বলেন, সব মেট্রোপলিটন শহর ও গুরুত্বপূর্ণ জেলা শহরগুলোতে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফোর্স রিজার্ভ রাখা হয়েছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত রাজধানী থেকে ৪০ জন, ময়মনসিংহে ২৫ জন, রাজশাহী থেকে ২৪ জন, সিলেট থেকে ১৭ জন, নারায়ণগঞ্জ থেকে ১৫ জনসহ মোট ১৮০ জন আসামিকে গ্রেপ্তার এবং অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে র‌্যাব। এ ছাড়া সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ যেকোনো ধরনের নাশকতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

বিএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ